সুনামগঞ্জের ধর্মপাশায় কবিতা রাণী সরকার ও দানিছুর রহমান চৌধুরী নামে দুই সহকারী শিক্ষকের বিরুদ্ধে বিভাগীয় মামলা হয়েছে। টানা আট মাস ধরে বিনানুমতিতে বিদ্যালয়ে অনুপস্থিত কবিতা রাণী সরকারের বিরুদ্ধে ও ৫ম শ্রেণির এক ছাত্রীকে শ্লীলতাহানী করায় দানিছুর রহমান চৌধুরীর নামে এ বিভাগীয় ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। কবিতা রাণী সরকার সুনামগঞ্জের মধ্যনগর উপজেলার বংশীকুন্ডা দক্ষিণ ইউনিয়নের ঘাসী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ও দানিছুর রহমান চৌধুরী ধর্মপাশা উপজেলার পাইকুরাটি ইউনিয়নের ধুবালা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক।
কবিতা রাণী সরকার ২০১৯ সালের ১২ ফেব্রুয়ারি ওই বিদ্যালয়ে যোগদান করেন। এরপর থেকেই শারীরিক অসুস্থ্যতার অজুহাতে মেডিকেল সার্টিফিকেট দেখিয়ে অথবা বিনানুমতিতে অনুপস্থিত থাকেন। তিনি ২০২১ সালের ১৩ সেপ্টেম্বর থেকে চলতি বছরের ১১ মার্চ পর্যন্ত তিনি মাতৃত্বকালীন ছুটি ভোগ করেন। এ ছুটির পর ১২ মার্চ তিনি বিদ্যালয়ে যোগদান করে ১৩ মার্চ থেকে ১১ এপ্রিল পর্যন্ত এক মাসের জন্য অসুস্থতাজনিত ছুটির জন্য আবেদন করেন। কিন্তু এ ছুটি শেষে বিদ্যালয়ে যোগদানের কথা থাকলেও এখন পর্যন্ত তিনি বিদ্যালয়ে যোগদান করেননি।
অপরদিকে দানিছুর রহমান চৌধুরীর বিরুদ্ধে গত ২৪ মে দুপুরে বিদ্যালয়ের শ্রেণিকক্ষে এক ছাত্রীকে শ্লীলতাহানীর অভিযোগ উঠে। খবর পেয়ে ছাত্রীর মা ওইদিনই বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক ও ম্যানেজিং কমিটির সভাপতিকে জানালেও কোনো ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি। ফলে ঘটনার পরের দিন বিকেলে ছাত্রীর মা ধর্মপাশা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তার কাছে এ ব্যাপারে লিখিত অভিযোগ করেন। পরে ওইদিন রাতেই ছাত্রীর মা বাদী হয়ে দানিছুর রহমান চৌধুরী শিক্ষকের বিরুদ্ধে ধর্মপাশা থানায় নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে মামলা করেন। পরে উপজেলা সহকারী শিক্ষা কর্মকর্তা আব্দুল আউয়াল ও আহসান উল্লাহ মুকুল বিষয়টি তদন্ত করে ঘটনার সত্যতা পেয়ে তা উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে লিখিতভাবে জানালে দানিছুর রহমান চৌধুরীকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়। ফলে কবিতা ও দানিছুরকে কেন বরখাস্ত করা হবে না বা বিধি মোতাবেক অন্য কোনো শাস্তি প্রদান করা হবে না তার জবাব চেয়ে দুজনকে চিঠি দিয়েছেন জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা।৷ ধর্মপাশা উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার মানবেন্দ্র দাস বলেন, বিভাগীয় মামলার ব্যাপারে দুইজন শিক্ষককে অবগত করা হয়েছে।
জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা এস এম আব্দুর রহমান বলেন, দুজন শিক্ষককেই কেন সরকারি বিধি অনুযায়ী বরখাস্ত করা হবে না- তা জানতে চেয়ে ১০ দিনের মধ্যে জবাব দিতে বলা হয়েছে। জবাব পাওয়া গেলে পরবর্তী পদক্ষেপ গ্রহণ করা হবে।