সৈয়দ সময় , নেত্রকোনা :
নেত্রকোনার রাজনৈতিক অঙ্গনে আবারও আলোচনায় উঠে এলো মতপ্রকাশ বনাম দলীয় আনুগত্যের প্রশ্ন।ফেসবুকে শেখ মুজিবুর রহমান কে জাতির পিতা বলে শ্রদ্ধা জানানো কে কেন্দ্র করে মোহনগঞ্জ উপজেলা ছাত্রদলের যুগ্ম আহ্বায়ক ইসহাক আহমেদ অন্তরের সাংগঠনিক যাত্রা হঠাৎ করেই থেমে গেল।১৫ আগস্ট সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে দেওয়া একটি সংক্ষিপ্ত পোস্টই ছিল আলোচনার সূচনা। সেখানে অন্তর লেখেন ,“জন্ম কিংবা মৃত্যু নয়, মানুষের হৃদয় জয়ই হলো মূল অর্জন... শুভ জন্মদিন দেশমাতা, বিনম্র শ্রদ্ধা জাতির পিতা।”এই কয়েকটি বাক্যই তার রাজনৈতিক পদচ্যুতির কারণ হয়ে দাঁড়ায়।১৭ আগস্ট জেলা ছাত্রদল থেকে কারণ দর্শানোর নোটিশ দেওয়া হয়। নিয়ম অনুযায়ী তাকে উপস্থিত হয়ে ব্যাখ্যা দেওয়ার সময় বেঁধে দেওয়া হয়েছিল ২৪ ঘণ্টা। কিন্তু তিনি শোকজের জবাব না দিয়ে সরাসরি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ঘোষণা দেন ,“আমার ব্যক্তিগত দর্শন, মুক্তচিন্তা, অহিংসা, ভিন্নমতের অধিকার যদি হয় শৃঙ্খলাভঙ্গ, তবে আমি রাজনৈতিক পদ থেকে স্বেচ্ছায় অব্যাহতি নিলাম।”এ ঘোষণার পরদিনই আনুষ্ঠানিক বহিষ্কার প্রক্রিয়া সম্পন্ন হয় ।উপজেলা ছাত্রদলের আহ্বায়ক জামিউল ইসলাম রাকিব বলেন,“গুরুত্বপূর্ণ পদে থেকে কারও ব্যক্তিগত মত যদি দলের নীতির পরিপন্থী হয়, তবে সেটা শৃঙ্খলাভঙ্গ। শোকজের বিনয়ী উত্তর দেওয়ার সুযোগ ছিল, কিন্তুতিনি উল্টো কঠোর ভঙ্গি দেখিয়েছেন। তাই সংগঠন বহিষ্কার ছাড়া অন্য পথ দেখেনি।”এই ঘটনা কেবল একটি বহিষ্কার নয়, বরং রাজনৈতিক পরিসরে স্বাধীন মতপ্রকাশের জায়গাটা কতটা সঙ্কুচিত সে প্রশ্নকে সামনে নিয়ে এসেছে।দলীয় শৃঙ্খলা মানা কি সর্বোচ্চ প্রাধান্য পাবে?নাকি ব্যক্তিগত মুক্তচিন্তার অধিকারও রাজনৈতিক অঙ্গনের অংশ হয়ে উঠবে?অন্তরের বিদায় এই দুই স্রোতের সংঘর্ষকে আরও স্পষ্ট করে তুলল।বাংলাদেশের ছাত্ররাজনীতিতে আনুগত্যের শৃঙ্খল যতটা কঠোর, ভিন্নমতের পরিসর ততটাই সংকীর্ণ। ইসহাক আহমেদের ফেসবুক পোস্ট তার রাজনৈতিক ভবিষ্যৎকে বদলে দিলেও, ইতিহাসে হয়তো থেকে যাবে একটি প্রশ্ন— শ্রদ্ধা কি কখনো অপরাধ হতে পারে