
শহিদুল ইসলাম জি এম মিঠন, সিনিয়র রিপোর্টারঃ
নওগাঁয় মেয়ের বাড়িঘর ও সম্পত্তি পাওয়ার অব এ্যাটনীর বলে নিজ নামে খরিজ করে দখল করে নেয়ার অভিযোগ করা হয়েছে। পরবর্তীতে ঐ বাড়ি থেকে মারপিট করে মেয়ে ও মেয়ের সন্তানদের বের করে দেয়ার অভিযোগ এনে সংবাদ সম্মেলন করেছেন মেয়ে মাসুদা খানম। সোমবার দুপুরে মাসুদা খানম নওগাঁ জেলা প্রেসক্লাব মিলনায়তনে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এমন অভিযোগ করেন। এসময় লিখিত বক্তব্যে মাসুদা খানম বলেন, তিনি দীর্ঘদিন ধরে সিঙ্গাপুরে বসবাস করে আসছেন। এরই এক পর্যায়ে নওগাঁ শহরের পার-নওগাঁ সরদারপাড়া এলাকায় পিতা আব্দুল মজিদ সরকারের নিকট থেকে দলিলমুলে প্রাপ্ত সম্পত্তির উপর একটি বাড়ি তৈরী করেন। যেহেতু তিনি সিঙ্গাপুরে থাকেন সেহেতু উক্ত বাড়িঘর তত্ত্বাবধান করার জন্য আব্দুল মজিদ সরকার কন্যা (মেয়ের) নিকট থেকে পাওয়ার অব এ্যাটর্নী গ্রহন করেন। এই বলে পরবর্তীতে মাসুদা খানমের পিতা উক্ত সম্পত্তি নিজ নামে খারিজ করে নেন এবং পরবর্তীতে তা বিক্রিও করেন। এ কথা তার মেয়ে জানতেন না। যথারীতি সিঙ্গাপুর থেকে এসে ৩সন্তান নিয়ে ঐ বাড়িতে বসবাস শুরু করেন। তখন তার পিতা আব্দুল মজিদ সরকার তাকে বাড়ি থেকে বের করে দেয়ার প্রক্রিয়া শুরু করেন। এক পর্যায়ে গত ২৬ এপ্রিল দুপুর ১২টায় আব্দুল মজিদ সরকার ওরফে হাসু, তার তৃতীয় স্ত্রী মোছাঃ মেরিনা খাতুন সহ ১০/১৫ জনের একটি দল ঐ বাড়ির তালা ভেঙ্গে জোর পূর্বক বাড়িতে প্রবেশ করে। এ সময় মাসুদা খাতুন পাশের বাড়িতে পানি আনতে গিয়েছিলেন। তার বড় ছেলে মাসুক ইসলাম ওরফে আলিফ ঘরে পড়াশোনা করছিল। তাদের বাধা দিলে হামলাকারীরা বাঁশের লাঠি, লোহার রড ও ধারালো চাকু দিয়ে আলিফের উপর আক্রমন চালায়। এতে মারাত্মক ভাবে আহত হয় সে। তাদের বাড়ি থেকে বের করে দিয়ে পুরো বাড়ি দখল করে নেয়। আহত অবস্থায় আলিফকে নওগাঁ সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। ঘরের মধ্যে নগদ ৩ লাখ টাকা, ২২ হাজার টাকা মূল্যের দুটি মোবাইল ফোন, ১ লাখ ৫৫ হাজার টাকা মূল্যের ১টি ডেস্কটপ কম্পিউটার, ১ লাখ ৩৫ হাজার টাকা মূল্যের ১টি ল্যাপটপ, ৫ লাখ ৭৫ টাকা মূল্যের স্বর্নালঙ্কার, ১২টি পাসপোর্ট, ব্যাঙ্কের ক্রেডিটকার্ড, ডেবিটকার্ড সব রয়েছে। সেগুলো তাকে ফেরত দেয়া হয়নি। কোন রকমে অন্য একটি ভাড়া বাসায় উঠেছেন। এ ব্যাপারে নওগাঁ সদর মডেল থানায় একটি মামলা দায়ের করা হয়েছে। নওগাঁ সদর মডেল থানা মামলা নম্বর ৫৫, তারিখ: ২৮-০৪-২০২৫ ধারা ১৪৩/৪৪৮/৩২৩/৩২৪/৩২৫/৩০৭/৩৮০/৫০৬ (২) /১১৪ পেনাল কোড। সংবাদ সম্মেলনে অভিযোগ করা হয় পুলিশ প্রশাসন এ ব্যাপারে কোন পদক্ষেপ গ্রহন করেনি। এমনকি নগদ টাকা, ব্যাংক ক্রেডিট কার্ড, ডেবিটকার্ড, স্বর্নালঙ্কার, কম্পিউটার, ল্যাপটপ, পাসপোর্ট কিছুই উদ্ধার করেনি। আসামী আটকের কোন উদ্যোগ নেয়া হয়নি বরং আসামীরা তাকে হুমকি প্রদর্শন করছে। এতে তিনি আতঙ্কে রয়েছেন। এসময় তিনি পুলিশ প্রশাসনের নিকট আসামীদের গ্রেফতার করার জন্য আবেদন জানান। মেয়ের বাবা আব্দুল মজিদের সাথে মোবাইল ফোনে যোগাযোগ করা সম্ভব হয়নি জন্য বক্তব্য নেওয়াও সম্ভব হয়নি। তবে তার চাচা আলী হাসান সরকার জুয়েল জানান, ভাতিজি মাসুদা খাতুন অন্য একজন বাবার রেখে যাওয়া মেয়ে। তার অত্যাচারে পরিবারের সকলে অতিষ্ঠ। বাড়ির মালিকানা, বাড়ি থেকে বের করে দেয়ার ঘটনা সত্য নয়।