নাদিম হোসেন চাঁপাইনবাবগঞ্জ প্রতিনিধি
সোনামসজিদ স্থলবন্দরের কয়লাবাড়ি ট্রাকস্ট্যান্ডে ট্রাক প্রতি অতিরিক্ত অর্থ আদায় ও অবৈধ চাঁদাবাজির বিরুদ্ধে সরব হয়েছেন ব্যবসায়ী, সিঅ্যান্ডএফ এজেন্ট, শ্রমিক ও পরিবহন সংশ্লিষ্টরা। এ প্রেক্ষিতে রোববার বিকেলে বন্দরের আমদানি-রপ্তানিকারক গ্রুপের সম্মেলন কক্ষে এক জরুরি প্রতিবাদ সভা অনুষ্ঠিত হয়।সভায় অংশ নেয় — আমদানি-রপ্তানিকারক গ্রুপ, পানামা পোর্ট লিংক লিমিটেড, সিঅ্যান্ডএফ এজেন্ট অ্যাসোসিয়েশন, শ্রমিক সমন্বয় কমিটি ও সোনামসজিদ ট্রাক মালিক সমিতি। তারা একসঙ্গে এই চাঁদাবাজির বিরুদ্ধে অবস্থান নেন।সভায় সভাপতিত্ব করেন আমদানি ও রপ্তানিকারক গ্রুপের সভাপতি আলহাজ্ব একরামুল হক। এ সময় উপস্থিত ছিলেন সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক আরিফ উদ্দিন ইতি, সিনিয়র সহ-সভাপতি বাবুল হাসনাত দুরুল, কোষাধ্যক্ষ নাজিমুল হক, দপ্তর সম্পাদক মাসুম বিল্লাহ, পানামা পোর্ট লিংকের ম্যানেজার মাইনুল ইসলাম ও রিপন আলী, সিঅ্যান্ডএফ অ্যাসোসিয়েশনের সদস্য সচিব রুহুল আমিন, সদস্য শাহনেওয়াজ খান সিনা ও মেসবাউল হক, শ্রমিক সমন্বয় কমিটির আহ্বায়ক জমির উদ্দিন, সদস্য আতাউর রহমান, ইমরান আলী ও তরিকুল ইসলাম মেম্বার। আরও উপস্থিত ছিলেন ট্রাক মালিক সমিতির সভাপতি আলমগীর কবির ও সাধারণ সম্পাদক জাহাঙ্গীর কবির।অভিযোগের মূল বিষয় বক্তারা অভিযোগ করেন, চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলা ট্রাক, ট্যাংকলরি ও কাভার্ডভ্যান শ্রমিক ইউনিয়ন বন্দরের ট্রাকস্ট্যান্ডে প্রতি ট্রাক থেকে পূর্বনির্ধারিত ৬০ টাকার পরিবর্তে ২০০ থেকে ২৫০ টাকা পর্যন্ত চাঁদা আদায় করছে। এমনকি যেসব ট্রাক স্ট্যান্ডের কোনও সেবা গ্রহণ না করেই কেবল বন্দর ব্যবহার করছে, তাদের কাছ থেকেও লাল পতাকা দিয়ে থামিয়ে জোরপূর্বক ১৬০ থেকে ২০০ টাকা চাঁদা আদায় করা হচ্ছে।বক্তারা আরও বলেন, কেউ চাঁদা না দিলে বন্দর থেকে বের হয়ে যাওয়ার পথে মহাসড়কের দারিয়াপুর এলাকায় তাদের ট্রাক জোর করে আটকে হয়রানি করা হয়।রাজনৈতিক সংশ্লিষ্টতা ও পদত্যাগ দাবি সভায় বক্তারা অভিযোগ করেন, আওয়ামী লীগের প্রভাবশালী কয়েকজন নেতা অতীতে যেমন চাঁদাবাজিতে জড়িত ছিলেন, এখনো তারা একই কাজ করছেন। তাঁরা সরাসরি নাম উল্লেখ করে দাবি করেন—চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলা ট্রাক মালিক সমিতির সভাপতি ও জেলা কৃষকলীগের সভাপতি আব্দুস সামাদ বকুল এবং শিবগঞ্জ ট্রাক মালিক সমিতির সভাপতি ও উপজেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক গোলাম কিবরিয়া চাঁদাবাজির পেছনে রয়েছেন।এ সময় বক্তারা প্রশাসনের হস্তক্ষেপ কামনা করে অবিলম্বে এই দুই নেতার পদত্যাগ দাবি করেন।চাঁদাবাজির অবসান চান সবাই সভার বক্তারা বলেন, বন্দরকে ঘিরে দেশের রাজস্ব আয়ের বড় একটি অংশ আসে। অথচ কয়েকজনের দাপটে পুরো বন্দরের পরিবেশ দিন দিন নষ্ট হয়ে যাচ্ছে। চাঁদাবাজির কারণে ব্যবসায়ীরা যেমন ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন, তেমনি দেশের ভাবমূর্তিও প্রশ্নবিদ্ধ হচ্ছে। তারা এই অনৈতিক কার্যক্রম বন্ধে প্রশাসনকে দ্রুত পদক্ষেপ নেওয়ার আহ্বান জানান।