ঘূর্ণিঝড় রিমালের আঘাতে নোয়াখালীর সুবর্ণচর ও দ্বীপ উপজেলা হাতিয়ায় ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। হাতিয়া উপজেলায় প্রায় ৫২ হাজার পরিবার ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। হাতিয়ার সংসদ সদস্য মোহাম্মদ আলী ত্রাণ মন্ত্রণালয়ে পাঠানো চিঠিতে জানিয়েছেন যে প্রায় চার হাজার কাঁচাঘর বিধ্বস্ত হয়েছে এবং জোয়ারে প্লাবিত এলাকাগুলোয় ৫০ হাজারের বেশি মানুষ পানিবন্দী অবস্থায় রয়েছে। এখন পর্যন্ত কোনো প্রাণহানির খবর পাওয়া যায়নি।
নোয়াখালী জেলা আবহাওয়া পর্যবেক্ষণ কেন্দ্রের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা রফিকুল ইসলাম জানিয়েছেন, ঘূর্ণিঝড়ের প্রভাবে নোয়াখালী জেলাজুড়ে ভোর থেকে থেমে থেমে ঝোড়ো হাওয়া বয়ে যাচ্ছে। বাতাসের গতি ঘণ্টায় ৬০-৭০ কিলোমিটার হতে পারে বলে ধারণা করা হচ্ছে। আজ বেলা ১২টা পর্যন্ত মাইজদীতে ৭৪ মিলিমিটার বৃষ্টি রেকর্ড করা হয়েছে।
হাতিয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা শুভাশিষ চাকমা জানিয়েছেন, নিঝুম দ্বীপে সবচেয়ে বেশি ক্ষতি হয়েছে। সেখানে বেশির ভাগ কাঁচা ঘরবাড়ি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে এবং পুরো দ্বীপ ৪-৫ ফুট পানিতে ডুবে গেছে। সুখচর, নলচিরা, চরকিং, তমরুদ্দি ও চর ঈশ্বর ইউনিয়নও ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। ক্ষয়ক্ষতির সুনির্দিষ্ট তথ্য এখনও পাওয়া যায়নি।
হাতিয়ার সংসদ সদস্য মোহাম্মদ আলী জানিয়েছেন, নিঝুম দ্বীপের প্রায় ৯ হাজার পরিবার ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে এবং সাড়ে তিন হাজার কাঁচাঘর বিধ্বস্ত হয়েছে। ১০০ কিলোমিটার কাঁচা রাস্তার ৬০ ভাগ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। মাছের খামার ও পুকুরের মাছ ভেসে গেছে এবং জমির ফসল নষ্ট হয়ে গেছে। ঢাল চরের চার হাজার পরিবার ও চর ঘাসিয়ার ২০ হাজার পরিবার ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। চানন্দি ইউনিয়নে বেড়িবাঁধ না থাকায় জোয়ারের পানিতে চার হাজার পরিবারের প্রায় ২০ হাজার মানুষ পানিবন্দী হয়েছে।
সুবর্ণচর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আল আমিন সরকার জানিয়েছেন, ঝড়ে বিভিন্ন স্থানে গাছপালা উপড়ে পড়ে সড়ক যোগাযোগে প্রতিবন্ধকতা তৈরি হয়েছে। ফায়ার সার্ভিসের লোকজন গাছ কেটে চলাচল স্বাভাবিক করছে। ঝড়ে বিভিন্ন স্থানে কাঁচা ঘরবাড়ির ক্ষতি হতে পারে, তবে বিস্তারিত তথ্য পাওয়া যায়নি।
নোয়াখালী জেলা প্রশাসক দেওয়ান মাহবুবুর রহমান জানিয়েছেন, প্রাথমিক তথ্যে ৩ হাজার ৩২৮টি বাড়িঘর আংশিক এবং ২৮টি বাড়িঘর সম্পূর্ণ বিধ্বস্ত হওয়ার তথ্য পাওয়া গেছে। ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ আরও বাড়তে পারে, তবে কোনো প্রাণহানির তথ্য এখনও পাওয়া যায়নি।