সৈয়দ সময় ,নেত্রকোনা :নেত্রকোনার কেন্দুয়ার ব্রিটিশ আমলের ঐতিহ্যবাহী গোগবাজার। এখানেই ছিল বিখ্যাত পাটের মোকাম। যে মোকামে পাট বেচা কেনার জন্য কেন্দুয়ার বাইরে থেকে আসতেন পাট ক্রেতা বিক্রেতা। সাইঢুলি,পাটেশ্বরী ও সূতিনদীর ত্রিমোহনায় অবস্থিত এই গোগবাজার এক সময় ছিল খুবই জমজমাট। ইংরেজরা এখানে গোলঘরসহ নির্মাণ করেছিলেন দৃষ্টিনন্দন বেশ কিছু স্থাপনা।ইংরেজরা এখানে আসতেন নিয়মিত। ১৮৮৫ সালের ভয়াবহ এক ঘূর্ণঝড়ে ধ্বংশস্তুপে পরিণত হয় স্থাপনাসহ বাজরটি এবং সেই সাথে পাটমোকামের ঐতিহ্যও ধ্বংশপ্রাপ্ত হয়। পরে স্থানীয়দের উদ্যোগে কোনরকমে কয়েকটি দোকান ঘর নিয়ে দাঁড়িয়ে থাকে গোগ বাজারটি। পাটের বিখ্যাত মোকাম হিসেবে এখানে আসতেন ভৈরব, আশুগঞ্জসহ মদন,মোহনগঞ্জ,তাড়াইল,নান্দাইল,ঈশ্বরগঞ্জ,গৌরীপুর,কালিগঞ্জসহ বিভিন্ন অঞ্চলের পাটচাষী ও ক্রেতা বিক্রেতাগণ। ১৪০ বছর পর স্থানীয়দের উদ্যোগে অতীত বাজারটির অনুস্মরণে এলাকার মানুষ প্রথমবারের মত ঈদ উল আজহা উপলক্ষ্যে আনুষ্ঠানিক সরকারি ডাকের মাধ্যমে শুরু করলেন গোগবাজারে এই অস্থায়ী পশুরহাট।এলাকার কয়েকজন জানান,এর আগে ২০২৩ সালে স্থানীয়দের আয়োজনে গরুর বাজার শুরু করলেও গত ২০২৪ সালে আর বাজারটি চালু রাখা যায়নি। এবারই তারা সরকারি ভাবে ডেকে এনে বাজারটি জমিয়েছেন। বুধবার দুপুরে সরজমিনে যাওয়া হয় হাটটি দেখতে। দেখা গেল বিভিন্ন গ্রাম থেকে অনেক গরু ছাগল বিক্রির জন্য নিয়ে আসা হচ্ছে। ক্রেতা বিক্রেতার সংখ্যাও কম নয়। শুরু হচ্ছে দরদাম। “আজই প্রথম আজই শেষ” অর্থাৎ সাপ্তাহিক বুধবার এই হাটটির আজকেই শেষ বাজার।আয়োজকদের কাছ থেকে জানা গেছে, গত ২৭ মে গোগবাজার পশুর হাটটি কেন্দুয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ইমদাদুল হক তালুকদারের মাধ্যমে উপজেলা প্রশাসন থেকে ডেকে আনা হয়। বাজার বার ছিল বুধবার। বাজারের প্রস্তুতি সম্পন্ন হলে বুধবার একদিন মাত্র বাজার পান ডাককারীগণ। এবারের একদিনের এই হাট নিয়ে কমিটি ও এলাকাবাসি আনন্দিত। হাটের ভিটার (ডাক কারী) মাহবুবুর রহমান জাহাঙ্গীর জানান, এইবারই প্রথম আমরা আনুষ্ঠানিক ভাবে অস্থায়ী এই পশুর হাটটি সরকারি ভাবে ডেকে এনেছি। এলাকার কয়েকটি গ্রামের শতাধীক লোক কমিটির সাথে আছেন। ক্রেতা বিক্রেতাদের সুবিধার্থে উভয় পক্ষ হতে মাত্র ২–২, ৪ শ টাকা আশিল নিচ্ছি। আমাদের ইচ্ছা আছে সাপ্তাহিক স্থায়ী বাজারের সরকারি বন্দোবস্ত করে ব্রিটিশ আমলের গৌরব ফিরিয়ে এনে ঐতিহ্যময় করে তোলা।সে জন্য এলাকাবাসীসহ সকলের সহযোগীতা চাই।