মোঃসালমান আহম্মেদ কেন্দুয়া প্রতিনিধি(নেত্রকোনা) :
নেত্রকোনার কেন্দুয়া উপজেলায় দীর্ঘসময় ধরে চলা লোডশেডিং এবং অতিরিক্ত বিদ্যুৎ বিল নিয়ে সাধারণ জনগণের মধ্যে চরম ক্ষোভ বিরাজ করছে। বিশেষ করে গ্রামের দরিদ্র মানুষেরা বিদ্যুতের বিকল্প ব্যবস্থা না থাকায় রাতের বেলা এখনো আগের দিনের মতো হাতপাখা, হারিকেন কিংবা মোমবাতির উপর নির্ভর করছেন।স্থানীয় ব্যবসায়ীরা জানান, ঘন্টার পর ঘন্টা বিদ্যুৎ না থাকায় দোকানপাটে ক্রেতা কমে গেছে। ইলেকট্রনিক যন্ত্রপাতি চালানো সম্ভব হচ্ছে না, ফলে তাদের ব্যবসা মারাত্মক ক্ষতির মুখে পড়ছে।এছাড়া অনেক গরু খামারি অভিযোগ করেছেন, গরুর ফার্মে ফ্যান বন্ধ থাকায় বিদেশি জাতের গরুগুলো অতিরিক্ত গরমে অসুস্থ হয়ে পড়ছে। এতে একদিকে যেমন দুধ ও ওজন উৎপাদন কমে যাচ্ছে, অন্যদিকে চিকিৎসা খরচও বেড়ে যাচ্ছে।লোডশেডিংয়ের পাশাপাশি অতিরিক্ত বিদ্যুৎ বিল নিয়েও গ্রাহকরা ক্ষুব্ধ। একজন ভুক্তভোগী বলেন, “দিনে ২৪ ঘণ্টায় বিদ্যুৎ পাই এক ঘণ্টার মতো। অথচ বিল আসে আগের চেয়েও দ্বিগুণ। অফিসে গেলে বলা হয় ‘সংশোধন করে দিব’, কিন্তু কাজের কাজ কিছুই হয় না।”এ বিষয়ে নেত্রকোনা পল্লী বিদ্যুৎ সমিতি কেন্দুয়া জোনাল অফিসের ডেপুটি জেনারেল ম্যানেজার (ডিজিএম) প্রকৌশলী মো. ওমর ফারুক জানান, “গরম বাড়ার সাথে সাথে বিদ্যুতের ব্যবহারও বেড়ে গেছে। অন্যদিকে মাওনায় অবস্থিত একটি পাওয়ার স্টেশনে যান্ত্রিক ত্রুটির কারণে সেটি বন্ধ রয়েছে। ফলে কেন্দুয়ায় চাহিদা ২১ মেগাওয়াট হলেও সরবরাহ করা যাচ্ছে মাত্র ১০-১১ মেগাওয়াট।”তিনি আরও জানান, পরিস্থিতি সামাল দিতে জোনে থাকা নয়টি বিদ্যুৎ ফিডারের মধ্যে চারটি নিয়মিত বন্ধ রাখা হচ্ছে। পাওয়ার স্টেশনের মেরামত শেষ হলে পরিস্থিতি কিছুটা উন্নতি হবে বলে তিনি আশা প্রকাশ করেন।ডিজিএম জানান, “উপজেলায় বর্তমানে প্রায় আট হাজার মিটার নষ্ট অবস্থায় রয়েছে। নতুন মিটার সরবরাহের জন্য আবেদন পাঠানো হয়েছে। আপাতত গড় হিসাব করে বিল দেওয়া হচ্ছে। তবে অভিযোগ পেলে দ্রুত সমাধান দেওয়া হচ্ছে।”সচেতন নাগরিকরা বিদ্যুৎ রিডিংয়ে স্বচ্ছতা আনতে মিটার রিডারদের মাধ্যমে গ্রাহকের স্বাক্ষরসহ রিডিং গ্রহণের দাবি জানিয়েছেন। এতে করে ‘ভুতুড়ে বিল’ থেকে মুক্তি পাওয়া সম্ভব বলে মনে করছেন তারা।বিদ্যুৎ সংকট ও বিলসংক্রান্ত সমস্যার কারণে কেন্দুয়াবাসীর অসন্তোষ দিন দিন বাড়ছে। দ্রুত বিদ্যুৎ সরবরাহ স্বাভাবিক করা ও গ্রাহকসেবার মানোন্নয়নে কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণের দাবি জানিয়েছেন ভুক্তভোগী সাধারণ মানুষ।