রংপুর প্রতিনিধি;
উপদেষ্টা নাহিদ ইসলামের মতবিনিময় সভায় অনাকাঙ্খিত বিশৃঙ্খলা সৃষ্টির প্রতিবাদে রংপুরের সাতটি সংগঠনের পক্ষ থেকে অবহিতকরণ সংবাদ সম্মেলন হয়েছে। সাংবাদিক সুরক্ষা পরিষদের ব্যানারে মঙ্গলবার (১৫ অক্টোবর) প্রেসক্লাব মিলনায়তনে প্রেসক্লাবের সাধারণ সম্পাদক মেরিনা লাভলী লিখিত বক্তব্যে বলেন, গত ১২ অক্টোবর বিকেলে রংপুর সার্কিট হাউজ মিলনায়তনে তথ্য ও সম্প্রচার উপদেষ্টা রংপুরের সাতটি সাংবাদিক সংগঠনের মধ্য থেকে প্রত্যেক সংগঠনের একজন করে প্রতিনিধিকে নাম ও সংগঠনের পরিচয় দিয়ে কথা বলার জন্য বলেন। কিন্তু তার নির্দেশ অমান্য করে বিশৃংখলা সৃষ্টির উদ্দেশ্যে পতিত আওয়ামী লীগ সরকারের মদদ পুষ্ট ন্যাশনাল পিপলস পার্টি-এনপিপি’র রংপুর জেলা ও কেন্দ্রীয় কমিটির ভাইস চেয়ারম্যান এস এম জাকির হুসাইন রংপুর প্রেসক্লাবের বিরুদ্ধে মিথ্যা অভিযোগ উত্থাপন করেন। এস এম জাকির হুসাইন কোন সাংবাদিক সংগঠনের সদস্য নন, বিতর্কিত কর্মকাণ্ডের জন্য ইতোপূর্বে তিনি একটি সংগঠন থেকে বহিষ্কার হয়েছেন। কাজেই তথ্য ও সম্প্রচার উপদেষ্টার কথা মোতাবেক তিনি মতবিনিময় সভায় বক্তব্য দিতে পারেন না। তার পরই নিয়ম ভেঙ্গে আদর রহমান নামে আরেকজন ফটোসাংবাদিক প্রেসক্লাবের বিরুদ্ধে বিষোদগার শুরু করেন। তিনিও সাতটি সংগঠনের সদস্য নন। বক্তব্য শুরুর একপর্যায়ে সাংবাদিক নেতৃবৃন্দ আপত্তি জানালে পূর্বপরিকল্পনা মোতাবেক এস এম জাকির হুসাইনের নেতৃত্বে সাংবাদিক নামধারী রবিন চৌধুরী রাসেল, আতিকুর রহমান আতিক, এনামুল হক স্বাধীন, শিল্পী আক্তারসহ অজ্ঞাতরা সেখানে হট্টগোল শুরু করেন। হট্টগোল শুরু হলে তথ্য ও সম্প্রচার উপদেষ্টা মহোদয় বিরক্তবোধ থেকে মতবিনিময় সভার ঘটনাস্থল ত্যাগ করেন। পরে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টিকারী নামধারী ওই সাংবাদিকেরা ঘটনার ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে বিকৃত ভাবে ছড়িয়ে দিয়ে রংপুরের সাংবাদিক সমাজের ভাবমূর্তি ক্ষুন্ন করেন। তাদের পরিকল্পিত বিশৃঙ্খলার কারণে তথ্য উপদেষ্টার গুরুত্বপূর্ণ বক্তব্য থেকে রংপুরবাসী বঞ্ছিত হয়। পাশাপাশি রংপুরের সাংবাদিক সমাজ তাদের বক্তব্য মাননীয় তথ্য ও সম্প্রচার উপদেষ্টাকে জানাতে ব্যর্থ হন।
সভায় আরও জানানো হয়, এ ঘটনার প্রেক্ষিতে রংপুরের সাতটি সাংবাদিক সংগঠনের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকসহ অন্যান্য সদস্যবৃন্দকে নিয়ে রংপুর প্রেসক্লাবে সোমবার (১৪ অক্টোবর) মতবিনিময় সভা অনুষ্ঠিত হয়। মতবিনিময় সভায় সর্বসম্মতক্রমে বিশৃঙ্খলাকারী ওই সাংবাদিকদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেয়ার দাবি জানানো হয়। রংপুরের সাতটি সাংবাদিক সংগঠনের নেতৃবৃন্দ ও সাংবাদিক সমাজের পক্ষ থেকে অনাকাঙ্খিত ওই ঘটনার জন্য তথ্য ও সম্প্রচার উপদেষ্টার কাছে দুঃখ প্রকাশ করেন। এছাড়া সাতটি সাংবাদিক সংগঠনের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকের সমন্বয়ে ‘সাংবাদিক স্বার্থ সুরক্ষা পরিষদ’ নামে একটি কমিটি গঠন করা হয়। ওই ঘটনার সুষ্ঠু তদন্তের জন্য সাংবাদিক স্বার্থ সুরক্ষা পরিষদের পক্ষ থেকে একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়। এ সময় তথ্য ও সম্প্রচার উপদেষ্টা জনাব মোঃ নাহিদ ইসলাম এর মতবিনিময় সভায় অনাকাঙ্খিত ঘটনার জন্য দুঃখ প্রকাশ করা হয় এবং বিশৃঙ্খলা সৃষ্টিকারীদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণের দাবি জানানো হয়। সেই সাথে রংপুরের ৭টি সংবাদিক সংগঠনের নেতৃবৃন্দ সাংবাদিক নামধারী এস এম জাকির হুসাইন, রবিন চৌধুরী রাসেল, শরীফা বেগম শিউলী, আতিকুর রহমান আতিক, এনামুল হক স্বাধীন, শিল্পী আক্তারকে অবাঞ্ছিত ঘোষণা করেন।
সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন, প্রেসক্লাব রংপুরের সভাপতি মোনাব্বর হোসেন মনা, সাধারণ সম্পাদক মেরিনা লাভলী, রিপোর্টার্স ক্লাব রংপুরের সাধারণ সম্পাদক মিজানুর রহমান লুলু, সিটি প্রেসক্লাবের সভাপতি স্বপন চৌধুরী, সাধারণ সম্পাদক হুমায়ুন কবির মানিক, রংপুর রিপোর্টার্স ক্লাবের সভাপতি নজরুল ইসলাম রাজু, মাহিগঞ্জ প্রেসক্লাবের সভাপতি বাবলু নাগ, বাংলাদেশ ফটো জার্নালিস্ট এসোসিয়েশন রংপুর কমিটির সাধারণ সম্পাদক আসাদুজ্জামান আফজাল, টেলিভিশন ক্যামেরা জার্নালিস্ট এসোসিয়েশন-টিসিএ রংপুরের সভাপতি শাহ নেওয়াজ জনি, সাধারণ সম্পাদক এহসানুল হক সুমন, বাংলাদেশ প্রেসক্লাব রংপুর বিভাগীর কমিটির মাহফুজ আলম প্রিন্স, মাহিগঞ্জ প্রেসক্লাবের যুগ্ম সম্পাদক ইয়াসিন আলীসহ আরো অনেকে।