• ঢাকা, বাংলাদেশ শনিবার, ১৬ অগাস্ট ২০২৫, ০৯:৫৮ পূর্বাহ্ন
  • [কনভাটার]
সর্বশেষ খবর
হবিগঞ্জের মাধবপুরে যৌথবাহিনীর অভিযানে ছাত্রদল নেতাসহ ২ চাঁদাবাজ আটক। নেত্রকোণায় খালেদা জিয়ার জন্মদিনে ছাত্রদলের দোয়া মাহফিল নেত্রকোনায় বারটানের“সুস্বাস্থ্যের জন্য ফলিত পুষ্টি “ বিষয়ক প্রশিক্ষন অনুষ্ঠিত শিল্পের তথ্য বিদেশে পাচারের অভিযোগে আশুলিয়া বিক্ষোভ   নওগাঁয় আত্রাই নদীর পানি বিপদ সীমার ৩৭ সেন্টিমিটার উপরে’ পানিবন্দী ৫শ’ পরিবার, ঝুকিপূর্ন বেশ কয়েকটি পয়েন্ট নাগরপুরে বেগম খালেদা জিয়া’র ৮0  তম জন্মদিন পালন  খালেদা জিয়ার ৮০তম জন্মবার্ষিকীতে শিবগঞ্জে দোয়া মাহফিল সাবেক প্রতিমন্ত্রী টিটু’র কুখ্যাত বেজি গ্রুপের প্রধান অমিও এবং ইমন গ্রেফতার নওগাঁয় মোবাইল ফোনে কথা বলতে নিষেধ করায় স্কুল ছাত্রীর আত্নহত্যা পাটুরিয়ায় পদ্মার ভাঙনে ৫ নম্বর ফেরিঘাট বন্ধ, ফেরি চলাচলে বিঘ্ন
বিশেষ খবর
কলমাকান্দা ব্যবসায়ী মালিক সমিতির নতুন আহবায়ক কমিটি গঠন ফিল্মি স্টাইলে শিক্ষককে তুলে নিয়ে মাথা ফাটাল ছাত্রদল” শিরোনামে প্রকাশিত সংবাদের প্রতিবাদে সাংবাদিক সম্মেলন  অনুপ্রবেশকারী ও সুবিধাভোগীদের বিএনপিতে স্থান হবে না আনিসুজ্জামান বাবু নেত্রকোনায় জাতীয় পরিচয়পত্র (NID) সেবা নির্বাচন কমিশনের অধীনে রাখার দাবিতে মানব-বন্ধন ও সমাবেশ অনুষ্ঠিত ডিসেম্বর অথবা জানুয়ারিতে জাতীয় নির্বাচন আ.লীগের নিবন্ধন থাকবে কিনা, যা বললেন সিইসি নির্বাচন সংশ্লিষ্টদের পেশাদারত্বের সঙ্গে কাজ করতে হবে : সিইসি সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে কাজ করছে ইসি: সিইসি ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় ১০ বছর পর সম্মেলন ঘিরে বিএনপির ব্যাপক প্রস্তুতি ষড়যন্ত্র রুখে ঐক্যবদ্ধ থেকে নির্বাচন আদায় করতে হবে: রুমিন ফারহানা
সৈয়দ সময় ,নেত্রকোনা : / ২৩ জন দেখেছেন
আপডেটঃ বুধবার, ৬ আগস্ট, ২০২৫

গণঅভ্যুত্থানের শহীদের স্ত্রী আয়েশা এখন একা , হারিয়েছেন শিশু সন্তানও

ছবি : সংগৃহীত।

সৈয়দ সময় ,নেত্রকোনা :

স্বামী- শ্বশুর বাড়ি সব হারিয়েছেন আয়শা, না ফেরার দেশে শিশু সন্তানও ২০২৪ সালের ৫ই আগস্ট, যোহরের আযানের সময় দুজন মানুষ একসাথে বসে দুপুরের খাবার খেলাম। আমি অসুস্থ থাকায় তখন ছুটিতে ছিলাম। তাই বাসায় থাকার সুবাদে সব সময় তাকে চোখে চোখে রাখতাম, যেন মিছিলে না যেতে পারে। সেদিন আমাকে না জানিয়ে লুকিয়ে মিছিলে চলে যায়, সেটাই তার শেষ যাওয়া। মানুষটা ঐদিন বিকেলের মধ্যে লাশ হয়ে গেল! কথাগুলো বলতে বলতে “দৃষ্টিহীন চোখে” মাটির দিকে তাকিয়ে নিরব হয়ে রইলেন বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনে গুলিতে নিহত মো. মাছুম বিল্লাহ’র স্ত্রী আয়েশা খাতুন।জীবিকার তাগিদে গাজীপুর মাওনাতে নয়নপুর এলাকায় একটি ভাড়া বাসায় বসবাস করতেন। সেখানে মাছুম রাজ মিস্ত্রি হিসেবে কাজ করতেন এবং আয়েশা একটি গার্মেন্টসে চাকরি করতেন। মাছুমের বাড়ি নেত্রকোণা জেলার দুর্গাপুর উপজেলার সীমান্তঘেষা নলুয়াপাড়া গ্রামে। তার বাবা মোহাম্মদ সাইফুল ইসলাম একজন কৃষক।আয়েশা খাতুন বলছিলেন, আমি ঢাকা যাওয়ার পর পর শুরু হয় বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলন। আন্দোলন চলাকালীন বেশ কিছুদিন আমরা ঘরে প্রায় বন্দি অবস্থায় ছিলাম। এমন অবস্থাতেই আমার স্বামী দুই তিন দিন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র-জনতার আন্দোলনে অংশগ্রহণ করেছিল। তখন আমি তাকে বুঝিয়ে বাসায় রাখতে চাইতাম। তাকে বলতাম যে আমরা গরিব মানুষ, আমাদের কাজ করে খেতে হবে। তবুও সে আমার কথা শুনেনি আগস্টের ৫ তারিখে সে আমাকে না জানিয়ে আন্দোলনে চলে যায়। সেদিন দুপুরে আমরা দুজন একসাথে বসেই দুপুরের খাবার খেয়েছিলাম খাওয়া-দাওয়ার পর সে আমাকে না বলেই চুপিসারে আন্দোলনে চলে যায়।আন্দোলন চলাকালীন গাজীপুরের মাওনা এলাকায় বিকেল তিনটার দিকে পুলিশের গুলিতে মারাত্মক জখম হন মাছুম। একটি বুলেট তার বুকে লাগে এবং আরেকটি বুলেট তার পায়ে আঘাত করে। পরে উপস্থিত ছাত্র-জনতা তাকে ভালুকা হাসপাতালে নিয়ে গেলে হাসপাতালের কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।আয়শা খাতুন বলেন, আমার স্বামীর পরিচিত একজন আমাকে ফোন দিয়ে জানায় সে মারাত্বক আহত হয়েছে। তখন আমি তাড়াতাড়ি ভালুকা সরকারি হাসপাতালে ছুটে যাই। কিন্তু তারা কেউ তখনো আমাকে জানায়নি যে আমার স্বামী মারা গিয়েছে। পরে যখন বাসায় আনার পর যখন আমি জানতে পারলাম সে মারা গিয়েছে, তখন আর আমার কোন হিতাহিত জ্ঞান ছিল না। পরবর্তীতে সবাই মিলে মরদেহ দুর্গাপুরে আমাদের শ্বশুর বাড়িতে নিয়ে আসে। এবং পরদিন সকালে তার দাফন কাফন সম্পন্ন করা হয়েছে।আয়েশা আরও বলেন, আমার স্বামী মারা যাওয়ার নয় দিনের মাথায় তারা আমাকে শ্বশুরবাড়ি থেকে বের করে দেয়। তাদের দাবি আমি অসুস্থ, আমার চিকিৎসা করা প্রয়োজন, তারা আমার চিকিৎসা করাতে পারবেন না। এই ঘটনার পর আমার ভাই আমাকে বাবার বাড়িতে নিয়ে আসে এবং আমার চিকিৎসার ব্যবস্থা করে। স্বামী মারা যাওয়ার পর আমি বেশ কয়েকবার শ্বশুর বাড়িতে মোবাইল ফোনে যোগাযোগ করেছি। কিন্তু তারা আমাকে কটুকথা বলে। তবুও একপর্যায়ে তিন দিন আমি গিয়েছি শ্বশুর বাড়িতে তাদের দেখতে। যাওয়ার পর তারা আমাকে অবহেলা লাঞ্ছনা ছাড়া কিছু দেয়নি। শশুর-শাশুড়ি সব সময় বাবার বাড়ির লোকজনদের কাছে ফোন দিয়ে বলতো, আমার ছেলে নাই, তাই ছেলের কোন বউও নাই।অভিযোগের সুরে আয়েশা বলেন, দুই মাস আগে সিজার করে আমার একটি সন্তান হয়। পরবর্তীতে সে বাচ্চাটিও মারা যায়। সিজার করার কাটা জায়গায় ইনফেকশন হওয়ায় ডাক্তার বলেছিল চিকিৎসা করাতে। কিন্তু আমার শাশুড়ি মা চিকিৎসা করাতে রাজি হননি। স্বামী মারা যাওয়ার পর, বাবার বাড়ির লোকজন আসলেই তাদেরকে বারবার বলতো, তোমার বোনকে তোমরা নিয়ে যাও। সে অসুস্থ, সিজার হয়েছে। তার চিকিৎসা করাতে পারব না। এখন আমার ছেলেও নাই, ছেলের বউ ও নাই। তবুও আমার মা এবং ভাই আমাকে বাবার বাড়িতে নিয়ে আসেনি। তারা বলছিল যেন অন্তত ৪০ দিন থাকার পরে আমি বাবার বাড়িতে আসি। বলতে গেলে স্বামী মারা যাওয়ার পর একরকম জোর করেই শ্বশুর বাড়িতে কয়েকদিন থেকেছি। ৯-১০ দিন পর আর ওই বাড়িতে থাকার ধৈর্য কুলায়নি। সব মায়া ত্যাগ করে চলে আসি বাবার বাড়িতে।আমার স্বামী এবং আমি যখন ঢাকায় থাকতাম, তখন আমাদের ত্রিশ-চল্লিশ হাজার টাকা ঋণ ছিল। সেই দিনের টাকাও আমার শ্বশুর শাশুড়ি শোধ করেননি। আমি অসুস্থ শরীর নিয়ে বাধ্য হয়ে মাওনা গিয়ে, গার্মেন্টসে কাজ করে আমার বকেয়া বেতনের টাকা উঠিয়ে সেই ঋণ পরিশোধ করেছি।— বলেন আয়সা।তিনি আরও বলেন, আমার স্বামী মারা যাওয়ার পরে সরকারি ও বেসরকারিভাবে বেশ কিছু অনুদান এসেছে। কিন্তু তারা ওই অনুদানের টাকা গুলো আমাকে দেয় না। এমনকি আমি ঢাকায় থাকাকালীন চাকরি করে এক জোড়া স্বর্ণের চুড়ি বানিয়েছিলাম, সেগুলো তারা রেখে দিয়েছেন। এ পরিস্থিতিতে আমি ইউএনও অফিসে একটি অভিযোগ জানাই যে, আমার স্বামীর অনুদানের টাকা পয়সা আমি পাচ্ছি না। পরবর্তীতে জেলা প্রশাসক জানান, সকল শহীদের স্ত্রীরা যদি সরকারি ভাবে টাকা অনুদানের টাকা পেয়ে থাকেন তাহলে আপনিও পাবেন। বর্তমানে আমি বাবার বাড়িতে বসবাস করি। আমার একটি ভাই এবং একটি বোন শারীরিক প্রতিবন্ধী। আর একজন ভাই সুস্থ আছেন। তিনি তার নিজের সংসারের চাপ সামলেই কুলকিনারা করতে পারেন না। আক্ষেপ নিয়ে আয়েশা বলেন, স্বামী মারা গেলে স্ত্রী স্বামীর অংশের দুই আনা পায়, কিন্তু আমি কিছুই পাইনি


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এই বিষয়ের আরও খবর
August 2025
S S M T W T F
 12
3456789
10111213141516
17181920212223
24252627282930
31  

Categories