প্রিন্ট এর তারিখঃ অগাস্ট ১৭, ২০২৫, ৪:১৮ এ.এম || প্রকাশের তারিখঃ সেপ্টেম্বর ৬, ২০২৩, ১২:২৬ এ.এম
গ্রীষ্মকালীন টমেটো চাষ করে চাষিদের দিনবদল

গোলাম সারোয়ার, ব্রাহ্মণবাড়িয়া ব্যুরো প্রধান/
জেলার নাসিরনগরে সর্বত্র চাষ হচ্ছে গ্রীষ্মকালীন টমেটো। হাওরের এই জনপদে প্রায় ৪০০ বিঘা জমিতে বারি-৮ ও মঙ্গলরাজা জাতের টমেটোর চাষ
করেছেন কৃষকরা।
এ বছর নাসিরনগর থেকে অন্তত ২০ কোটি টাকার টমেটো বাজারজাত হবে। এছাড়া পুরো জেলায় কেনাবেচা হবে প্রায় ৫১ কোটি টাকার টমেটো। এতে
আর্থিকভাবে লাভবান হচ্ছেন খেটে খাওয়া কৃষকরা। এতে তারা স্বাবলম্বী হয়েছেন। অতীত পারিবারিক দূরাবস্থা থেকে মুক্তির পথ খুঁজে পাওয়াতে সুদিন
ফিরেছে চাষিদের। এছাড়া কৃষি জমির পাশাপাশি বাড়ির আঙিনাতে করা টমেটো বাগানে কর্মসংস্থান হয়েছে কয়েকশ মানুষের। বছরজুড়ে
মৌসুমভিত্তিক নানা ফসল উৎপাদনের মাধ্যমে সমৃদ্ধ হচ্ছে গ্রামীণ অর্থনীতিও।
সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, হাওরবেষ্টিত নাসিরগর উপজেলায় চলতি বছর প্রায় ৪০০ বিঘা জমিতে টমেটোর আবাদ হয়েছে। আবাদ করা
টমেটো বাগানগুলোর বেশিরভাগই বাড়ির আঙিনায় করা। ফলন ভালো হওয়ায় লাভবান হচ্ছেন কৃষকরাও। বাগান থেকেই আকার ও মানভেদে প্রতি
কেজি টমেটো পাইকারি বিক্রি হচ্ছে ৮০ থেকে ১১০ টাকা দরে।
নাসিরনগর উপজেলার কয়েকটি টমেটো বাগান ঘুরে দেখা গেছে, কেউ ঘাস পরিষ্কার করছেন। কেউ আবার ওষুধ ছিটাচ্ছেন। অনেক কৃষক নিজের জমির পাশাপাশি অন্যের জমি বর্গা নিয়েও টমেটোর চাষ করেছেন।
উপজেলার পূর্বভাগ ইউনিয়নে গিয়ে দেখা মেলে কৃষক হাসিম মিয়ার (৮৫) সঙ্গে। তিনি তার তিন ছেলেকে নিয়ে জমি থেকে পাকা টমেটো তুলছেন।
তিনি জানান, সারা বছর এই জমি পতিত পড়ে থাকত। হঠাৎ করে মাস তিনেক আগে কৃষি অফিসের লোকজন এসে বলল, গ্রীষ্মকালে টমেটোর চাষ করা
যায়। পরে তাদের পরামর্শে ৪০ হাজার টাকা খরচ করে জমিতে টমেটোর চারা রোপণ করেন। এখন পর্যন্ত দুই লাখ টাকার টমেটো বিক্রি করেছেন।
গোকর্ণ ইউনিয়নের আরেক কৃষক আবুল কাশেম বলেন, আমি ৬০ শতাংশ পতিত জায়গা মহাজন থেকে বর্গা নিয়ে আগাম জাতের টমেটো চাষ
করেছি। আমার খরচ হয়ছে ৫৫ হাজার টাকা। আমি এই পর্যন্ত তিন লাখ টাকার টমেটো বিক্রি করতে পেরেছি।
ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতর উপ-পরিচালক সুশান্ত সাহা বলেন, আমরা জেলার প্রতিটি উপজেলায় গ্রীষ্মকালীন সবজি চাষের
উদ্যোক্তা তৈরি করছি। ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় এবার ১২৮ হেক্টর জমিতে গ্রীষ্মকালীন টমেটোর আবাদ হয়েছে। পুরো জেলা থেকে প্রায় ৫১ কোটি টাকার টমেটো
বাজারজাত হবে। ফলন বাড়াতে কৃষকদের নানা পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে বলেও জানান তিনি।
সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত © ২০২৩ দেশ বাংলা প্রতিদিন