শুক্রবার (৫ এপ্রিল) রাত সাড়ে ১১টার দিকে উপজেলার চরচারতলা মোল্লা বাড়ি ও কেছকি বাড়ি গোষ্ঠীর মধ্যে এ সংঘর্ষ ঘটে।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্র জানায়, চরচারতলা উত্তরপাড়া জামে মসজিদে মোল্লা বাড়ির মাওলানা কাজী মহিউদ্দিন মোল্লা ইমামতি করেন। শুক্রবার এশা ও তারাবিহ নামাজ শেষে মসজিদের মুসল্লি কেছকি বাড়ির নেতা ঠিকাদার শফিকুর রহমান ইমাম সাহেবের অনুমতি নিয়ে নামাজের কিছু মাসাআলা নিয়ে মুসল্লিদের দৃষ্টি আকর্ষণ করেন। এতে মুসল্লিদের দু’পক্ষের মধ্যে কথা কাটাকাটি হয়। পরে মসজিদ দখলের জেরে নামাজ শেষে উভয় পক্ষ দেশীয় অস্ত্রসস্ত্র নিয়ে সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়ে।
এ ব্যাপারে মসজিদের ইমাম মাওলানা কাজী মহিউদ্দিন মোল্লা বলেন, ‘তারাবিহ নামাজ শেষে কেছকি বাড়ির নেতা ঠিকাদার শফিকুর রহমান দু-মিনিট কথা বলতে আমার অনুমতি চাইলে আমি তাকে অনুমতি দেই। তিনি তার বক্তৃতায় এ মসজিদের কোন মুসল্লিরই নামাজ হয় না বলে ফতোয়া দিলে উপস্থিত মুসল্লিরা এর প্রতিবাদ করে। পরে মসজিদ দখলের জেরে শফিকুর রহমানের বাড়ির লোকজন ক্ষিপ্ত হয়ে মসজিদ দখল করাসহ আমাদের বাড়ির লোকজনের উপর হামলা করে। এ সময় আমাদের বাড়ির পাঁচজন গুরুতর আহত হয়।
তবে মসজিদের মুসল্লি ঠিকাদার শফিকুর রহমান বলেন, ‘আমি তারাবিহ নামাজ শেষে নিয়ম অনুযায়ী অনুমতি নিয়ে নামাজের কিছু গুরত্বপূর্ণ মাসাআলার বিষয়ে ইমাম সাহেব ও মুসল্লিদের দৃষ্টি আকর্ষণ করি। নামাজের প্রয়োজনীয় তাসবিহ পাঠের জন্য রুকু, সেজদা ও দাঁড়ানোতে পর্যাপ্ত সময় দান ও কাতার সোজা করার গুরুত্ব নিয়ে এবং এসব বিষয়ে খেয়াল দিতে ইমাম সাহেবকে অনুরোধ করি। এতে মুসল্লীরা ক্ষিপ্ত হয়ে মসজিদের ভেতরেই আমাকে নাজেহাল করে। পরে তারা আমার ও আমার এক ভাইয়ের বিল্ডিং এ অতর্কিত হামলা চালিয়ে ভাংচুর করে। আমার ব্যবহারের গাড়ি ও দু’টি মোটরসাইকেল ভাংচুর করে। এ সময় আমাদের বাড়ির সাতজন গুরুতর আহত হয়।
স্থানীয় লোকজন জানায়, চরচারতলা উত্তরপাড়া জামে মসজিদের ইমাম মাওলানা মহিউদ্দিন মোল্লা স্থানীয় একটি আলিম মাদরাসার অধ্যক্ষ। মাদারাসাটির নামকরণ নিয়ে দু’পক্ষের মধ্যে দীর্ঘদিন যাবৎ বিরোধ চরম আকার ধারন করেছে। মসজিদের মাসাআলা সংক্রান্ত বিষয়টি একটি অজুহাত মাত্র।
আশুগঞ্জ থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) নাহিদ আহাম্মেদ জানান, সংঘর্ষ বাঁধার সাথে সাথেই পুলিশ উপস্থিত হয়ে সংঘর্ষ নিয়ন্ত্রণে আনে। সংঘর্ষ নিয়ন্ত্রণ আনতে পুলিশ প্রায় ৩৫ রাউন্ড রাবার বুলেট নিক্ষেপ করেছে। সংঘর্ষ সৃষ্টি করে শফিকুর রহমান পালিয়ে গেছেন। ঘটনার পর এলাকায় পুলিশ মোতায়েন রয়েছে। পুরো এলাকায় থমথমে অবস্থা বিরাজ করছে ।