সুনামগঞ্জের নবগঠিত মধ্যনগর উপজেলা যুবলীগের সাধারন সম্পাদক বিদ্যুৎ কান্তি সরকারের বিরুদ্ধে সরকারি টিউবয়েল,পিআইসি বানিজ্য সহ নানান অভিযোগ উঠেছে। টিউবওয়েল ও হওরের বেরি বাঁধের কাজ দেওয়ার কথা বলে একাধিক ব্যক্তির কাছ থেকে টাকা নেওয়ার অভিযোগ উঠেছে।
গত প্রায় ৪ বছর আগে নজমত আলী নামে ভূক্তভোগী ওই কৃষক সরকারি একটি টিউবয়েল পাওয়ার আসায় মহাজনের কাছ থেকে সুদে টাকা এনে সাড়ে ৮ হাজার টাকা ওই যুবলীগ নেতার হাতে তুলে দিয়েও এখনো পর্যন্ত তিনি টাকা বা টিওবয়েল কোনোটাই না পেয়ে দিশেহারা হয়ে পড়েছেন।
ভূক্তভোগী দরিদ্র কৃষক নজমত আলী উপজেলার চামরদানী ইউনিয়নের চামরদানী গ্রামের বাসিন্দা।
কৃষক নজমত আলী ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন,আমি একজন দরিদ্র কৃষক। আমিসহ আমার প্রতিবেশী বেশ কয়েকটি পরিবারের লোকজন টিউবওয়েলের বিশুদ্ধ পানির অভাবে দীর্ঘদিন যাবত খুবই কষ্টের মধ্যে দিন কাটাচ্ছি। এ অবস্থায় আমাকে সরকারি একটি টিউবওয়েল পাইয়ে দেওয়ার কথা বলে গত প্রায় ৪ বছর আগে যুবলীগ নেতা বিদ্যুৎ বাবু আমার কাছ থেকে সাড়ে ৮ হাজার টাকা নেন। তখন আমার কাছে কোনো টাকা না থাকায় আমি ওই টাকা স্থানীয় এক মহাজনের কাছ থেকে সুদে এনে তাঁকে দিয়েছি। কিন্তু আমি তখন থেকেই ওই টাকার সুদ দিতে দিতে একেবারে শেষ হয়ে যাচ্ছি। তবুও বিদ্যুৎ বাবু আমাকে টিউবওয়েল বা টাকা কোনটাই এখনোও দিচ্ছেন না।
তিনি আরো বলেন, বিদ্যুৎ বাবু এলাকার প্রভাবশালী নেতা হওয়ায় তার এসব অন্যায়ের বিরুদ্ধে প্রকাশ্যে কেউ কথা বলার সাহস পায়না।
একই ধরনের মন্তব্য করেন মধ্যনগর উপজেলা সদরের বাসিন্দা ও ভুক্তভোগী দেবল কিরণ তালুকদার।
তিনি বলেন, গত প্রায় ৫-৬ মাস আগে উপজেলা যুবলীগের সাধারন সম্পাদক বিদ্যুৎ কান্তি সরকার আমাকেও একটি সরকারি গভীর নলকুপ পাইয়ে দেওয়ার কথা বলে তিনি আমার কাছ থেকেও ১১ হাজার টাকা নিয়েছেন। তবে নলকূপ কবে যে পাই, তা একমাত্র ঈশ্বরই জানেন।
অভিযুক্ত মধ্যনগর উপজেলা যুবলীগের সাধারন সম্পাদক বিদ্যুৎ কান্তি সরকার বলেন, নানা জঠিলতার কারনে আমি নজমত আলীকে একটি টিউবওয়েল পাইয়ে দিতে পারিনি। তবে তিনি আমার কাছে আসলে আমি আজই তার টাকা ফিরিয়ে দেব। আমি বিএনপি কোন সময় করিনি, পিআইসি বানিজ্য সাথে আমি জরিত নই, আমার বিরুদ্ধে আনা অভিযোগ সত্য নয়। মধ্যনগর উপজেলা যুবলীগের সহ সভাপতি হুমায়ুন কবির বলেন, বিদ্যুৎ কান্তি সরকার বিএনপি সরকারের আমলে মদন মহন কলেজের ছাত্রদলের কমিটিতে সম্পাদক মন্ডলীতে ছিল। সে স্থানীয় এমপির হাতধরে আওয়ামীলীগের রাজনীতি করে পিআইসি বানিজ্য, টেন্ডার বাজী, সাধারণ মানুষের টিউবওয়েলে কথা বলে টাকা নিয়েছে, চামরদানী কালী মন্দিরের ৩ লক্ষ টাকা, দূর্গাপূজার প্রতিটি পূজা মণ্ডপ থেকে ৮ হাজার করে টাকা মেরে দিয়েছে। এইসব হাইব্রিড নেতাদের জন্য দলের ভাবমূর্তি নষ্ট হচ্ছে। আমি তাকে দল থেকে বহিষ্কারের দাবি জানাচ্ছি।
এ বিষয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো.নাহিদ হাসান খান বলেন, আমার কাছে এ ধরনের কোনো লিখিত অভিযোগ আসেনি। তবে এ ব্যাপারে অভিযোগ পেলে তদন্ত করে আইন গত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে.