সাধারণত ব্রিজ নির্মাণ করা হয় পানিপ্রবাহ কিংবা যেখানে কোনো জলাশয় বা খাল-বিল এবং নদী-নালা থাকে। কিন্তু ময়মনসিংহের শেরপুর জেলার সদর উপজেলার গাজীরখামার ইউনিয়নের কড়ইকান্দা গ্রামের শেষ প্রান্তে এই নির্মাণাধীন ব্রিজটির আশপাশে কোনো জলাশয় বা নদী নেই। আছে শুধু বিস্তীর্ণ ধানক্ষেত। স্থানীয় জনগণ বলছেন, এ যেন ঘোড়ার আগে গাড়ি জুড়ে দেওয়া অবস্থা।দেখে মনে হবে কৃষিজমিতে পানির পাম্প বসছে আসলে তা নয় চলছে সেতুর কাজ। নদী নেই, খালবিলও নেই রাস্তাও নেই। আছে ফসলি জমি এমন স্থানে অজানা কারণে স্থানীয় সরকার বিভাগের (এলজিইডি) অর্থায়নে সাড়ে ৩ কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মাণ করা হচ্ছে সেতু। স্থানীয় জনগণও জানে না সেতুটি কেন নির্মাণ করা হচ্ছে। খোলা মাঠে সেতু নির্মাণের কারণ জানতে চাইলে স্থানীয় সরকার বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. মোস্তাফিজুর রহমান সরাসরি কোনো উত্তর দিতে পারেননি। শুধু বলছে, সেতু নির্মাণ কাজ শেষ হলে রাস্তা নির্মাণ করা হবে। অনুসন্ধানে জানা যায়, স্থানীয় সরকার বিভাগের অর্থায়নে ৬৪ মিটার দৈর্ঘ্যরে সাড়ে তিন কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মাণ করা হচ্ছে এই ব্রিজ। ইতিমধ্যে ব্রিজের পাইলিংয়ের কাজ চলছে। ব্রিজটি যেখানে নির্মাণ হচ্ছে এটি ময়মনসিংহের শেরপুর সদর উপজেলার গাজীর খামার ইউনিয়নের সর্বশেষ প্রান্ত কড়ইতলা গ্রাম। এরপর রয়েছে নালিতাবাড়ী উপজেলা কলসপাড় ইউনিয়নের নাকশি ও গাগলাজানি গ্রাম। নির্মাণাধীন ব্রিজ এলাকা থেকে নালিতাবাড়ী গাজীরখামার শেরপুর সড়কের দূরত্ব প্রায় এক কিলোমিটার।স্থানীয় গ্রামবাসী নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একজনে দেশবাংলা প্রতিদিনকে বলেন, আমরা জানি ব্রিজ মানে হচ্ছে দুটি গ্রামের মেলবন্ধন বা সেতুবন্ধন, কিন্তু এখানে সেতুবন্ধন তো দূরের কথা, আশপাশে ধানক্ষেত ছাড়া কিছুই নেই। আরেক গ্রামবাসী রুহুল আমীন বলেন, গরু ছাড়া গোয়ালের যেমন মূল্য নেই। ঠিক তেমনি রাস্তা ছাড়া ব্রিজের কোনো মূল্য নেই। খোলা মাঠে এখানে কেন ব্রিজ করা হচ্ছে আমরা গ্রামবাসী জানি না।গাজীরখামার ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মো. আওলাদুল ইসলাম বলেন, আপাতদৃষ্টিতে ব্রিজের আশপাশে রাস্তা দেখা না গেলেও ভবিষ্যতে রাস্তা করার জন্য পাশের ইউনিয়নের চেয়ারম্যানের সঙ্গে কথা হয়েছে রাস্তা করার জন্য। উনি জমির ব্যবস্থা করে দেবেন। ,নদী-নালা কিংবা খাল না থাকা সত্ত্বেও ব্রিজ হচ্ছে কেন? দেশ বাংলা প্রতিদিনের এমন এক প্রশ্নের জবাবে
(এলজিইডির) নির্বাহী প্রকৌশলী মো. মোস্তাফিজুর রহমান এড়িয়ে যান। তিনি জানিয়েছেন, পূর্বে এখানে রাস্তা ছিল। কিন্তু প্রভাবশালী মহল কেটে নিয়েছে। তবে এখানে ব্রিজও হবে, রাস্তাও হবে। এতে সরকারি টাকা অপচয় হবে না।