প্রিন্ট এর তারিখঃ অগাস্ট ১৯, ২০২৫, ১২:১২ এ.এম || প্রকাশের তারিখঃ মে ৬, ২০২৫, ৭:০৩ পি.এম
নওগাঁয় কাজীর ভেলকিবাজি, এক বিয়ের দুই নিকাহনামা মোহরানাও আলাদা

শহিদুল ইসলাম জি এম মিঠন, সিনিয়র রিপোর্টারঃ
নওগাঁর রাণীনগরে কাজীর ভেলকিবাজি।এক বিয়ের দুই নিকাহনামা মোহরানাও আলাদা।বিয়ের সময় এক মোহরানা ও বিচ্ছেদের পর অর্থের বিনিময়ে আরেক মোহরানার নিকাহনামা দিয়ে প্রতারণা করে আসছে বেলাল হোসাইন নামের এক কাজী। কাজীর এই ধরণের প্রতারণা মূলক কাজে প্রতারিত হয়ে অনেকেই আইনের আশ্রয়ে গেলে প্রভাবশালী কাজী বেলালের অর্থের দৌরাত্মের কাছে নায্য বিচার পাওয়া থেকে বঞ্চিত হয়ে আসছেন বিভিন্ন অঞ্চলের মানুষ। রাণীনগর উপজেলার পশ্চিম বালুভরা গ্রামের মৃত মনির উদ্দীনের ছেলে মহিদুল ইসলামের লিখিত অভিযোগের মাধ্যমে বেরিয়ে আসে প্রয়াত এমপি ইসরাফিল আলমের শাসনামলে রাণীনগর উপজেলা স্বেচ্ছাসেবক লীগের ধর্ম বিষয়ক সম্পাদক কাজী বেলাল হোসাইনের এমন প্রতারণা মূলক কর্মকান্ড। শুধু মহিদুল ইসলামই নয় আরও অনেক লিখিত অভিযোগের মাধ্যমে আলোচিত কাজী বেলাল হোসাইনের নতুন ও পুরাতন নানা অবৈধ কর্মকান্ডের কাহিনী বেরিয়ে আসছে। উপজেলার পশ্চিম বালুভরা গ্রামের মৃত মনির উদ্দীনের ছেলে মহিদুল ইসলাম বলেন, কাজী বেলাল হোসাইন উপজেলার ২নং কাশিমপুর ইউনিয়নের কাজী হলেও সরকারি নিয়মনীতি উপেক্ষা করে অর্থের বিনিময়ে বিভিন্ন স্থানে গিয়ে বাল্যবিবাহ নিবন্ধন করে। সে অর্থের বিনিময়ে বিবাহ নিবন্ধনকালিন সময়ে মোহরানা বৃদ্ধি করেন। অনেক ক্ষেত্রে একই বিবাহ বিনা কারণে শুধুমাত্র মোহরানা বৃদ্ধির জন্য অর্থের লোভে একাধিকবার নিবন্ধন করেন।তিনি আরো জানান, গত ২০২৪ সালের মার্চ মাসের ০৭ তারিখে তার ভাগিনা নাটোর জেলার বাগাতিপাড়া উপজেলার গালিমপুর গ্রামের সামছুল প্রামাণিকের ছেলে আনিসুর রহমানের সাথে রাণীনগর উপজেলার বড়গাছা ইউনিয়নের কাটরাশইন গ্রামের শাহানাজ মেম্বারের মেয়ের ১ লাখ ২০ হাজার টাকা মোহরানায় বিবাহ নিবন্ধন করেন কাজী বেলাল হোসাইন। বিবাহের কয়েক মাস পর বিচ্ছেদের সময় কাজী বেলালের নিবন্ধন করা ৪ লাখ ২০ হাজার টাকা মোহরানার বিবাহ নিবন্ধন দাখিল করেন মেয়ে পক্ষ। তখন একই বিবাহের ভিন্ন ভিন্ন মোহরানার বিবাহ নিবন্ধন দাখিল করায় উভয় পক্ষের লোকজনের মধ্যে দ্বন্দ্বের সৃষ্টি হয়। পরে উভয় পক্ষই আদালতের মাধ্যমে বিষয়টি সমাধান করার চেস্টা করছেন।তিনি আরও বলেন, নানা অবৈধ কর্মকান্ডের কারণে বিগত সময়ে কাজী বেলালের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করলে সে অর্থের মাধ্যমে বিভিন্ন মহলকে ম্যানেজ করে নিজেকে বাঁচিয়ে নেয়। তার এই ধরণের কর্মকান্ডে বহু সংসারে অশান্তি সৃষ্টি হয়েছে এবং হচ্ছে। এছাড়া অনেক নিরীহ পরিবারে বিবাহ বিচ্ছেদের মতো ঘটনাও ঘটছে। সে নিজে এবং তার ভাই, পুত্র ও ভাগিনা দিয়ে নিজ এলাকার বাহিরে এমনকি দেশের বিভিন্ন স্থানে মোটা অংকের অর্থের বিনিময়ে বে-আইনী ভাবে বিবাহ ও তালাক নিবন্ধন করার কাজ চালিয়ে আসছে। তার দ্বারা শত শত মানুষ প্রতারিত হচ্ছে। বছরের পর বছর এমন প্রতারণার হাত থেকে মানুষকে রক্ষা করতে সুষ্ঠ তদন্তের মাধ্যমে কাজী বেলালের সকল অবৈধ্য কর্মকান্ড বন্ধ করে তার বিরুদ্ধে আইনানুগ পদক্ষেপ নেওয়ার দাবি জানিয়ে বলেন আইনানুগ পদক্ষেপ এর বিকল্প নেই। এব্যাপারে বক্তব্য জানতে ৬ মে মঙ্গলবার বিকেল পনে ৫ টারদিকে প্রতিবেদক কাজী বেলাল হোসাইন মুঠোফোনে (০১৭--৫২২৫৬৫) যোগাযোগ করলে তিনি তার বিরুদ্ধে উপরোক্ত অভিযোগ বিষয়ে বলেন, আপনেও ঘটনাটি যাচাই করে দ্যাখেন এবং যে বিবাহ রেজিষ্ট্রেশন এর নিকাহনামার দুটি কাগজ বের হয়েছে দুটির লেখাও আলাদা আপনিও ভালোকরে দ্যাখেন তাহলেই বুঝতে পারবেন। এছাড়া তিনি দাবি করেন, পূর্বে কাজীর দায়িত্বে থাকা একজন আমার বিরুদ্ধে এসব অপ-প্রচার ও অভিযোগ করে নিচ্ছেন বলেও দাবী করেন তিনি।এব্যাপারে নওগাঁ জেলা রেজিস্ট্রার মোঃ সাইফুল ইসলাম বলেন, একজন কাজী তার এলাকার বাহিরে গিয়ে কাজ করার কোন ক্ষমতা রাখেন না। কাজী বেলাল হোসাইনের বিরুদ্ধে অনেকগুলো বিষয়ে লিখিত অভিযোগ পেয়েছি। অভিযোগগুলো তদন্ত করা হচ্ছে। তদন্তে যদি অভিযোগের সত্যতা পাওয়া যায় তাহলে তার বিরুদ্ধে বিভাগীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত © ২০২৩ দেশ বাংলা প্রতিদিন