লাখো শহীদদের আত্মত্যাগে বিশ্বের বুকে জন্ম হলো বাংলাদেশের। মহান বিজয় দিবস ঘিরে প্রতিবছরের মত বীর শহিদদের প্রতি শ্রদ্ধা জানাতে বাহারি ফুল ও বর্ণিল আলোকসজ্জায় নতুন রূপে সেজেছে সাভার জাতীয় স্মৃতিসৌধ প্রাঙ্গন। নিরাপত্তায় রয়েছে সবোর্চ্চ সর্তকতা।
১৬ই ডিসেম্বর মহান বিজয় দিবস উপলক্ষে গণপূর্ত বিভাগের কর্মীরা মাসব্যাপী অক্লান্ত পরিশ্রম করে স্মৃতিসৌধকে সাজিয়েছে নানা রঙের বাহারি ফুলে। চত্বরের সিঁড়ি ও নানা স্থাপনায় পড়েছে রং-তুলির আঁচড়।
যাদের আত্নত্যাগের মধ্য দিয়ে লাল সবুজের ইতিহাস। সেই বীর শহীদদের ও মুক্তিযুদ্ধের কালের সাক্ষী ১০৮ একর জমির উপর দাড়িয়ে সাভারের এই জাতীয় স্মৃতি সৌধ। বিজয় দিবসের ৫১ বছর পূর্তিতে রাতের আধাঁর পেরিয়ে রক্তিম সূর্যদোয়ে রাষ্ট্রপতি, প্রধানমন্ত্রীসহ ১৬ ডিসেম্বর লাখো মানুষের ঢল নামবে এই সৌধে প্রাঙ্গনে। ফুলের চাদরে ঢেকে যাবে কংক্রিটের শহীদ বেদী। শ্রেষ্ট সন্তানদের শ্রদ্ধা জানাতে অপেক্ষার প্রহর গুনছে পুরো জাতি।

স্মৃতিসৌধে আগত দর্শনার্থীদের যাতায়াত নির্বিঘ্ন করতে সাভারের ঢাকা-আরিচা মহাসড়কের আমিনবাজার থেকে জাতীয় স্মৃতিসৌধ পর্যন্ত এর আশপাশের এলাকায় সাদা পোশাকে গোয়েন্দা নজরদারিসহ মোতায়েন থাকবে সহস্রাধিক পুলিশ সদস্য।
গণপূর্ত বিভাগের উপ-সহকারী প্রকৌশলী ও স্মৃতিসৌধের ইনচার্জ মিজানুর রহমান বলেন, মহান বিজয় দিবসে রাষ্ট্রপতি, প্রধানমন্ত্রী, মন্ত্রী পরিষদের সদস্যবৃন্দ ও বিদেশি কূটনীতিকসহ লাখো মানুষ জাতীয় স্মৃতিসৌধে পুষ্পস্তবক অর্পণ করবেন। এজন্য সাভার গণপূর্ত বিভাগের পক্ষ থেকে জাতীয় স্মৃতিসৌধকে দীর্ঘ প্রায় এক মাস ধরে ধুয়ে-মুছে, রং তুলির আচড়ে রং-বেরংয়ের ফুল দিয়ে সাজানো হয়েছে। লাল ইটে সাদা রঙের ছোঁয়া শুভ্রতা ছড়াচ্ছে। বাহারী ফুলের আয়োজন নজর কাড়বে যেকারো। স্মৃতিসৌধে আগত দর্শনার্থীসহ সকলের নিরাপত্তার জন্য সিসি টিভি ক্যামেরা স্থাপন করা হয়েছে। স্মৃতিসৌধ এখন সম্পুর্ণভাবে প্রস্তুত লাখো জনতার শ্রদ্ধাঞ্জলী ও ভালোবাসা গ্রহণ করার জন্য।
রাষ্ট্রপতি ও প্রধানমন্ত্রী সাথে শ্রদ্ধার্ঘ নিবেদনের জন্য প্রস্তুত হয়েছে তিন বাহিনীর সুসজ্জিত দলের মহড়া। সার্বিক নিরাপত্তার জন্য ইতমধ্যে স্মৃতিসৌধে দায়িত্ব পালন করছেন এসএসএফ-এর সদস্যরা। পুলিশ প্রশাসনসহ সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের সাথে একযোগে কাজ করছে সাভার উপজেলা প্রশাসন।
সাভার উপজেলা নির্বাহি কর্মকর্তা(ইউএনও) মাজহারুল ইসলাম বলেন, আনুষ্ঠানিকতা সফল করতে ও নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে সরকারের বিভিন্ন মন্ত্রনালয় ও বিভাগসহ সাভার উপজেলা প্রশাসন একযোগে কাজ করছে। ভিভিআইপিদের প্রটোকল, অতিথিদের নিরাপত্তাসহ আশেপাশের সড়কের শৃঙ্খলা রক্ষায় প্রশাসনের পক্ষ থেকে প্রয়োজনীয় জনবল দায়িত্ব পালন করছে।
ঢাকা জেলার পুলিশ সুপার মো আসাদুজ্জামান স্মৃতিসৌধ পরিদর্শনে এসে বলেন, আমাদের পক্ষ থেকে এ বিশাল আয়োজনকে কেন্দ্র করে পর্যাপ্ত নিরাপত্তা ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে। যেকোন ধরণের অনাকাংখিত ঘটনা এড়াতে আমরা প্রস্তুত।
শ্রদ্ধা নিবেদন শেষে রাষ্ট্রপতি, প্রধানমন্ত্রী এবং আমন্ত্রিত অতিথিবৃন্দ জাতীয় স্মৃতিসৌধ ত্যাগ করার পর সর্বসাধারণের শ্রদ্ধা নিবেদনের জন্য উন্মুক্ত করে দেওয়া হবে সাভারের জাতীয় স্মৃতিসৌধ। এর আগে গত ৪ ডিসেম্বর থেকে এই প্রস্তুতিমূলক কাজের জন্য সৌধ প্রাঙ্গনে সাধারণের প্রবেশে নিষেধাজ্ঞা প্রদান করেছিল কর্তৃপক্ষ।