
রিয়াদ হাওলাদার, রায়পুর, প্রতিনিধি:-
সারা দেশে প্রতিকুল আবহাওয়া ও নিম্ন চাপের প্রভাবে হালকা ও মাঝারি কম বেশি বৃষ্টিওয়াতে ফলে রায়পুর উপজেলায় বিভিন্ন অঞ্চলে জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হয়। আজ(১০জুলাই) বৃহস্পতিবার বেলা ১২:৩০ ঘটিকায় রায়পুর উপজেলা প্রশাসন কর্তৃক জলাবদ্ধতা নিরসনে আগাম প্রস্তুতি সভা সম্পন্ন হয়েছে।
উক্ত সভায় সভাপতিত্ব করেন উপজেলা নির্বাহী অফিসার মো: ইমরান খান। সভায় বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন উপজেলা প্রকৌশলী সুমন মুন্সি, উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মো: মাজেদুল ইসলাম, উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা মো: আব্দুল হাই খান, উপজেলা ক্যম্প কমান্ডার লেপটেনেন্ট মো: আরমান হাবিব, উপজেলা পল্লি বিদ্যুৎ সমিতির ডেপুটি জেনারেল ম্যানেজার মোশাররফ হোসেন, পৌরসভার নির্বাহী কর্মকর্তা মাসউদ মোর্শেদ, সহকারী কমিসনার ভূমি কর্মকর্তার প্রতিনিধি মো: সাজেদুল ইসলাম, উপজেলা ফায়ার সার্ভিস প্রতিনিধি রেজাউল করিম এছাড়াও রায়পুর উপজেলার ১০ টা ইউনিয়নের চেয়ারম্যান ও প্রশাসকগন এবং ইউনিয়ন তহসিলদারগন।আরো উপস্থিত ছিলেন রায়পুর প্রেসক্লাবের সাধারণ সম্পাদক এম আর সুমন, রায়পুর উপজেলা প্রেসক্লাবের সহ-সাধারণ সম্পাদক কাউছার আলম, রায়পুর রিপোর্টার্স ইউনিটির সভাপতি এডভোকেট এম.এ. জেড ফরিদ, উপজেলা রেডক্রিসেন্ট এর পরিচালক আনোয়ার হোসেন, সেচ্ছাসেবী সংগঠন চরমোহনা মানব কল্যান যুব সংঘের সভাপতি এডভোকেট আব্দুল্লাহ আল মাহমুদ। উক্ত সভায় জলাবদ্ধতা নিরসনে রায়পুরের সার্বিক পরিস্থিতি নিয়ে উন্মুক্ত আলোচনা হয়। উক্ত আলোচনায় সকলে নিজ নিজ এলাকার জলাবদ্ধতার পরিস্থিতি তুলে ধরেন। ৮নং চরবংশির চেয়ারম্যান আবু জাফর মো: মিন্টু ফরাজি তার এলাকার সার্বিক পরিস্থিতি তুলে ধরতে গিয়ে বলেন “যখন প্রবল বৃষ্টি হয় তখন অনেক গুলো নিম্নাঞ্চল এলাকা প্লাবিত হয়। সাথে সাথে হাজিমারা সুইচগেইট দায়িত্বপ্রাপ্ত ব্যাক্তি এস ও মঞ্জুরে এলাহিকে গেট খুলে দিতে অনুরোধ করিলে তিনি জানান গেইট নষ্ট রয়েছে। তাৎতক্ষনিক সেনাবাহিনীর ক্যাম্পে অভিযোগ দিলে সেনাবাহিনীর একটি টিম গিয়ে দেখতে পান সুইচগেইটে কোন সমস্যা নেই এবং গেইট পুনরায় চালু করে দেন। এতে আবু জাফর মো: মিন্টু ফরাজি অভিযোগ দিয়ে বলেন প্রয়োজনের সময়ে আমাকে সুইচগেইটের দায়িত্বপ্রাপ্ত ব্যাক্তি সহযোগিতা করছেনে না।উক্ত সভায় ৯ নং ইউনিয়ন এর চেয়ারম্যান হাওলাদার মোহাম্মদ দিপু তার আলোচনায় বলেন তার এলাকার বিভিন্ন রাস্তাঘাট পানির নিচে তলিয়ে গিয়েছে অনতি বিলম্বে ব্যবস্থা নেয়ার জন্য তিনি জোর দাবি জানান । ৩ নং চরমোনাই ইউনিয়নের প্রশাসক মো: আব্দুস সাত্তার ইউনিয়নের বিভিন্ন জলাবদ্ধতা নিয়ে কথা বলেন এবং সংশ্লিষ্ট দপ্তর গুলো থেকে সহযোগিতা কামনা করেন উক্ত আলোচনায় ৩ নম্বর ইউনিয়নের সেচ্ছাসেবী সংগঠন মানব কল্যাণ যুব সংঘের সভাপতি এডভোকেট আব্দুল্লাহ আল মাহমুদ তিনি বলেন ৮ এবং ৯ নং ইউনিয়নের প্রায় ৪৮ একর কৃষি জমিতে কৃষকদের বীজ তলা পানির নিচে তলিয়ে গিয়েছে। ফসল রক্ষার্থে উক্ত পানিগুলো নিষ্কাশনের ব্যবস্থা গ্রহণ করার জন্য অর্থ বরাদ্দ একান্ত প্রয়োজন। একটি লিখিত আবেদনের প্রেক্ষিতে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মহোদয় তাৎক্ষণিক সহযোগিতার আশ্বাস প্রদান করেন। উক্ত সভায় ২,৪,৫,৭ নং ইউনিয়ন প্রতিনিধিগণ জানান যে তাদের ইউনিয়নে সবেমাত্র শুরু করেছে। যা তৈরি হয়েছে মানুষের সৃষ্ট কর্মকাণ্ডের কারণে যাহা অতি দ্রুত নির্মূল করা প্রয়োজন। এতে করে আসন্ন বন্যা থেকে পরিত্রাণ পাওয়া যাবে। উক্ত সভায় ১,৬, ১০ নং ইউনিয়নের প্রতিনিধি কম জানান এখন পর্যন্ত কোন জলবদ্ধতা তৈরি হয়নি তবে যদি আরো কয়েকদিন বৃষ্টি থাকে তাহলে জলাবদ্ধতা হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে তবে তাহারা জলাবদ্ধতা নিরশনে কাজ করে যাচ্ছেন।উক্ত সভায় রায়পুর রিপোর্টার্স ইউনিটির সভাপতি অ্যাডভোকেট আব্দুল জব্বার ফরিদ বলেন রায়পুর উপজেলার জলাবদ্ধতার অন্যতম কারণ হিসেবে তিনি উল্লেখ করেন রায়পুর উপজেলায় বিভিন্ন স্তরে গাপটি মেরে থাকা ভূমি দস্যুরা সরকারি ভূমি দখল করে সরকারি নালা খাল দখল করে বিভিন্ন স্থাপনা তৈরি করছে এবং পয়নিষ্কাশন ব্যবস্থা বাধাগ্রস্থ করছেন। যাহাতে বর্ষার মৌসুমে রায়পুরবাসী জলাবদ্ধতার কারণে ব্যাপক কষ্ট পাচ্ছে। এবং তিনি প্রশাসনের নিকট জোর দাবি জানান যে দ্রুত ভূমি দস্যুদের হাত থেকে সরকারি ভূমি উদ্ধার করে নালা খাল গুলো পুনরায় খনন করে পানির প্রবাহ চালু করা একান্ত প্রয়োজন। উক্ত অভিযোগের ভিত্তিতে সংশ্লিষ্ট দপ্তরের সম্মানিত প্রতিনিধিগণ জলাবদ্ধতা নিরসনে ও যথাযথ ব্যাবস্থা গ্রহনের আশ্বাস প্রদান করেন। উক্ত সভায় সকল প্রতিনিধিগনের আলোচনা শোনার পর উপজেলা নির্বাহী অফিসার ইমরান হোসেন তার সভাপতির বক্তব্য বলেন, রায়পুর উপজেলায় জলাবদ্ধতা নিরশনে এবং আগত বন্যা থেকে পরিত্রাণ পাওয়ার জন্য উপজেলার সকল দপ্তরের প্রয়োজনীয় প্রস্তুতি সম্পন্ন করা হয়েছে এবং যদি আরো কোন কিছুর প্রয়োজন থাকে সেই সকল বিষয়ে তিনি দ্রুত ব্যাবস্থা নিতে নির্দেশ প্রদান করেন ।চর বংশী সহকারে পুরো রায়পুর উপজেলায় সকল ড্রেজিং মেশিন অপসারণ করার জন্য বাংলাদেশ সেনাবাহিনী ও প্রশাসনিক কর্মকর্তাদেরকে নির্দেশ প্রদান করেন। তার আওতাধীন কর্মকর্তা, রেড ক্রিসেন্ট সোসাইটি, ফায়ার সার্ভিস এবং ইউনিয়ন পরিষদ স্থানীয় স্বেচ্ছাসেবী টিম এবং স্থানীয় গণমান্য ব্যক্তিদের সমন্বয় তিনি দুর্যোগ ব্যবস্থাপনায় জরুরী টিম গঠন করে দেন। এবং আরো জানান রায়পুর উপজেলায় দরিদ্র অসহায়দের জন্য জরুরী ভিত্তিতে ত্রাণের ব্যবস্থা করা হয়েছে এবং তিনি একটি নির্দেশনা প্রদান করেন বিগত দিনের ন্যায় কোন স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন বা কোন দাতা সংগঠন যদি রায়পুর উপজেলায় ত্রাণ বিতরণ করতে চায় তাহলে অবশ্যই উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাগণের সহায়তায় এবং নির্দেশনা মেনেই ত্রান বিতরণ করতে হবে। এবং উপজেলা নির্বাহী অফিসার জনাব ইমরান হোসেন রায়পুর উপজেলার সকল স্তরের জনগণকে ও সচেতন ব্যক্তি মহল কে দুর্যোগ ব্যবস্থাপনায় সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে দেওয়ার আহবান জানান।