খোরশেদ আলম, সাভার উপজেলা প্রতিনিধি
আপা আপনার কার্ডটি আমাকে দিন, আমি টাকা তুলে দিচ্ছি এই কথা বলে কৌশলে ব্যাংকের এটিএম কার্ড হাতে নিয়ে 'নেটওয়ার্ক সমস্যা'র অযুহাতে কার্ড ফিরিয়ে দেয় প্রতারক চক্র। তবে সুযোগ বুঝে কার্ডটি বদল করে নেয় তারা। কার্ড দেখতে একই রকম হওয়ায় ভুক্তভোগী সরল বিশ্বাসে চলে গেলেই দ্রুত ওই কার্ড ব্যবহার করে এটিএম বুথ থেকে টাকা তুলে নেয় প্রতারক চক্রটি। এটিএম বুথের সহযোগীর রুপে থাকা এই চক্রের এক সদস্যকে গ্রেপ্তার করেছে আশুলিয়া থানা পুলিশ।
মঙ্গলবার (১৩ জুন) দুপুরে গ্রেপ্তার আসামীকে আদালতে পাঠানো হয়। এর আগে সোমবার আশুলিয়ার নরসিংহপুর এলাকায় জনতার হাতে আটক ওই আসামীকে হেফাজতে নেয় পুলিশ। পরে তার বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করে ভুক্তভোগী এক নারী পোশাক শ্রমিক।
ভুক্তভোগী শিউলি বেগম(২২) স্বামী সোহাগ হাওলাদারের সাথে আশুলিয়ায় ভাড়া বাসায় থাকে। তাদের গ্রামের বাড়ি পিরোজপুর জেলায়। তারা দুজনেই পেশায় পোশাক শ্রমিক।
শিউলি বেগম এজাহারে উল্লেখ করেন, শনিবার (১১ জুন) আশুলিয়ার নরসিংহপুর নাসা গ্রুপ গার্মেন্টসের সামনের এক্সিম ব্যাংকের এটিএম বুথ থেকে স্বামীর এক্সিম ব্যাংকের এটিএম কার্ড নিয়ে টাকা তুলতে যাই। পরে এক লোক আমাকে বলে, আপা আপনার কার্ডটি আমাকে দিন, আমি টাকা তুলে দিচ্ছি। পরে আমি তাকে এটিএম কার্ড ও পিন কোড দেই। বুথে কার্ডটি ঢুকানোর পরে সে বলে নেটওয়ার্ক সমস্যা, এখন টাকা উঠানো যাবেনা। পরে সে আমাকে একই রকম দেখতে একটি এটিএম কার্ড ফেরত দেয়। পরে বাসায় চলে আসার পর মোবাইলে ৯ হাজার টাকা তোলার ম্যাসেজ দেখতে পাই। পরদিন এটিএম বুথে এই ব্যাপারে জানানোর উদ্দেশ্যে গেলে দেখি সেই লোক দাঁড়িয়ে আছে। পরে তাকে টাকা তোলার কথা জিজ্ঞেস করতেই সে পালিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করলে আশেপাশের সবাই তাকে আটকে ফেলে। পরে সে টাকা তোলার কথা স্বীকার করে। পরে আশুলিয়া থানায় খবর দিলে পুলিশ এসে আসামীকে গ্রেপ্তার করে।
গ্রেপ্তারকৃত যুবকের নাম রাজীব শেখ (২৭)। তিনি বাগেরহাট জেলার কচুয়া থানার গজারিয়া গ্রামের রেজাউল শেখের ছেলে। আশুলিয়ার নরসিংহপুর সোনা মিয়া মার্কেট এলাকার কিরণ এর বাড়িতে ভাড়া থাকে।
এ মামলার তদন্ত কর্মকর্তা আশুলিয়া থানার এসআই (উপ-পরিদর্শক) সাদরুজ বলেন, এটিএম বুথে সহযোগীতার কথা বলে প্রতারণা করে এই ব্যক্তি। নরম স্বভাবের নারীদের টার্গেট করত সে। টাকা তুলে দেয়ার কথা বলে আসল কার্ড হাতে নিয়ে ভুক্তভোগীকে বাতিল কার্ড দিত সে। তার কাছ থেকে বিভিন্ন মানুষের আরও ৬ টি কার্ড জব্দ করা হয়েছে। আসামীকে গ্রেপ্তার করে আদালতে পাঠানো হয়েছে।
এর আগে গত বছরের ১০ অক্টোবর এমন সহায়তাকারী চক্রের ৪ সদস্যকে গ্রেপ্তার করেছিল গাজীপুর মেট্রো পুলিশ, যাদের মধ্যে ৩ জনই ছিল আশুলিয়ার। তারাও এটিএম বুথের সামনে গিয়ে সাধারণ মানুষের টাকা তুলে দেয়ার জন্য সহযোগীতার আহবান করত এবং সুযোগ বুঝে কার্ড বদলে নিয়ে টাকা তুলে নিত।