রিপন কান্তি গুণ, বিশেষ প্রতিনিধি (নেত্রকোনা): নেত্রকোনার বারহাট্টা উপজেলাধীন সাহতা ইউনিয়নের দওগ্রাম এলাকার সর্বজনীন কালী মন্দিরের প্রতিমা ভাঙচুর করেছে দুর্বৃত্তরা।

এলাকাবাসীর দেওয়া তথ্যমতে, গত সোমবার রাত ২টা থেকে মঙ্গলবার ভোর রাতের মধ্যে উপজেলার দত্তগ্রাম এলাকায় কালী মন্দিরের প্রতিমা ভাঙার ঘটনাটি ঘটেছে।

এলাকার কয়েকজন বাসিন্দা ও থানা-পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, মঙ্গলবার সকালে গ্রামের এক ব্যক্তি হাটতে এসে মন্দিরের সামনে গিয়ে মন্দিরের ভিতর তাকিয়ে দেখেন কয়েকটি প্রতিমা ভাঙা অবস্থায় পড়ে আছে। পরে তিনি মন্দির কমিটির সভাপতি কাজল সরকারকে বিষয়টি অবগত করেন। তৎক্ষনাৎ সভাপতি কাজল সরকার এলাকার কয়েকজনকে নিয়ে মন্দিরে ছুটে যান এবং সেখানে গিয়ে দেখতে পান- মন্দিরে থাকা মহাদেব (শিব), কালী ও রাধাকৃষ্ণসহ চারটি প্রতিমার মাথা, হাত-পাসহ বিভিন্ন অংশ ভাঙা। পরে তিনি বারহাট্টা থানায় খবর দেন। ঘটনার খবর পেয়ে মঙ্গলবার দুপুরে বারহাট্টা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) রফিকুল ইসলাম পুলিশসহ ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন।

স্থানীয় বাসিন্দারা বলেন, ‘আমরা সকালে প্রতিমা ভাঙার বিষয়টি জানতে পেরে এসে দেখি মন্দিরের প্রতিমাগুলো ভেঙে ফেলা হয়েছে। বিষয়টি আমাদের ধর্মীয় অনুভূতিতে চরম আঘাত। মুর্তি পূজা আমাদের ধর্মীয় অনুভূতি। সনাতনী রীতি অনুযায়ী মুর্তি পূজা আমরা বাবা-দাদু’র আমল থেকে করে আসছি। মন্দিরে এসে আমরা দেব-দেবীর প্রতিমাকে শ্রদ্ধা ও প্রণাম জানাই।

তারা আরও বলেন, আসন্ন শারদীয় দুর্গাপূজা নিয়েও এখন আমরা শঙ্কিত। এমন ঘটনার পুনরাবৃত্তি যে ঘটবে না- এ নিশ্চয়তা আমাদের কে দিবে?

দত্তগ্রাম সর্বজনীন মন্দির কমিটির সভাপতি কাজল সরকার বলেন, আমরা এখন বৈশম্যবিরোধী নতুন স্বাধীন দেশ পেয়েছি- ‘যেখানে ধর্মীয় কোন ভেদাভেদ থাকবে না।’ কিন্তু এখনও সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের মন্দিরে হামলা ও ভাঙচুরের ঘটনাটি মেনে নিতে পারছি না। ঘটনাটি স্থানীয় হিন্দু সম্প্রদায়ের মধ্যে ভীতি ও ক্ষোভের সৃষ্টি করেছে। আমরা চাই- ‘এ ন্যক্কারজনক ঘটনায় জড়িত সত্যিকারের দোষী ব্যক্তিদের খুঁজে বের করে তাদের শাস্তির আওতায় আনা হোক।’

বারহাট্টা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. রফিকুল ইসলাম বলেন, দুর্বৃত্তরা মন্দিরের চারটি মূর্তির বিভিন্ন অংশ ভেঙে ফেলেছে। বিষয়টি কঠোরভাবে তদন্ত করা হচ্ছে। অপরাধী যে-ই হোক না কেন, তাকে অবশ্যই আইনের আওতায় আনা হবে। এ ব্যপারে কাউকে কোনো ছাড় দেওয়া হবে না।