মনোয়ার বাবু, ঘোড়াঘাট (দিনাজপুর) প্রতিনিধিঃ
দিনাজপুরের ঘোড়াঘাট উপজেলায় "ন্যায্যমূল্য কৃষকের, সাশ্রয়ী মূল্য জনগণের" এই স্লোগানকে সামনে রেখে "স্বল্প লাভের বাজার" চালু করেছে বন্ধু সংগঠন নামে কয়েকজন ছাত্র। বৃহস্পতিবার (১৯ ডিসেম্বর) উপজেলার সিংড়া ইউনিয়ন পরিষদের সামনে ন্যায্যমূল্যে সবজি বিক্রির এ কার্যক্রম শুরু হয়। এটি বিকাল ৩ টা থেকে চলে সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত।
সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, উদ্যোগটির প্রশংসা করছেন ক্রেতাসহ স্থানীয় বাসিন্দারা। আর শিক্ষার্থীরা বলছেন, চলমান বাজার সিন্ডিকেট ভাঙতেই এমন উদ্যোগে শামিল হয়েছেন তাঁরা। স্থানীয় বাজারের তুলনায় শাকসবজির দাম কম। কেজিপ্রতি ১০–২০ টাকা কমে কিনতে পারছেন লোকজন। দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতির বাজারে সাশ্রয়ী মূল্যে সবজি কিনতে সেখানে ভিড় করেন নানা শ্রেণি-পেশার মানুষ। সেখানে প্রতি কেজি আলু (দেশী-নতুন) ৬৫ টাকা,পেয়াজ ৫৫ টাকা,শিম ৩৫ টাকা, মিষ্টি লাউ ৩০ টাকা,করলা ৩৫ টাকা, কাচা মরিচ ৪৫ টাকা, মুলা ১০ টাকা, প্রতি পিচ ফুল কপি ১০ টাকা, বাধাকপি ১০ টাকা এবং লকুচ ২০ টাকা দরে বিক্রি করা হচ্ছে।এই সংগঠনের তারেক, আরিফ, নাছির,সুরুজ,হাসান বাবু, ফুয়াদ শিক্ষার্থীরা বলেন, এক টাকা লাভে প্রায় ৪০০ কেজি সবজি আজ তার বিক্রি করেছেন। ‘প্রান্তিক পর্যায়ের কৃষকদের কাছ থেকে আমরা সংগ্রহ করায় কম দামে বিক্রি করতে পারছি। বাজারে আসা সবজি কৃষক থেকে বাজারে আসতে কয়েকটি হাতবদল হওয়ায় দাম বেড়ে যায়। কৃষকদের কাছ থেকে সংগ্রহ করে পরিবহন খরচ যোগ করে বিক্রি করেও বাজারের চেয়ে ১৫-২০ টাকা কমে সবকিছু বিক্রি করা যাচ্ছে। মূল্য বৃদ্ধির কারণে মানুষের ভোগান্তি হচ্ছে। এ জন্য শিক্ষার্থীরা মিলে কৃষক ও ভোক্তার সুবিধা করে দিতে উদ্যোগ নিয়েছি। এতে কৃষক ন্যায্যমূল্য পাবেন, ভোক্তাও কম দামে কিনতে পারবেন। বাজার যত দিন অস্থিতিশীল থাকবে, তত দিন আমাদের কার্যক্রম চলবে।’আনোয়ার নামে ৭০ বছরের এক বৃদ্ধ বলেন, বাজারে একই ধরনের লকুচ ২৫ থেকে ৩০ টাকা, অথচ সেখান থেকে মাত্র ২০ টাকায় এ পণ্য পাচ্ছেন। এ ছাড়া ৬৫ টাকা কেজি দরে কিনেছেন নতুন আলু। বাজারে এই পণ্য ৭০ টাকার নিচে পাওয়া যাচ্ছে না। শিক্ষার্থীদের এমন উদ্যোগ আরও বড় পরিসরে করা দরকার বলে মন্তব্য করেন তিনি।সিংড়া ইউনিয়ন চেয়ারম্যান অধ্যাপক সাজ্জাদ হোসেন বলেন, যেসব কাঁচাবাজারে স্থানীয় সিন্ডিকেট আছে। সেখানেই তাঁরা আবার ভ্রাম্যমাণ দোকান বসিয়েছেন। এটি তাঁদের জন্য একটি প্রতিবাদী দোকান। সিন্ডিকেটে যুক্তরা যদি এটা থেকে শিক্ষা না নেয়, তাহলে শিক্ষার্থীরা আরও বড় পরিসরে দোকান বসাবেন। বাজারে বড় ধরনের বৈষম্য আছে। তাঁরা খুব অল্প পরিমাণে পণ্য কিনেও কম দামে বিক্রি করতে পারছেন। কিন্তু ব্যবসায়ীরা তা পারছেন না। মূলত সিন্ডিকেট ভাঙার জন্যই এ উদ্যোগের সাধুবাদ জানাই।