নওগাঁর ধামইরহাট উপজেলার খড়মপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রজেক্টর না দেয়ায় এক শিক্ষিকাকে বেধড়ক মারপিট করেছে ঐ গ্রামের আনোয়ার হোসেন নামে এক যুবক। প্রধান শিক্ষককে না পেয়ে ঐ নারী শিক্ষককে মারপিট করার পর বিদ্যালয়ের আসবাবপত্র ও গ্লাস ভাংচুর করা হয়। স্থানীয়রা ঐ শিক্ষিকাকে আহত অবস্থায় উদ্ধার করে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করেছেন।
বৃহস্পতিবার ৮ ডিসেম্বর সকাল ৯টারদিকে এ ঘটনা ঘটে। এদিকে প্রধান শিক্ষক ও ঐ নারী শিক্ষিকা বাদী হয়ে থানায় দুটি পৃথক অভিযোগ দায়ের করেছেন। বিষয়টি নিয়ে অভিভাবকদের মাঝে ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে।
ধামইরহাট থানায় লিখিত পৃথক দুটি অভিযোগ সূত্রে জানা গেছে, উপজেলার খড়মপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মোঃ খেলুন সরদারের নিকট বুধবার দুপুরে বিদ্যালয় চলাকালীন সময়ে খড়মপুর গ্রামের মৃত মোজাফ্ফর রহমানের ছেলে মো.আনোয়ার হোসেন (৪০) বিদ্যালয়ের প্রজেক্টর চায়। সরকারি সম্পদ প্রধান শিক্ষক দিতে অপারগতা প্রকাশ করলে তাকে অকথ্য ভাষায় গালিগালাজসহ দেখে নেয়ার হুমকি দেয়। পরের দিন বৃহস্পতিবার সকাল ৯ টার দিকে আনোয়ার হোসেন অজ্ঞাতনামা আরও ৩-৪ জন কে সঙ্গে নিয়ে বিদ্যালয়ে গিয়ে প্রধান শিক্ষককে খুঁজতে থাকে। প্রধান শিক্ষক কে না পেয়ে আনোয়ার হোসেন বিদ্যালয়ের চেয়ার, টেবিলের গ্লাসসহ বিভিন্ন ধরণের আসবাবপত্র ভাংচুর ও তছনছ করতে থাকে।
এ সময় সহকারি শিক্ষক মোসাঃ মারুফা ইয়াসমিন (৩৫) ও দপ্তরী কাম নৈশ্যপ্রহরী ইবাদত হোসেন ভাংচুরের প্রতিবাদ করলে এতে ক্ষিপ্ত হয়ে আনোয়ার হোসেনসহ অজ্ঞাতনামা ৩-৪ জন মিলে শিক্ষিকা মারুফা ইয়াসমিনকে মাটিতে ফেলে বিবস্ত্র করে মাথা ও শরীরের বিভিন্ন জায়গায় আঘাত করেন।এ সসয় ওই শিক্ষিকার চিৎকার শুনে বিদ্যালয়ের অপরাপর শিক্ষক ও শিক্ষার্থীরা এগিয়ে এলে দুর্বৃত্তরা পালিয়ে যায়। প্রায় লক্ষাধিক টাকার মালামাল ভাংচুর করে দুর্বৃত্তরা। এব্যাপারে প্রধান শিক্ষক খেলুন সরদার ও সহকারি শিক্ষক মারুফা ইয়াসমিন বাদী হয়ে থানায় পৃথক দুটি অভিযোগ দায়ের করেন।
এ ব্যাপারে উপজেলা শিক্ষা অফিসার মোঃ আজমল হোসেন বলেন, খবর পেয়ে উপজেলা নির্বাহী অফিসার মোঃ আরিফুল ইসলামসহ আমি সহকারি শিক্ষক মারুফা ইয়াসমিনকে দেখতে হাসপাতালে গিয়েছিলাম। ঘটনাস্থলে আমার একজন সহকারি উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তা রয়েছেন। সুষ্টু বিচারের জন প্রধান শিক্ষক ও সহকারি শিক্ষক থানায় অভিযোগ দায়ের করেছেন। অন্যায়ভাবে শিক্ষককে মারপিট করার অপরাধে অবশ্যই দোষীর শাস্তি দাবী করছেন তারা।
ধামইরহাট থানার অফিসার ইনচার্জ মোজাম্মেল হক কাজী বলেন, থানায় অভিযোগ পাওয়ার পর ঘটনাস্থলে পুলিশ পাঠানো হয়েছে। বিষয়টি তদন্ত পূর্বক দোষী ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেয়া হবে।