শখ করে নাম রাখা হয়েছে ‘বাদশাহ’। সময়ের সঙ্গে তার আকৃতি বেড়ে উঠলেও খুবই শান্ত স্বভাবের। নামের সঙ্গে তার আদর যত্ন যেন কমতি নেই।
উচ্চতায় বড় এবং দেখতে সুন্দর হওয়ায় এরইমধ্যে ছাগলটি এলাকায় বেশ সারা ফেলেছে। এটি দেখতে বিভিন্ন এলাকার লোকজন প্রতিদিন বাড়িতে ভিড় করছেন। বর্তমানে কোরবানির হাটে ছাগলটির দাম চাওয়া হচ্ছে ৮০ হাজার টাকা।
ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আখাউড়া পৌর শহরের দুর্গাপুর গেইট এলাকায় মো. গোলাম মাওলা নামে এক ব্যবসায়ী ছাগলটি লালন পালন করছেন। তিনি ঐ এলাকার মো. মুছা মিয়ার ছেলে।
গোলাম মাওলা কোরবানির ঈদ উপলক্ষে ছাগলটি বিক্রি করবেন। এরইমধ্যে ছাগলটি কেনার জন্য বিভিন্ন এলাকার লোকজন ভিড় করছেন।
স্থানীয়রা জানান, এ উপজেলায় ছাগলটি সবচেয়ে বড়। দেখতে খুবই সুন্দর। মেইন রাস্তার সঙ্গে বাড়ি হওয়ায় আসা যাওয়ার পথে অনেকেই ছাগলটি দেখছেন।
গোলাম মাওলা বলেন, ৬ মাস আগে ৩৩ কেজির ছাগলটি ২২ হাজার টাকা দিয়ে কিনি। কেনার পর থেকে নিজেই ছাগলটিকে সন্তানের মতো খুব যত্ন করে লালন পালন করছি।
গোলাম মাওলা আরো বলেন, বাদশাকে প্রতিদিন খুদের ভাত, গমের ভূসি, খেসারির ভূসি, খৈল, ডাল, শুকনো খাবার, আঙ্গুর, কলা ইত্যাদি খাওয়ানো হয়।
তাছাড়া নিয়মিত প্রাণিসম্পদ কার্যালয়ে গিয়ে পরামর্শ নিচ্ছেন বলে জানান। নিয়মিত খাবার ও পরিচর্যা করার ফলে তার আকৃতি বেড়েছে। বর্তমানে ছাগলটির ওজন ৭২ কেজি। বাড়িতে সবাই ছাগলটিকে খুব আদর যত্ন করছেন। তাই সবার সঙ্গেই সে মিশে যায়। প্রতিদিন দেড়শ টাকার খাবার দিতে হয়।
উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তাদের সহযোগিতায় ডিজিটাল স্কেলের মাধ্যমে ছাগলের ওজন নিশ্চিত হওয়া গেছে। এ বছর কোরবানির ঈদে এটি বিক্রি করা হবে।
সরেজমিন দুর্গাপুর গিয়ে দেখা যায়, অতি যত্ন সহকারে ছাগলটিকে লালন পালন করা হচ্ছে। সকাল থেকে রাত অবধি বাদশাহর অতিরিক্ত যত্ন নিচ্ছেন পরিবারের লোকজন। বিশাল আকারের ছাগলটিকে দেখতে বিভিন্ন স্থান থেকে লোকজন তার বাড়িতে আসছেন।
বাদশাকে দেখতে আসা পৌর শহরের তারাগন এলাকার কামরুল হাসান বলেন, লোকমুখে শুনে ছাগলটি দেখতে এসেছি। বাদশা দেখতে বাদশার মতোই। ছাগলটি দেখে খুবই ভালো লেগেছে।
ক্রেতা মো. আফজাল হোসেন বলেন, এতো বড় ছাগল সহসাই দেখা যায় না। আমার ছেলেসহ সবার পছন্দ হয়েছে ছাগলটি।
মো. গিয়াস উদ্দিন মাস্টার বলেন, গোলাম মাওলা একজন সৌখিন মানুষ। ছাগল লালন পালন ছাড়াও তিনি নানা প্রজাতির পাখিও পালন করছেন। প্রতি বছরই দৃষ্টি নন্দন ছাগল লালন পালন করে এলাকায় আলোড়ন সৃষ্টি করছেন।
গোলাম মাওলা জানান, কোরবানির ঈদ উপলক্ষে প্রতি বছর শখ করে বড় আকারের ছাগল পালন করছেন। গত ৫ বছর ধরে ছাগল পালন করে বিক্রি করছেন। বিক্রি হওয়া প্রতিটি ছাগলের ওজন ছিল ৭৫-৯০ কেজি। বর্তমানে তিনি যে ছাগলটি পালন করছেন সেটিও রয়েছে ৭২ কেজি ওজনের। এই বিশাল আকারের ছাগলটির দাম ৮০ হাজার টাকা চাওয়া হলেও বাজারের অবস্থা বুঝে আলোচনা সাপেক্ষে দাম কমবেশি হতে পারে।
উপজেলা প্রাণী সম্পদ কর্মকর্তা ডা. জুয়েল মজুমদার বলেন, এতো বড় ছাগল উপজেলায় আর কোথাও আছে কি না তা জানা নেই। উন্নত জাতের ছাগলটিকে প্রাকৃতিক উপায়ে লালন পালন করছেন। তিনি সব সময় এটির খোঁজখবর রাখছেন। তাছাড়া যখনই কোনো সমস্যায় পড়ছেন সার্বিকভাবে পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে।