বাংলাদেশে ফ্যাসিবাদী সরকারের বিদায় হয়েছে কিন্তু ফ্যাসিস্ট ব্যবস্থা এখনো জারি আছে বলে মন্তব্য করছেন গণসংহতি আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়কারী জোনায়েদ সাকি। তিনি বলেছেন নতুন রাজনৈতিক বন্দোবস্ত করতে হবে। প্রচলিত নিয়মে যারাই ক্ষমতায় যায় তারাই ক্ষমতা ব্যবহার করে স্বৈরতন্ত্র-ফ্যাসিবাদ কর্তৃত্ববাদ কায়েম করতে পারে। ফ্যাসিস্ট শেখ হাসিনার বিদায় হয়েছে কিন্তু ফ্যাসিবাদী ব্যবস্থা এখনো জারি আছে। এজন্যই গণতন্ত্রের শক্তিশারী পাহারাদার দরকার।
তিনি আরও বলেন,জুলাই-আগস্টের অভ্যুত্থানে শেখ হাসিনার পতন হয়েছে। এটা মনে রাখা সবার দরকার, শেখ হাসিনা কিংবা এর আগেও যত দুঃশাসন হয়েছে তারা যে ব্যবস্থার ওপর দাঁড়িয়ে দুঃশাসন কায়েম করেছে সে ব্যবস্থা এখনও বহাল তবিয়তে রয়েছে। সেই ব্যবস্থা বদল করা একটি বড় কাজ। জগদ্দল পাথরটাকে আমরা সরাতে পেরেছি, কাজেই ব্যবস্থা বদল করার ব্যাপারে আমরা পিছিয়ে গেলে হবে না, ঐক্যবদ্ধ থাকতে হবে, এটাই আমাদের মূল বার্তা।
শনিবার (২১ ডিসেম্বর) সন্ধ্যায় ময়মনসিংহ নগরীর টাউনহল মুক্তমঞ্চে ‘কেমন বাংলাদেশ চাই’ শীর্ষক এক গণসংলাপে প্রধান অতিথির বক্তব্যে জোনায়েদ সাকি এসব কথা বলেন তিনি। গণসংহতি আন্দোলন ময়মনসিংহ জেলা শাখার উদ্যোগে রাষ্ট্রের গণতান্ত্রিক রূপান্তরে, নতুন রাজনৈতিক বন্দোবস্ত প্রতিষ্ঠার লক্ষে এই গণসংলাপের আয়োজন করা হয়।
গণতন্ত্রের জন্য গণতন্ত্রের পাহারাদার শক্তিশালী দরকার উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘গণতন্ত্র এমন কোনো ব্যবস্থা নয় যে একবার খোদাই করে রেখে দেওয়া হলো, ওটা স্বয়ংক্রিয়ভাবে বাস্তবায়িত হবে। তাই নতুন রাজনৈতিক বন্দোবস্ত করতে হবে। কেননা বিদ্যমান বন্দোবস্ত ফ্যাসিস্ট বন্দোবস্ত কর্তৃত্ববাদী বন্দোবস্ত। স্বৈরাচারী বন্দোবস্ত। এর মধ্যে যারাই ক্ষমতায় যায় তারাই ক্ষমতা ব্যবহার করে স্বৈরতন্ত্র-ফ্যাসিবাদ কর্তৃত্ববাদ কায়েম করতে পারে। শেখ হাসিনা তার সর্বোচ্চটা দেখিয়ে দিয়ে গেছেন।’
জোনায়েদ সাকি বলেন, ‘শেখ হাসিনা ভেবেছিলেন এভাবে যদি শক্তপোক্ত করে পুরোটাকে একটা জমিদারিতে বানিয়ে ফেলা যায়, তাহলে বোধ হয় চিরস্থায়ী বন্দোবস্ত হয়ে যাবে। কিন্তু আমরা বলেছিলাম এটা চিরস্থায়ী বন্দোবস্ত হবে না। তিনি পালানোর জায়গা পাবেন না এবং এটাই হয়েছে।’
গণসংহতি আন্দোলনের ময়মনসিংহ জেলা আহ্বায়ক মোস্তাফিজুর রহমান রাজীবের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য দেন সংগঠনের সদস্যসচিব এ আর এম মুসাদ্দিক আসিফ, নির্বাহী সমন্বয়কারী আবুল হাসান রুবেল, রাজনৈতিক পরিষদের সদস্য দেওয়ান আব্দুর রশিদ নিলু, মনির উদ্দিন পাপ্পু, জাতীয় পরিষদের সদস্য শামছুল আলম, সম্মিলিত পেশাজীবী সমিতির আহ্বায়ক মির্জা নাজমুল হুদা ও অ্যাডভোকেট অমিত হাসান দীপু।