• ঢাকা, বাংলাদেশ বৃহস্পতিবার, ১৪ অগাস্ট ২০২৫, ০১:৩১ অপরাহ্ন
  • [কনভাটার]
সর্বশেষ খবর
চাঁপাইনবাবগঞ্জে সীমান্তে ১৩ বাংলাদেশি পুশ-ইন, বিজিবির হাতে আটক বিশ্বম্ভরপুরের ফতেপুর ইউনিয়নে বিএনপির বিতর্কিত কমিটি বাতিলের দাবিতে বিক্ষোভ মিছিল ও মানববন্ধন তিস্তা নদীর পানি বিপৎসীমার ৭ সেন্টিমিটার ওপরে, নিম্নাঞ্চল প্লাবিত ইতালির লাম্পেদুসা উপকূলে নৌকাডুবিতে অন্তত ২০ শরণার্থী ও অভিবাসীর মৃত্যু শিক্ষাবিদ অধ্যাপক যতীন সরকারের মরদেহে সর্বস্তরের শ্রদ্ধা সাংবাদিক তুহিন হত্যার বিচারের দাবিতে নেত্রকোনা জেলা জাতীয়তাবাদী সাংবাদিক ফোরামের আয়োজনে মানববন্ধন কবিতা-মানুষ এক মহাকাব্য আটপাড়ায় জাতীয় ও আন্তর্জাতিক যুব দিবস- .২০২৫ পালিত মদনে গার্ডার ব্রীজ নির্মাণে অনিয়ম:ধসে গেল এ্যাপ্রোচ মদনে স্বামী স্ত্রীকে মারধর রক্তাক্ত জখম করায় থানায় মামলা
বিশেষ খবর
কলমাকান্দা ব্যবসায়ী মালিক সমিতির নতুন আহবায়ক কমিটি গঠন ফিল্মি স্টাইলে শিক্ষককে তুলে নিয়ে মাথা ফাটাল ছাত্রদল” শিরোনামে প্রকাশিত সংবাদের প্রতিবাদে সাংবাদিক সম্মেলন  অনুপ্রবেশকারী ও সুবিধাভোগীদের বিএনপিতে স্থান হবে না আনিসুজ্জামান বাবু নেত্রকোনায় জাতীয় পরিচয়পত্র (NID) সেবা নির্বাচন কমিশনের অধীনে রাখার দাবিতে মানব-বন্ধন ও সমাবেশ অনুষ্ঠিত ডিসেম্বর অথবা জানুয়ারিতে জাতীয় নির্বাচন আ.লীগের নিবন্ধন থাকবে কিনা, যা বললেন সিইসি নির্বাচন সংশ্লিষ্টদের পেশাদারত্বের সঙ্গে কাজ করতে হবে : সিইসি সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে কাজ করছে ইসি: সিইসি ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় ১০ বছর পর সম্মেলন ঘিরে বিএনপির ব্যাপক প্রস্তুতি ষড়যন্ত্র রুখে ঐক্যবদ্ধ থেকে নির্বাচন আদায় করতে হবে: রুমিন ফারহানা
রিপোর্টারঃ / ১৫৯ জন দেখেছেন
আপডেটঃ শনিবার, ৩ সেপ্টেম্বর, ২০২২

সম্রাটের জামিনে আমরা এত ক্ষুব্ধ কেন?

ইসমাইল হোসেন চৌধুরী ওরফে সম্রাট জামিন পেয়ে কারামুক্ত (পড়ুন হাসপাতাল) হয়েছেন। যে মানুষটিকে কারারুদ্ধ অবস্থায় ‘ভীষণ অসুস্থ হয়ে’ হাসপাতালে থাকতে হচ্ছিল, তিনি মুক্ত হয়ে রীতিমতো ঢাকা দাপিয়ে বেড়াচ্ছেন। কারামুক্ত হয়ে ধানমন্ডি ৩২ নম্বরে যাওয়ার সময় অনেক মোটরসাইকেলসহ তাঁর বিরাট ‘শোভাযাত্রা’-এর ফলে ছুটির দিনেও ঢাকার বড় একটি এলাকায় বেশ যানজট লেগে যায়।

এই দফা জামিনের আগেও একবার জামিন পেয়েছিলেন সম্রাট। ১১ মে অবৈধ সম্পদ অর্জনের অভিযোগে দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) মামলায় তিন শর্তে জামিন পান তিনি। কিন্তু দুদক হাইকোর্টে গেলে হাইকোর্ট সম্রাটের জামিন বাতিল করে দেন। এতে সম্রাট আর বেরোতে পারেননি।

ফৌজদারি বিচারব্যবস্থার দর্শনে বিখ্যাত ব্রিটিশ আইনজ্ঞ উইলিয়াম ব্ল্যাকস্টোন নির্দেশিত ব্ল্যাকস্টোনস ফরমুলেশন খুব গুরুত্বপূর্ণ স্থান দখল করে আছে। এতে বলা হয় একজন নিরপরাধ মানুষের শাস্তি পাওয়ার চেয়ে দশজন অপরাধী মুক্ত হয়ে যাওয়া ভালো। আমরা নিশ্চয়ই বুঝি এই বক্তব্যের গুরুত্ব।

একজন মানুষকে আইনের দৃষ্টিতে তখনই চূড়ান্তভাবে অপরাধী বলা হয়, যখন তিনি নিম্ন আদালতের বিচারিক প্রক্রিয়ায় সাজাপ্রাপ্ত হওয়ার পর যদি উচ্চ আদালতে যান এবং সেখানেও তাঁর সাজা বহাল থাকে। বহু ক্ষেত্রেই আমরা আমাদের সমাজের ভয়ংকর অপরাধীদের চিনি, তাদের অপরাধ সম্পর্কে স্পষ্টভাবে জানি। আমরা নিজেরাই অনেকে সেসব অপরাধের সাক্ষীও। তাই বিচারপ্রক্রিয়ার এতগুলো ধাপ আমাদের অনেককে হয়তো ক্ষুব্ধ করে। আমরা অনেকেই ভাবি এত নিশ্চিতভাবে জানা একটি বিষয়ও কেন এত দীর্ঘ আইনিপ্রক্রিয়া লাগবে।

তেমনি চাঁদাবাজি-টেন্ডারবাজি করা ও মাস্তান-সন্ত্রাসীদের নেতৃত্ব দেওয়ার অভিযোগ যে সম্রাটের বিরুদ্ধে তিনি আসলে মূল লোক বা ‘মালিক’ নন। এর ওপরে আছেন আরও অনেকে। সম্রাটকে আমরা আরও অনেক কাল জেলে দেখতে চেয়েছিলাম, কারণ আমরা জানি, শুধু সম্রাট নন, তাঁর মতো আরও অনেককে যাঁরা তৈরি করেছেন তাঁদের বিরুদ্ধে কিছু করার ক্ষমতা নেই আমাদের। তাঁরা থেকে যাবেন ধরাছোঁয়ার বাইরে। তাই সম্রাটকে ভুগতে দেখে আমাদের সেই আসল ক্ষোভ প্রশমিত হয় কিছুটা হলেও।

আমাদের এই মানসিকতার প্রভাব আমরা দেখি যখন আমরা হাতেনাতে কোনো চোর, ডাকাত কিংবা ছিনতাইকারীকে ধরে ফেলতে পারি। ভয়ংকরভাবে পিটিয়ে জখম তো করিই আমরা, অনেক সময় মেরেও ফেলি। ঠিক তেমনি কোনো চিহ্নিত অপরাধীকে দেশের আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী যদি ক্রসফায়ার, বন্দুকযুদ্ধ কিংবা এনকাউন্টারের নামে বিচারবহির্ভূত হত্যা করে ফেলে, তাহলে আমরা অনেকেই সেটাকেও সমর্থন করি।

কিন্তু একটা আধুনিক রাষ্ট্র বলতে আমরা বুঝি সেটা এমন একটি ব্যবস্থা, যেখানে একটি স্বাধীন বিচার বিভাগ থাকবে যা ভয়ংকরতম অপরাধে অভিযুক্ত মানুষকেও আত্মপক্ষ সমর্থনের জন্য, নিজেকে নির্দোষ প্রমাণের জন্য যথেষ্ট সুযোগ দেবে। কোনো অপরাধীর বিরুদ্ধে আমাদের হাতে থাকা প্রমাণ, এমনকি সমাজে প্রচলিত ধারণা বিচারিক প্রক্রিয়ায় সাহায্য করতে পারে নিশ্চয়ই, কিন্তু সেটা কোনোভাবেই কাউকে অপরাধী হিসাবে নিশ্চিতভাবে প্রমাণ করে না। এই বিচারিক পদ্ধতিকে যদি আমরা মেনে নিই, তাহলে সব ধাপ পেরিয়ে যেকোনো মানুষ অপরাধী সাব্যস্ত হয়ে অপরাধী হিসাবে নিশ্চিত হওয়ার আগে জেলে থাকা তার ওপর আপাতদৃষ্টিতে অন্যায় বলেই মনে হওয়ার কথা।

ফৌজদারি মামলাগুলোকে আবার জামিনযোগ্য এবং জামিন অযোগ্য ভিত্তিতে ভাগ করা হয়। খুব জরুরি কোনো বিষয় না থাকলে জামিনযোগ্য মামলাগুলোতে জামিন দেওয়াই রীতি। এমনকি জামিন অযোগ্য যেসব মামলা, সেসব মামলার ক্ষেত্রেও বিচারক চাইলে জামিন মঞ্জুর করতে পারেন। ফৌজদারি মামলায় জামিন দেওয়ার ক্ষেত্রে বিচারক এটা বিবেচনায় নেন অভিযুক্ত ব্যক্তি মুক্ত থাকলে মামলার বাদীর প্রতি কোন হুমকি তৈরি করবেন কি না, তিনি পালিয়ে যাবেন কি না কিংবা মামলার তদন্ত প্রভাবিত করবেন কি না ইত্যাদি। এমন সম্ভাবনা না থাকলে সাধারণত জামিন দিয়ে দেওয়া হয়। এ ছাড়া ব্যক্তির লিঙ্গ, বয়স, সামাজিক অবস্থান, শারীরিক অবস্থা এসব বিষয়ও জামিনের ক্ষেত্রে প্রভাব রাখে।

সাধারণভাবে আমাদের চাওয়া উচিত কোনো মানুষ বিচারিক প্রক্রিয়া শেষ হওয়ার আগপর্যন্ত যেন জেলে না থাকেন। একটি অবস্থা কল্পনা করা যাক। কোনো একটি ফৌজদারি মামলায় একজন গ্রেপ্তার হয়ে জেলে আছেন এবং জামিন পাননি বা বেশ পরে পেয়েছেন। এই মামলায় তিনি যদি দোষী সাব্যস্ত হন, তাহলে তাঁকে দেওয়া কারাদণ্ড তাঁর মামলা চলাকালে কারাবাসের সঙ্গে সমন্বয় করা হয়। কিন্তু কেউ যদি বিচারিক প্রক্রিয়ায় নির্দোষ প্রমাণিত হন, তাহলে সেই মানুষটি যত দিন জেলে ছিলেন, সে সময়ের ক্ষতি তাঁর জীবনে কি কোনোভাবে পূরণ হয়? আমরা এমন একটি দেশে দাঁড়িয়ে কথা বলছি, যেখানে ব্যক্তি পর্যায়ে এবং সরকারের দিক থেকে বিরোধীদের ওপর নানা নিপীড়নমূলক ভুয়া মামলার ভীষণ ছড়াছড়ি।


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এই বিষয়ের আরও খবর
August 2025
S S M T W T F
 12
3456789
10111213141516
17181920212223
24252627282930
31  

Categories