সালমান আহম্মেদ, কেন্দুয়া (নেত্রকোনা) প্রতিনিধি
নেত্রকোণার কেন্দুয়া উপজেলার হারুলিয়া গ্রামে দাঁড়িয়ে আছে প্রায় আট শতাব্দী প্রাচীন এক ইসলামী স্থাপত্যকীর্তি—ঐতিহাসিক হারুলিয়া পুরাতন জামে মসজিদ। আনুমানিক খ্রিষ্টাব্দ ১২০০ সালে নির্মিত এই মসজিদ শুধু স্থানীয় মুসলিম সম্প্রদায়ের ধর্মীয় কেন্দ্রই নয়, বরং বাংলাদেশের প্রত্নতাত্ত্বিক ঐতিহ্যের এক মূল্যবান অংশ।তবে এই অমূল্য ঐতিহ্য ভয়াবহ এক দুর্যোগের শিকার হয় প্রায় ছয় থেকে সাত বছর আগে। স্থানীয়দের অভিযোগ, তৎকালীন ফ্যাসিস্টবাদী সরকারের শাসনামলে দুর্ধর্ষ চোরচক্র মসজিদ থেকে কষ্টিপাথরে নির্মিত এক বিরল রত্ন চুরি করে নিয়ে যায়। রত্নটি শুধু ধর্মীয় নয়, ঐতিহাসিক ও সাংস্কৃতিক দিক থেকেও ছিল অপরিসীম গুরুত্বের।ঘটনার পর এলাকাবাসী তৎকালীন প্রশাসনের কাছে লিখিত অভিযোগ দায়ের করলেও, অবাক করার মতো বিষয় হলো এত বছরেও কোনো তদন্ত, উদ্ধার অভিযান, কিংবা বিচার হয়নি। এ ঘটনায় স্থানীয়রা ক্ষোভ ও হতাশা প্রকাশ করে বলছেন, এই অবহেলা দেশের ইতিহাস, ঐতিহ্য ও সাংস্কৃতিক সম্পদের প্রতি চরম উদাসীনতার পরিচয় বহন করে।হারুলিয়া গ্রামের প্রবীণ বাসিন্দারা গোলাপ মিয়া , মিন্টু মিয়া ও( ইমরান আহমেদও এবি সুমন) গ্রামবাসী পক্ষে বলেন, “এটি শুধু আমাদের গ্রাম বা উপজেলার ক্ষতি নয়, বরং পুরো বাংলাদেশের ঐতিহ্য হারানোর ঘটনা। আমরা বারবার প্রশাসনের দ্বারে গিয়েছি, কিন্তু বিচার তো দূরের কথা—তদন্তও এগোয়নি।”এলাকাবাসী প্রশাসনের কাছে জোর দাবি জানিয়েছেন—অবিলম্বে চুরি হওয়া প্রত্নবস্তু উদ্ধার করতে হবে, জড়িতদের আইনের আওতায় আনতে হবে, এবং মসজিদটিকে প্রত্নতত্ত্ব অধিদপ্তরের আওতায় এনে সর্বোচ্চ নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে হবে।ইতিহাসবিদরা মনে করেন, এই ধরনের অবহেলা অব্যাহত থাকলে বাংলাদেশের বহু প্রত্নতাত্ত্বিক নিদর্শন অদূর ভবিষ্যতে বিলীন হয়ে যাবে। হারুলিয়া পুরাতন জামে মসজিদ কেবল একটি ধর্মীয় স্থাপনা নয়—এটি আমাদের অতীত, সংস্কৃতি ও শিকড়ের জীবন্ত সাক্ষ্য