নওগাঁয় প্রেম করে বিয়ের দু' বছর পার না হতেই জীবন দিলো তানিয়া আক্তার বৃষ্টি নামের এক প্রেমিকা-বধূ।
এ প্রেমিকা-বধূ মৃত্যুর ঘটনাটি ঘটেছে সোমবার ১৩ ফেব্রুয়ারী নওগাঁর মহাদেবপুর উপজেলার বাগাচারা গ্রামে। মৃত্যু বরণকারী তানিয়া আক্তার বৃষ্টি বাগাচারা গ্রামের আব্দুল লতিফ এর মেয়ে এবং একই গ্রামের সাদেকুল ইসলাম এর স্ত্রী।
স্থানিয়রা জানান, বাগাচারা গ্রামের মকবুল হোসেন এর ছেলে
সাদেকুল ইসলাম (২৬) নিজ গ্রামের মেয়ে তানিয়া আক্তার বৃষ্টি (২০) এর সাথে প্রেম (ভালোবাসা) সম্পর্ক করে প্রায় দু' বছর পূর্বে তারা বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হোন।
স্থানিয়রা আরো জানান,
সোমবার বেলা ১১ টারদিকে গৃহবধূ তানিয়া আক্তার বৃষ্টি স্বামীর বাড়িতে গ্যাস বড়ি সেবন করলে পরিবারের লোকজন তানিয়া আক্তার বৃষ্টি কে চিকিৎসার জন্য প্রথমে নওগাঁ সদর হাসপাতালে নিয়ে যান। কিন্তু
তানিয়া আক্তার বৃষ্টির অবস্থা আশংখ্যাজনক হওয়ায় দায়িত্বরত চিকিৎসক তাকে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়ার পরামর্শ দিলে স্বজনরা তাকে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার পথে তার মৃত্যু হয়। তানিয়া'র মৃতদেহ গ্রামে এনে স্বামীর বাড়ির খলিয়ানে রেখে নিহতের স্বামী ও পিতার পরিবার সহ উভয় পক্ষের (স্বজনরা) লোকজন সমঝোতার ভিত্তিতে কারো কোন অভিযোগ নেই বলে সিদ্ধান্ত নেয় এবং ঘটনাটি পুলিশকে জানিয়ে ময়না তদন্ত ছাড়াই মৃতদেহ দাফন সম্পূর্ণ করার পস্তুতি নেয়। সোমবার বিকেলে সন্ধার পূর্ব মহূর্তে খবর পেয়ে মহাদেবপুর থানাধীন নওহাটামোড় পুলিশ ফাঁড়ির এস আই জিয়াউর রহমান সঙ্গীয় ফোর্সসহ ঘটনাস্থলে যান। এসময় প্রেমিকা-বধূ'র মৃত্যুর খবর পেয়ে প্রতিবেদক সহ সংবাদকর্মীরাও ঘটনাস্থলে উপস্থিত হলে নিহতের স্বামী ও পিতার পরিবারের লোকজন সহ স্বজনরা এস আই জিয়াউর রহমান এবং উপস্থিত সংবাদকর্মীদের কে বলেন, আমাদের দু'পক্ষের-ই কারো কোন অভিযোগ নেই এবং আমরা মৃতদেহ ময়না তদন্ত করাতেও চাই না বা কোন সংবাদ প্রকাশ করাতেও চাইনা।
স্বজনদের কাছে থেকে এমন কথাশুনে পুলিশ কর্মকর্তা এস আই জিয়াউর রহমান গৃহবধূ মৃত্যুর ঘটনাটি উর্দ্ধতন কর্মকর্তাকে জানিয়ে উর্দ্ধতন কর্মকর্তার দিক-নির্দেশনায় স্থানিয় জনপ্রতিনিধি সহ উপস্থিত গন্যমান্য ব্যাক্তিদের সহযোগীতায় নিহতের স্বজনদের বুঝিয়ে ঘটনাস্থলে প্রাথমিক সুরতহাল রিপোর্ট অন্তে সন্ধার পর ময়না তদন্তের জন্য ঘটনাস্থল থেকে মৃতদেহ উদ্ধার পূর্বক পুলিশ ফাঁড়ি হেফাজতে নেয়।
গৃহবধূর মৃতদেহ উদ্ধারের সত্যতা নিশ্চিত করে মহাদেবপুর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মোজাফ্ফর হোসেন প্রতিবেদককে জানান, ঘটনার খবর পাওয়ার সাথে সাথেই ঘটনাস্থলে পুলিশ পাঠিয়ে প্রাথমিক সুরতহাল রিপোর্ট অন্তে ময়না তদন্তের জন্য মৃতদেহ পুলিশি হেফাজতে নেওয়া হয়েছে। আগামীকাল মঙ্গলবার সকালে নওগাঁ সদর হাসপাতাল মর্গে ময়না তদন্ত শেষে স্বজনদের কাছে মৃতদেহ হস্তান্তর করা হবে। নিহতের স্বজনরা কেউ কোন অভিযোগ করতে রাজি হচ্ছিলো না, তবে এঘটনায় থানায় একটি ইউডি মামলার পক্রিয়া চলছে। এছাড়া ময়না তদন্তের রিপোর্ট আসার পর মৃত্যুর কারন নিশ্চিত হওয়া যাবে বলেও জানান তিনি।
এব্যাপারে নিহতের ফুপু ঘটনাস্থলে বলেন, স্বামীর নির্যাতন সয্য করতে না পেরে গ্যাস বড়ি খেতে বাধ্য হয়েছেন আমার মা তানিয়া। মারা যাওয়ার পূর্বে নির্যাতনের কথা আমাকে জানিয়ে, এমনকি গতকাল সন্ধায় তার শাশুড়ি তাকে গালাগালি করেন এবং রাতে স্বামী সাদেকুল ও তাকে নির্যাতন করেছেন বলে এসময় তিনি বিলাপ করতে করতে বলেন, আমার মাকে কাটাকাটি করিবে এজন্য মুখ বন্ধ রাখেছিলাম, আমি পুলিশ ও সাংবাদিকদের সব বলে দিব।
প্রেম-ভালোবাসা'র সম্পর্ক গড়ে তুলে বিয়ে করার দু' বছর না পার হতেই প্রেমিকা-বধূ তানিয়া আক্তার বৃষ্টি কেন এভাবে নিজের জীবন দিলেন এমন নানা প্রশ্ন বা আলোচনা চলছিলো ঘটনাস্থলে উপস্থিত অনেকের মাঝে। তবে-তানিয়া আক্তার বৃষ্টির মৃত্যুতে পরিবার, স্বজনদের পাশাপাশি গ্রামের লোকজনের মাঝেও নেমেছে শোকের ছাঁয়া।