আকিকুর রহমান রুমন:-
হবিগঞ্জ জেলার এক প্রবাসীর মৃত্যুর ১৪দিন পর লাশ আসলো নিজ দেশে।সুখ দেখার পূর্বেই মালয়েশিয়া থেকে বাড়িতে ফিরলো প্রবাসী মহিবুর’র(৩০)লাশ।পরিবারের স্বপ্ন পূরণ করা হলোনা প্রবাসী মহিবুর খা’র।মা,স্ত্রী ও সন্তানের স্বপ্ন স্বপ্নই রয়ে গেলো।সবে মাত্র ঋণ পরিশোধ করে সুখের মুখ দেখা শুরু হয়েছিলো নিহত মহিবুর ও তার পরিবারের।এই সুখ শুরু হতে না হতেই না ফেরার দেশে পারি জমিয়েছেন মহিবুর খা।নিহত প্রবাসী মহিবুর খা হবিগঞ্জ জেলার বাসিন্দা এবং তিনি মালয়েশিয়া প্রবাসী ছিলেন।তার পরিবারে ৫ বছরের অবুঝ সন্তান তাসকিয়া আর কাউকে বাবা বলে ডাকবে না।গত ১৫মে (বৃহস্পতিবার)হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে মারা যান মহিবুর খা।১৪দিন পর আজ ৩০মে (শুক্রবার)সকালে শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমান বন্দরে মালয়েশিয়া থেকে লাশ আসে।সেখান থেকে আত্মীয় স্বজন লাশটি রিসিভ করে বাড়ির উদ্যেশে রওয়ানা দিয়েছেন।হবিগঞ্জ জেলার বানিয়াচংয়ের পার্শ্ববর্তী গ্রাম আজমিরীগঞ্জ উপজেলার শিবপাশা গ্রামের বাসিন্দা প্রবাসে নিহত এই মহিবুর খা।এদিকে ১৪দিন পর লাশটি দেশে এসেছে এমন খবরে লাশটি এক নজর দেখার অপেক্ষায় দূর দূরান্ত থেকে আত্বীয় স্বজন সহকারে গ্রামবাসী পরিবারের লোকজনের সাথে অপেক্ষার প্রহর গুনছেন।এছাড়াও সবকিছু প্রস্তুত করে রাখা হয়েছে দাফন কাজ সম্পন্ন করার।এবং রাত ৮ঘটিকায় জানাজা নামাজ অনুষ্ঠিত হওয়ার বিষয়টি মাইকিংএর মাধ্যমে জানিয়ে দিয়ে দাওয়াত করা হয়েছে বলে জানান গ্রামবাসী।রাতেই মহিবুর খা’র জানাজা নামাজ শেষে পারিবারিক কবরস্থানে দাফন করার কথা রয়েছে(হবে)।মৃত্যুর খবর শুনার পর থেকে কাঁদতে কাঁদতে এতোদিনে চোখের পানি যেন শেষ হয়ে গেছে মা ও স্ত্রী জেসমিন আক্তারের।
স্ত্রী জেসমিন অবুঝ শিশুকে কী দিয়ে প্রবোধ দিবেন বুঝে উঠতে পারছেন না।সন্তানকে কী প্রবোধ দিবেন তিনি?নিজেই মাথা গোঁজার ঠাই নিয়ে দিশেহারা হয়ে পড়ছেন এবংচোখে মুখে দেখছেন অন্ধকার।দেশে থাকতে মহিবুর পেশায় গাড়ি চালক(সিএনজি অটোরিকশা)শ্রমিকের কাজ করতো। আজমিরীগঞ্জ উপজেলার শিবপাশা গ্রামের বাইন্নে বাড়ির তাজুল খা’র ছেলে মহিবুর খাঁ।পিতা তাজুল খাঁ আরেকটি বিয়ে করে গ্রাম ছেড়ে অন্যত্র চলে যান।আর এদিকে মা ও তার একমাত্র বোনকে নিয়ে নিজ গ্রামের মামার বাড়িতে আশ্রয় নেয় মহিবুর খা।
একমাত্র বোনকে বিয়ে দিয়ে নিজেও ৭বছর আগে বিয়ে করে সংসারী হন। অভাবের কারনে মামা তফুর আলীর বাড়িতে আশ্রয় নেয়া মহিবুর অনেক কষ্টে ঋণ করে মালয়েশিয়ায় পাড়ি জমান।সেখানে একটি ভালো কোম্পানীতে ভালো বেতনে চাকরী করে দেশের ঋণ ও শোধ করেন।
তফুর আলী জানান, অভাবের সংসারে মা লাফু আক্তার ও স্ত্রী জেসমিন আক্তারসহ ৩ বছরের এক অবুঝ সন্তান তাসকিয়ার মুখে হাসি ফুটাতে দুই বছর পূর্বে মালয়েশিয়ায় পাড়ি জমিয়েছিলেন মহিবুর খা।ধীরে ধীরে তার সংসারে অভাব দূর হয়।অভাব শেষে সুখের মুখও দেখার পালা এসেছিল শুধু পরিবারের।কিন্তু তার আগেই আপনজনদের কাঁদিয়ে মহিবুর চলে গেলো না ফেরার দেশে।এদিকে মহিবুর খা’র মৃত্যুর খবরের পর থেকে পরিবারে নেমে আসে অমানিশার অন্ধকার।