এম এম গউছ মাধবপুর (হবিগঞ্জ) প্রতিনিধি:
হবিগঞ্জের মাধবপুর উপজেলায় মাদকের বিরুদ্ধে পুলিশের কঠোর অবস্থানের ফলে চলতি বছরের (২০২৫) প্রথম চার মাসে (জানুয়ারি-এপ্রিল) মাধবপুর থানা পুলিশের হাতে গ্রেফতার হয়েছে ৫২ জন মাদক ব্যবসায়ী। এ সময়ে উদ্ধার হয়েছে বিপুল পরিমাণ মাদকদ্রব্য, যার মধ্যে রয়েছে ৩০৭ কেজি ৫০০ গ্রাম গাঁজা, ১৪২ পিস ইয়াবা, ৭৭ বোতল ফেন্সিডিল ও ২৬ বোতল ভারতীয় মদ। এসব ঘটনায় থানায় দায়ের হয়েছে মোট ৩৩টি মামলা।জানা যায়, গত বছরের একই সময়ের তুলনায় এবার গাঁজা উদ্ধারের পরিমাণ প্রায় দ্বিগুণ। স্থানীয়দের মতে, জনসচেতনতা বৃদ্ধির কারণে মাদক উদ্ধার ও অভিযান বৃদ্ধির পেছনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখছে।নোয়াপাড়া ইউনিয়নের ৯ নম্বর ওয়ার্ডের মেম্বার নূরুল হাসান তপু জানান, ছাতিয়াইন রেলওয়ে স্টেশনের পূর্ব পাশে চা বাগানে একসময় প্রতিদিন মাদকের আসর বসতো। তবে পুলিশি তৎপরতার ফলে এখন সেই এলাকা অনেকটাই মাদকমুক্ত। তেলিয়াপাড়া চা বাগানের পঞ্চায়েত সভাপতি খোকন তাঁতিও জানান, আগে মাদকসেবীদের যন্ত্রণা অসহনীয় ছিল। কিছুদিন আগে মাধবপুর থানার ওসি আব্দুল্লাহ আল মামুনের উদ্যোগে অনুষ্ঠিত উঠান বৈঠকের পর স্থানীয় বাসিন্দাদের সহযোগিতায় পুলিশ ও বিজিবি মাদক নির্মূলে সক্রিয়ভাবে কাজ করছে।শাজাহানপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মো. পারভেজ হোসেন চৌধুরী বলেন, পুলিশ ও বিজিবি’র যৌথ অভিযানে বর্তমানে মাদক ব্যবসায়ী ও সেবীদের আনাগোনা অনেক কমে গেছে। তবে এখনও ফাঁড়ি রাস্তাগুলিতে নজরদারি বাড়ানো প্রয়োজন। চৌমুহনী ইউনিয়নের চেয়ারম্যান মাহবুবুর রহমান সোহাগ জানান, গত বছরের আগস্টের পরে কিছুটা শিথিলতা দেখা দিলেও, সাম্প্রতিক মাসগুলোতে ওসি’র উদ্যোগে উঠান বৈঠক এবং আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সক্রিয় ভূমিকার কারণে মাদকের উৎপাত অনেক কমে গেছে। মাধবপুর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) আব্দুল্লাহ আল মামুন বলেন, “আমি দায়িত্ব নেওয়ার পর থেকেই মাদক নির্মূলকে সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার দিচ্ছি। হবিগঞ্জের পুলিশ সুপারের নির্দেশনায় মাদকসহ বিভিন্ন সামাজিক অপরাধ দমনে আমরা ব্যাপক জনসচেতনতা বৃদ্ধির কার্যক্রম হাতে নিয়েছি। ইতিমধ্যে তেলিয়াপাড়া চা বাগান, হরষপুর রেলওয়ে স্টেশন, মৌজপুর বাজারসহ ২০টিরও বেশি স্থানে উঠান বৈঠক করেছি। প্রতিটি বৈঠকে স্থানীয়দের সঙ্গে সরাসরি যোগাযোগ রাখতে আমার মোবাইল নম্বরও দিয়েছি। যতদিন আমি এখানে দায়িত্বে আছি, মাদক ব্যবসায়ীদের কোনো ছাড় দেওয়া হবে না। তারা মাদক ছেড়ে দিবে, না হয় এলাকা।”
জনসচেতনতা, পুলিশি তৎপরতা এবং স্থানীয় জনগণের সহযোগিতায় মাধবপুরে মাদকের বিরুদ্ধে এই অভিযানে আশাব্যঞ্জক অগ্রগতি দেখা যাচ্ছে বলে মনে করছেন সুশীল সমাজের নেতৃবৃন্দরা।