নিজস্ব প্রতিবেদক: ছাত্র-জনতার গণঅভ্যুত্থানে গত ৫ আগস্ট প্রধানমন্ত্রীর পদে ইস্তফা দিয়ে পালিয়ে ভারত চলে যান আওয়ামী লীগ সভানেত্রী শেখ হাসিনা। তখন সেনাপ্রধান জেনারেল ওয়াকার উজ জামান শেখ হাসিনার পদত্যাগের কথা জানান।
এরপর যুক্তরাষ্ট্র থেকে এক ভিডিও বার্তায় হাসিনাপুত্র সজীব ওয়াজেদ জয় দাবি করেন তার মা পদত্যাগ করেননি। তিনি এখনো বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী। এবার এই বিষয়ে বিস্ফোরক মন্তব্য করেছেন খোদ ক্ষমতাচ্যুত এ প্রধানমন্ত্রী।
শুক্রাবার ফাঁস হওয়া এক ফোনালাপে হাসিনা জানান, তিনি এখনো পদত্যাগ করেননি। ফলে বর্তমানে বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী তিনিই। এ সময় ড. ইউনূস অবৈধভাবে ক্ষমতা দখল করেছেন বলেও দাবি করেন হাসিনা।
উল্লেখ্য, ৫ আগস্টের পর থেকে শেখ হাসিনার সঙ্গে অনেকেরই কথোপথনের অডিও ফাঁস হচ্ছে। সম্প্রতি বেলজিয়ামে অবস্থানরত নোয়াখালীর সোনাইমুড়ি থানার ছাত্রলীগের সাবেক সেক্রেটারির সঙ্গে টেলিফোনে কথা বলেছেন শেখ হাসিনা। যা ফাঁস হয়েছে।
ফোনালাপটি থেকে জানা গেছে-
শেখ হাসিনা : সে তো জবর দখল করছে। তার কোনো লিগালিটি নাই। উপদেষ্টা বলে আমাদের কোনো পদ নাই। মানুষ খুন করে মেরে, একটা সিচ্যুয়েশন তৈরি করে তারপর সে ক্ষমতায় গেল।
সাবেক ছাত্রলীগ নেতা : জ্বী আপা জ্বী আপা এগুলো আমরা ইউরোপীয় পার্লামেন্টকে জানাচ্ছি।
শেখ হাসিনা : আমি তো পদত্যাগ করি নাই। আমাদের কনস্টিটিউশনের আর্টিক্যাল ৫৭ অনুযায়ী যেভাবে পদত্যাগ, আমার কিন্তু সেভাবে পদত্যাগ করা হয়নি। সে কিন্তু ৬ তারিখের জায়গায় ৫ তারিখে (লং মার্চ) নিয়ে আসলো। ৫ তারিখে নিয়ে আসার ফলে এমনভাবে চারদিকে লোক ঘেরাও…আমি দেখলাম যে এখন যদি ফায়ার ওপেন করে আমার এখানের সিকিউরিটি… তাহলে অনেক লাশ পড়বে। লাশ ফেলে আমি ক্ষমতায় থাকতে চাই না।
সাবেক ছাত্রলীগ নেতা : জ্বী আপা, জ্বী।
শেখ হাসিনা আরও বলেন : যখন এমন সিচ্যুয়েশন হয়ে গেল যে আমার সিকিউরিটি যারা ছিল তারা বাধ্য হয়ে..তখন আমাকে সরে যেতে হলো গণভবন থেকে। যার ফলে বঙ্গভবনে গিয়ে মহামান্য রাষ্ট্রপতির কাছে পদত্যাগপত্র জমা আমি দেইনি। কাজেই আমার কিন্তু পদত্যাগ হয়নি। আমি এখনো বাংলাদেশের কনস্টিটিউশনাল ইলেকটেড প্রাইম মিনিস্টার।
সাবেক ছাত্রলীগ নেতা : ইনশাআল্লাহ আপা, আপনি চলে আসবেন তো। আর বেশি দিন নাই।
শেখ হাসিনা : তারপর ফলস ছবি দেখালো আমি সই করছি। সেটা হলো আমার ভিজিটিং বুকের সই। ছবিটা ভালো করে দেখলে দেখা যাবে ওইটা একটা মোটা বই। ওরকম কোনো বইয়ে প্রাইম মিনিস্টার সই করে পদত্যাগ করেন না। আমার সেই চিঠিও কেউ দেখাতে পারছে না। গণভবনে রেখে আসছিলাম, গণভবন আগুন দিয়ে পুড়িয়ে দিয়েছে লুটপাট হয়েছে-ওগুলো সব চলে গেছে।
প্রসঙ্গত, দেশ ছেড়ে যাওয়ার পর শেখ হাসিনার সঙ্গে অনেকেরই কথোপথনের অডিও ফাঁস হচ্ছে। সম্প্রতি ফাঁস হয়েছে মোহাম্মদ তানভীর কায়সার নামে যুক্তরাষ্ট্র প্রবাসী এক আওয়ামী লীগ নেতার সঙ্গে শেখ হাসিনার কথোপথনের অডিও।