ময়মনসিংহে এবারের এইচএসসি পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করে জিপিএ-৫ পেয়েছেন। অন্যের বাড়িতে কাজ করে মাকে সহায়তার পাশাপাশি ভ্যান চালিয়ে লেখাপড়ার খরচ জোগাতে হয়েছে তাকে। তীব্র অভাবের মধ্যেও লেখাপড়া চালিয়ে যাওয়া শাকিলের এমন ফলাফল অবাক করেছে সবাইকে।
ময়মনসিংহ জেলার ফুলবাড়ীয়া উপজেলার এনায়েতপুর ইউনিয়নের কাহালগাঁও পুর্বপাড়া গ্রামের আঃ বারেকর ছেলে শাকিল আহমেদ । তিন ভাই দুই বোনের মধ্যে ৩য় তিনি।তার বাবা পেশায় ভ্যান চালক, তার বাবা সবার ভরণপোষণ জোগাতে হাড়ভাঙা খাটুনি খেটেছে তার বাবা মা।
আছিম উচ্চ বিদ্যালয় থেকে এসএসসিতে জিপিএ-৪.৬১ পেয়েছিলেন শাকিল। এবার আছিম শাহাবুদ্দিন ডিগ্রি কলেজ থেকে মানবিক বিভাগে জিপিএ-৫ পেয়েছেন তিনি। এইচএসসি পরীক্ষায় জিপিএ-৫ পেয়ে উত্তীর্ণ হওয়া শাকিলের মূল কাজ ভ্যান চালানো।
শাকিলদের পরিবারদের জীবনটা একটা সংগ্রাম। শাকিলের বড় বোন বিয়ে দিয়াছে কোন রকমে, বড় ছেলে মাসুদ রানা দিন মুজুর ও বাবার ভ্যান চালিয়ে করছেন লেখাপড়া। বর্তমানে মাসুদ রানা ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ছেন।আরেক ভাই ১০ম শ্রেনীতে বোন ৮ম শ্রেনীতে পড়তেছেন।শাকিলের বাবা অনেক কষ্ট করে সে অন্যের বাড়িতে কাজ করে, ভ্যান চালিয়ে ছেলেদের ভালো ফলাফল দেখে সব দুঃখ কষ্ট ভুলে যান তার বাবা ভ্যান চালক বারেক। শাকিল ভ্যান চালিয়ে ক্লান্ত শরীরে মনোযোগ দিয়ে প্রস্তুতি নিয়েছেন এইচএসসি পরীক্ষার। সফল হয়েছেন ইচ্ছাশক্তির সংগ্রামে।
অতি কষ্টের মধ্যে এমন ফলাফলে খুশি শাকিল ও তার পরিবার। খুশি তার কলেজের শিক্ষকসহ স্থানীয়রাও।
শাকিলের বাবা ভ্যানচালক আঃ বারেক বলেন বৃষ্টির মধ্যে ছেলে মেয়েদের কে নিয়ে রাতে বসে থাকছি ছাফরা ঘর দিয়ে পানি পড়ছে, ছেলে মেয়েদের মুখে ভাল কোন মুখে তুলে দিতে পারি নাই। যখন শুনছি আমার ছেলে ভাল রেজাল্ট করছে তখন সকল কষ্ট ভুলে যাই।
স্থানীয় স্কুল শিক্ষক মোঃ রফিকুল ইসলাম বলেন, তার ফলাফলে আমরা অনেক খুশি। আমরা তার পাশে ছিলাম। আগামীতেও তার পাশে দাঁড়াব। সেই সঙ্গে সবাইকে তার পাশে দাঁড়ানোর অনুরোধ করছি।