
ঢাকার অতি নিকটেই সাভারের আশুলিয়া এখানে বাংলাদেশের ৬৪ জেলার খেটে খাওয়া মানুষ তাদের জীবিকার তালিতে কর্মজীবন নিয়ে বসবাস করেন, গার্মেন্টস শ্রমিক থেকে শুরু করে বিভিন্ন পেশার মানুষ এখানে রয়েছেন।
২৯শে ডিসেম্বর ইয়ারপুর ইউনিয়নের উপনির্বাচনে শ্রমিক বান্ধব একজন স্বতন্ত্র প্রার্থীকে বেছে নিয়েছেন সাধারণ জনগণ। সাধারণ মানুষের মতো শ্রমিকরাও তাদের সাথে সামিল হয়েছে ভোটের মাধ্যমে, বুঝিয়ে দিয়েছে শ্রমিক বান্ধব একজন ইউপি চেয়ারম্যান চাই, তাদের মনের আশা পূর্ণ হয়েছে বলেও জানিয়েছেন সাধারণ খেটে খাওয়া মানুষরা।

সেই ইয়ারপুর ইউনিয়ন পরিষদ উপ-নির্বাচনে নৌকার প্রার্থী মোশাররফ হোসেন মুসাকে পরাজিত করে জয়লাভ করেছেন আনারস প্রতীকের স্বতন্ত্র প্রার্থী শামীম আহমেদ সুমন ভূঁইয়া।,এবং জয় লাভের পর আওয়ামী লীগের মন্তীর হাতে নৌকা উপহার তুলেে দেন।
বৃহস্পতিবার (২৯ ডিসেম্বর) রাতে ঘোষিত বেসরকারি ফলাফলে দেখা যায় আওয়ামী লীগের সমর্থিত নৌকা প্রতীকের প্রার্থী মোশাররফ হোসেন মুসার চেয়ে ৩ হাজার ৫২ ভোট বেশি পেয়ে প্রথমবারের মতো চেয়ারম্যান নির্বাচিত হয়েছেন শামীম আহমেদ সুমন ভূঁইয়া।
ইয়ারপুর ইউনিয়নের মোট ৪২টি ভোট কেন্দ্রের প্রাপ্ত ফলাফল অনুযায়ী মোশাররফ হোসেন মুসা নৌকা প্রতীকে পেয়েছেন ৮ হাজার ৫৬৮ ভোট ও আনারস প্রতীকে স্বতন্ত্র প্রার্থী শামীম আহমেদ সুমন ভূঁইয়া পেয়েছেন ১১ হাজার ৬২০ ভোট।
এ ইউনিয়নে চেয়ারম্যান পদে মোট ৭ জন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেছেন এদের বাকী পাঁচজন প্রার্থীই মোট প্রদত্ত ২৫ হাজার ৮৩৮ ভোটের এক অষ্টমাংশ ভোট না পাওয়ায় নিজেদের জামানত খুইয়েছেন।
তাদের মধ্যে ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ মনোনীত প্রার্থী মো. আব্দুর রহমান হাতপাখা প্রতীকে পেয়েছেন ৫৮০ ভোট, স্বতন্ত্র প্রার্থী আবুল হোসেন মোটরসাইকেল প্রতীকে পেয়েছেন ১১৪৫ ভোট, স্বতন্ত্র প্রার্থী হাজী দেলোয়ার হোসেন সরকার চশমা প্রতীকে পেয়েছেন ২৯০৮ ভোট, স্বতন্ত্র প্রার্থী আকবর হোসেন মৃধা অটোরিকশা প্রতীকে পেয়েছেন ৭১৯ ভোট এবং আরেক স্বতন্ত্র প্রার্থী বকুল ভূঁইয়া ঘোড়া প্রতীক নিয়ে পেয়েছেন ২৯৮ ভোট।
এর আগে সকাল ৮টা থেকে বিকেল ৪টা পর্যন্ত একটানা ৪২টি কেন্দ্রের ২৮৫টি ভোটকক্ষে ইলেকট্রনিক ভোটিং মেশিনে (ইভিএম) ভোটগ্রহণ অনুষ্ঠিত হয়।
জয়ের পর তাৎক্ষণিক প্রতিক্রিয়ায় শামীম আহমেদ সুমন ভূইয়া বলেন, আমার বাবা এই ইউনিয়নের তিনবারের নির্বাচিত চেয়ারম্যান ছিলেন আমার বাবার মৃত্যুর পর জনগনের অনুরোধে আমি চেয়ারম্যান প্রার্থী হয়েছি। এ বিজয় ইয়ারপুর ইউনিয়নের প্রতিটি জনগণের। আমার এই জয় আমি পুরো ইউনিয়নবাসীকে উৎসর্গ করলাম।
সাভার উপজেলা নির্বাচন কর্মকর্তা রফিকুল ইসলাম জানান, নির্বাচনের পরিবেশ সুষ্ঠু ও সুন্দর ছিল। দু একটি বিচ্ছিন্ন ঘটনা ছাড়া কোথাও তেমন কোন অপ্রিতিকর ঘটনার অভিযোগ পাইনি। নির্বাচন সুষ্ঠ হয়েছে।
এদিকে নৌকা মনোনীত প্রার্থীর পরাজয় প্রসঙ্গে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক স্থানীয় একাধিক আওয়ামী লীগ নেতা বলেন, প্রার্থী বাছাইয়ে ভুলের খেসারত দিতে হলো। গত তিনটি নির্বাচনে এই ইউনিয়নে বিপুল ভোটে জয়লাভ করেছিলেন এবারের বিজয়ী প্রার্থী সুমন ভূঁইয়ার পিতা প্রবীণ আওয়ামী লীগ নেতা সৈয়দ আহমেদ ভূঁইয়া। কিছুদিন পূর্বে তার মৃত্যুতে এই আসনটি শূন্য হবার পর উপ-নির্বাচনে আওয়ামী লীগ থেকে মনোনয়ন চেয়েছিলেন তার ছেলে থানা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক সুমন ভূঁইয়া। কিন্তু তাকে মনোনয়ন না দিয়ে অন্যজনকে মনোনয়ন দেয়াতেই আজকের এই ফলাফল বলে অভিমত তাদের।