বদরগঞ্জ (রংপুর) প্রতিনিধি:
রংপুরের বদরগঞ্জ উপজেলার কালুপাড়া ইউনিয়নের শংকরপুর ঝাড়পাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের দপ্তরী রবিউল ইসলামের বিরুদ্ধে বিদ্যালয়ের ছাত্রীদের কে স্মার্টফোনে অশ্লীল ভিডিও দেখানোর অভিযোগ উঠেছে।গত ৭ আগস্ট বৃহস্পতিবার স্কুল প্রাঙ্গণে চরম উত্তেজন বিরাজ করে, এলাকার লোকজন ও শিক্ষকদের মধ্যে চলে কথার লড়াই। এক পর্যায়ে গিয়ে ছাত্রীদের কাছে জানতে চাওয়া হয় ঘটনাটি কি? তারপর চতুর্থ ও পঞ্চম শ্রেণীর ছাত্রীরা বলেন দীর্ঘদিন ধরে তিনি আমাদেরকে তার মোবাইলে অশ্লীল ভিডিও দেখান।ঐ ঘটনায় স্থানীয় এক অভিভাবক অভিযুক্ত পিয়ন রবিউলের শাস্তির দাবিতে বদরগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার (ইউএনও) কাছে লিখিত অভিযোগ দাখিল করেন।অভিযোগে বলা হয়, দীর্ঘদিন ধরে বিদ্যালয়ের পিয়ন রবিউল ইসলাম পঞ্চম শ্রেণির ছাত্রীদের শ্রেণিকক্ষে ডেকে নিয়ে নিজের মোবাইলে অশ্লীল ভিডিও দেখাতেন এবং ভয়ভীতি প্রদর্শন করতেন। নাম প্রকাশ না করা সত্যে এক শিক্ষার্থী অভিযোগ করে বলে, পিয়ন রবিউল ইসলাম আমাদের খারাপ ভিডিও দেখায়। আমরা তার শাস্তি চাই। আরেক শিক্ষার্থী আজমীর সরকার জানান, রবিউল চাচ্চু শ্রেণিকক্ষে ডেকে নিয়ে অশ্লীল ভিডিও দেখাতেন প্রায় অধিকাংশ সময়।এ বিষয়ে স্থানীয় অভিভাবক ফেন্সি বেগম বলেন, রবিউল এতটাই প্রভাবশালী যে কেউ তার বিরুদ্ধে মুখ খুলতে সাহস পায় না। বিদ্যালয়ের এক সহকারী শিক্ষিকাও নাম প্রকাশ না করার শর্তে অভিযোগের সত্যতা স্বীকার করে জানান, রবিউল আমাদেরও জিম্মি করে রেখেছে।বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষিকা মাহমুদা খাতুন জানান, অভিভাবকরা হুঁশিয়ারি দিয়েছেন, রবিউলের শাস্তি না হওয়া পর্যন্ত তারা তাদের সন্তানদের স্কুলে পাঠাবেন না। বিদ্যালয় পরিচালনা কমিটির সাবেক সভাপতি আফজাল হোসেন বলেন, রবিউল ইসলাম অতীতেও অনৈতিক কর্মকাণ্ডে জড়িত ছিলেন। গত ২০২০ সালে এক বিবাহিত নারীর সঙ্গে পরকীয়ায় জড়িয়ে পরে বিয়ে করতে বাধ্য হন।এ বিষয়ে বিদ্যালয়ের অভিযুক্ত পিয়ন রবিউল ইসলাম অভিযোগ অস্বীকার দাবি করে বলেন, এসব ভিত্তিহীন আমার বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র হচ্ছে।সমাজে আমাকে হেয় প্রতিপন্ন করার জন্য কিছু লোক উঠে পড়ে লেগেছে। বদরগঞ্জ উপজেলা সহকারী প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা লাজিজা বেগম বলেন, ঘটনাটি আসলেই দুঃখজনক। তদন্ত করে এর সত্যতা পাওয়া গেলে পিয়ন রবিউলের বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।এ বিষয়ে বদরগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মিজানুর রহমান মুঠোফোনে বলেন,ঘটনাটি জানার পর বিষয়টি জেলা শিক্ষা কর্মকতাকে জানানো হয়েছে। তিনি তিন সদস্য একটি কমিটি গঠন করে দিয়েছেন।তদন্ত কমিটি হাতে পাওয়ার পর পরবর্তী ব্যবস্হা প্রদান করা হবে।এলাকাবাসীর গণস্বাক্ষরিত লিখিত অভিযোগের ভিত্তিতে গত রোববার ১০ আগস্ট সকাল পৌনে ১২টার দিকে তিন সদস্যের একটি তদন্ত কমিটি বিদ্যালয়ে উপস্থিত হয় এবং তদন্ত শুরু করে।তদন্ত কমিটির সদস্য ও প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা লাজিজা বেগম বলেন, আমরা প্রাথমিক তদন্তে ঘটনার সত্যতা পেয়েছি। এ বিষয়ে আমি জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা কে জানিয়েছি। তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হচ্ছে। প্রাথমিক জেলা শিক্ষা কর্মকর্তা নজরুল ইসলাম জানান, এলাকাবাসী ও অভিভাবকরা দ্রুত অভিযুক্ত দপ্তরীর বিরুদ্ধে বিভাগীয় ব্যবস্থা নেয়ার দাবি জানিয়েছেন। যেহেতু ঘটনার সত্যতা পেয়েছি অভিযুক্ত পিয়নের বিরুদ্ধে দ্রুত সময়ের মধ্যে ব্যবস্থা নেয়া হবে।