ময়মনসিংহে বিদ্যুতের ঘনঘন লোডশেডিং ও প্রচণ্ড গরমে অতিষ্ঠ হয়ে পড়েছে জনজীবন। বিভাগীয় শহরের তুলনায় উপজেলাগুলোতে লোডশেডিংয়ের মাত্রা বেশি। অভিযোগ রয়েছে, ময়মনসিংহ সদর উপজেলার গ্রামগুলোতে বিদ্যুৎ যায় না, মাঝে মাঝে আসে। এতে মানুষের স্বাভাবিক জীবন বাধাগ্রস্ত হওয়াসহ শ্রমজীবীদের অবস্থা নাজুক হয়ে পড়ছে। বেশি লোডশেডিং হওয়ায় গ্রামগুলোতে নিয়মিত সেচ পাম্প চালাতে পারছেন না কৃষক।
জানা গেছে, ময়মনসিংহ নগরীতে গত বছরের চেয়ে এবার লোডশেডিং কম থাকলেও সদর উপজেলাসহ জেলার পরানগঞ্জ, বোররচর রহিমগঞ্জ, বালিখা,সিরতা, ও ছাতিয়ানতলা গ্রামগুলোর ৭ থেকে ৮ ঘণ্টা পর্যন্ত লোডশেডিং চলছে। এতে জনজীবন নাজেহাল হওয়ার পাশাপাশি বিঘ্নিত হচ্ছে শিক্ষার্থীদের লেখাপড়া।
এদিকে সদর উপজেলার পরানগঞ্জ ইউনিয়নের ছাতিয়ানতলা গ্রামের বাসিন্দা জালাল বলেন, বিদ্যুৎ এই আসছে, তো-এই চলে যাচ্ছে। কখনো কখনো গড়ে ৫ ঘণ্টা বিদ্যুৎ থাকছে না। এতে ঘরে থাকা শিশু বাচ্চার সবচেয়ে বেশি কষ্ট হচ্ছে। এ কারণে চার্জার ফ্যানের বাতাস দিয়ে ভোগান্তি কমানোর চেষ্টা চলছে।
এ বিষয়ে সুশাসনের জন্য নাগরিক (সুজন) ময়মনসিংহ মহানগরের সম্পাদক আলী ইউসুফ বলেন, শহরে এখন পর্যন্ত লোডশেডিং সহনীয় পর্যায়ে রয়েছে। তবে কৃষকদের কথা চিন্তা করে গ্রামগুলোর দিকেও বিদ্যুৎ বিভাগের সুনজর দেওয়া প্রয়োজন।
এদিকে কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর ময়মনসিংহের উপ-পরিচালক ড. নাছরিন আক্তার বানু বলেন, জেলায় চলতি মৌসুমে বোরো আবাদ হয়েছে ২ লাখ ৬৩ হাজার ৪৮৫ হেক্টর জমিতে। বোরো ধান উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে ১১ লাখ ৩৫ হাজার ৭৬৮ টন। লোডশেডিং এড়াতে কৃষকদের রাত ১২টা থেকে সকাল ৬টা পর্যন্ত সেচ দেওয়ার পরামর্শ দিয়েছি।
এদিকে লোডশেডিং এর কারণ জানতে চাইলে ময়মনসিংহ পল্লী বিদ্যুৎ সমিতি-৩ কেন্দ্রের জেনারেল ম্যানেজার মো. আবুল কালাম আজাদ দেশবাংলা প্রতিদিনকে বলেন, জেলায় পল্লী বিদ্যুতের তিনটি অঞ্চলে চাহিদা রয়েছে ২২০ মেগাওয়াট। এর বিপরীতে পাওয়া যাচ্ছে ১৫০ মেগাওয়াট। প্রতিবছর গরম শুরুর পর থেকেই বিদ্যুতের চাহিদা বাড়তে থাকে। এখনো সে চাহিদা সর্বোচ্চ পর্যায়ে না পৌঁছানোয় যথাসম্ভব কম লোডশেডিং করা হচ্ছে। তবে লোডশেডিং যথাসম্ভব কমাতে আমরা চেষ্টা করছি।