আন্তর্জাতিক ডেস্ক: মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট নির্বাচন অনুষ্ঠিত হতে আর কয়েক সপ্তাহ বাকি। এরমধ্যে পেনসিলভানিয়ার হ্যারিসবার্গে রিপাবলিকান প্রার্থী ডোনাল্ড ট্রাম্পের পক্ষে এক নির্বাচনী প্রচারণার সময় ধনকুবের ইলন মাস্ক আগামী ৫ নভেম্বর পর্যন্ত প্রতিদিন ১০ লাখ মার্কিন ডলার পুরস্কার দেওয়ার ঘোষণা দিয়েছেন।

টেসলার পলিটিক্যাল অ্যাকশন গ্রুপ ‘আমেরিকা প্যাক’ এর আয়োজিত গত শনিবারের সেই কর্মসূচিতে ইলন মাস্ক একজনকে এমন উপহার দিয়েছেনও।

এনিয়ে পেনসিলভানিয়ার ডেমোক্র্যাটিক গভর্নর জোশ শাপিরো টেসলার এনবিসির এক অনুষ্ঠানে বলেন, নিবন্ধিত ভোটারদের টাকা দেওয়ার মাস্কের ঘোষণা খুবই উদ্বেগের ব্যাপার। এটা এমন একটা বিষয় যেদিকে আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী নজর দিতে পারে।

মার্কিন নির্বাচনে রিপাবলিক প্রার্থী সাবেক প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প এবং ডেমোক্র্যাট পার্টি প্রার্থী বর্তমান ভাইস প্রেসিডেন্ট কমলা হ্যারিসের মধ্যে হাড্ডাহাড্ডি লড়াইয়ের মধ্যে অর্থ পুরস্কারের এই ঘোষণা দিলেন ইলন মাস্ক।

ডয়চে ভেলে বলছে, পেনসিলভানিয়া জয় করা ট্রাম্প এবং হ্যারিস উভয়ের জন্যই জরুরি।

মার্কিন নির্বাচনে যে রাজ্যগুলো প্রেসিডেন্ট হিসেবে কে বিজয়ী হবেন তা নির্ধারণে বড় ভূমিকা রাখবে সেগুলোতে ভোটারদের নিবন্ধিত হতে উদ্বুদ্ধ করতে প্রচারণা চালাচ্ছে মাস্কের আমেরিকা পিএসি। তবে প্রচারণার লক্ষ্য অর্জনে হিমশিম খাচ্ছে উদ্যোগটি।

নিবন্ধিত ভোটার জন ড্রেহার শুক্রবার লটারির মাধ্যমে দশ লাখ মার্কিন ডলার জয় করেন। মাস্ক তার হাতে এই অর্থ তুলে দেওয়ার সময় জানান যে, এরকম কিছু যে পাবেন সেই সম্পর্কে কোনো ধারণাই ছিল না ড্রেহারের। ফলে যেকেউ এই অর্থ জয় করতে পারেন বলেও জানিয়েছেন মাস্ক।

আমেরিকা পিএসির এক্স অ্যাকাউন্টে প্রকাশিত এক ঘোষণা থেকে জানা গেছে, পিটসবার্গে রোববার এক নারীর হাতে ১০ লাখ মার্কিন ডলার তুলে দিয়েছেন মাস্ক। মাস্ক তার অনলাইন প্রচারণায় স্বাক্ষরকারীদের মধ্যে এই অর্থ প্রদান করছেন।

প্রচারণায় লেখা হয়েছে, ‘প্রথম এবং দ্বিতীয় সংশোধনী বাকস্বাধীনতার নিশ্চয়তা এবং অস্ত্র বহনের অধিকার দেয়। আমি নিচে স্বাক্ষর করার মাধ্যমে প্রথম এবং দ্বিতীয় সংশোধনীর প্রতি আমার সমর্থন ব্যক্ত করছি।’

আমেরিকা পিএসির ওয়েবসাইটে প্রকাশিত তথ্য অনুযায়ী, দশ লাখ মার্কিন ডলার উপহার পাওয়ার উপযুক্ত হতে পিটিশনে স্বাক্ষরকারীকে একজন নিবন্ধিত ভোটার হতে হবে, যিনি অ্যারিজোনা, জর্জিয়া, মিশিগান, নেভাদা, উত্তর ক্যারোলিনা, পেনসিলভানিয়া বা উইসকনসিন রাজ্যের বাসিন্দা।

পাশাপাশি পেনসিলভানিয়া রাজ্যে নিবন্ধিত কোনো ভোটার যদি পিটিশনে স্বাক্ষর করেন তাহলে তাকে ১০০ মার্কিন ডলার দেওয়া হচ্ছে এবং একই রাজ্যে নিবন্ধিত আরেকজন ভোটারকে পিটিশনটি স্বাক্ষর করতে পাঠালেও ১০০ মার্কিন ডলার দেওয়া হচ্ছে।

তবে ভোটারদের এভাবে উপহার দেওয়া নিয়ে আগামী দিনগুলোতে আইনি জটিলতা সৃষ্টি হতে পারে।

মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে একজন ভোটারকে ভোট দিতে বা নিবন্ধিত হতে প্ররোচিত করতে অর্থ প্রদান অপরাধ হিসেবে বিবেচিত হয়। মার্কিন বিচার বিভাগের নির্বাচন অপরাধ সংক্রান্ত নথি অনুযায়ী, ভোটারকে শুধু নগদ অর্থ দেওয়াই নয়, আর্থিকভাবে মূল্যায়ন করা যায় যেমন লিকার বা লটারিও নিষেধাজ্ঞার আওতায় রয়েছে।

ফোর্বসের বিবেচনায় বিশ্বের সবচেয়ে বড় ধনী মাস্ক এখন অবধি আমেরিকা পিএসির পেছনে ৭৫ মিলিয়ন মার্কিন ডলার খরচ করেছেন। ট্রাম্পে আবারো হোয়াইট হাউসে পাঠানোর চেষ্টায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করছে এই উদ্যোগ।