সুনামগঞ্জের নবগঠিত মধ্যনগর উপজেলায় অবৈধভাবে সোমেশ্বরী নদীর তীর ও চর কেটে মোবারক হোসেন তালুকদার নামে আওয়ামী লীগের এক নেতার বিরুদ্ধে মাটি বাণিজ্যের অভিযোগ উঠেছে। এ ঘটনায় এলাকায় ক্ষোভ বিরাজ করছে।
অবৈধ মাটি কারবারে অভিযুক্ত মোবারক হোসেন তালুকদার মধ্যনগর উপজেলা আওয়ামী লীগের সাবেক যুগ্ন আহবায়ক ও মধ্যনগর ইউনিয়নের নয়াপাড়া গ্রামের আব্দুল আজিজের ছেলে। তিনি প্রায় ২০ দিন ধরে সোমেশ্বরী নদী থেকে খননযন্ত্র দিয়ে মাটি কেটে অবাধে বিক্রি করছেন।
সরজমিন গিয়ে দেখা যায়, শুষ্ক মৌসুমের শুরুতেই নাব্য সংকটে সোমেশ্বরী নদীর চর জেগে উঠেছে। সেই চর থেকে খননযন্ত্র দিয়ে অবাধে মাটি কেটে বিক্রি করছেন আওয়ামী লীগ নেতা মোবারক হোসেন তালুকদার। একই সঙ্গে নদীর পাড় ও তীর থেকে মাটি কেটে নেওয়া হচ্ছে। প্রতিদিন ট্রাক দিয়ে মাটি কেটে বিক্রি করছেন। তবে দিনের বেলায় মাটি কাটার এ মহোৎসব চলে। সোমেশ্বরী নদীতে এখন তেমন পানি নেই। তাই মাটি কাটার বিরূপ প্রভাব পড়ছে না। তবে বর্ষা মৌসুমে পানি বৃদ্ধি পেলে মাটি কাটার বিরূপ প্রভাব পড়ার শঙ্কা করছেন স্থানীয়রা। বর্ষা মৌসুমে পানির প্রবল স্রোতে ভাঙন দেখা দিতে পারে। তখন নদী তীরের আবাদি জমি ও বসতবাড়ি ও দোকানসহ ভাঙনের কবলে পড়বে বলে শঙ্কা দেখা দিয়েছে।
মাটি কারবারি মোবারক হোসেন আওয়ামী লীগের প্রভাবশালী নেতা ও স্থানীয় সংসদের কাছের মানুষ হওয়ায় এই বাণিজ্য করছেন বলে অভিযোগ রয়েছে এলাকা বাসীর। কিন্তু তিনি এলকার প্রভাবশালী নেতা হওয়ায় তার বিরুদ্ধে প্রকাশ্যে মুখ খুলতে সাহস পায় না কেউ।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে মধ্যনগর এলাকায় একজন জনপ্রতিনিধি জানান, মোবারক হোসেন তালুকদার মধ্যনগর উপজেলা আওয়ামীলীগের প্রভাবশালী ব্যক্তি হওয়ায় মাটি কেটে বিক্রি করছেন। তবে ওই মাটি বাণিজ্যের বন্ধের দাবি করছি।
এ বিষয়ে মাটি কারবারি আওয়ামীলীগ নেতা মোবারক হোসেন তালুকদার বলেন,মধ্যনগর সরকারি ব্রীজের এফরোজের কাজটি আমি মাঠিভরাটের জন্য কুটেশনে পেয়েছি। তাই নদীর চর থেকে মাঠিকাটার মেসিন দিয়ে মাঠিকেটে ড্রামট্রাকের করে নিয়ে ব্রীজে দিচ্ছি। এছাড়া মাঠি অন্য জায়গায় বিক্রি করিনি। পলি পড়ে নদীর তলদেশ ভরাট হয়ে নাব্যতা সংকট সৃষ্টি হয়েছে। তাই নদীর পানি প্রবাহ তৈরির করার জন্য চর থেকে মাটি কেটে নিচ্ছি । এতে বসতবাড়ি কিংবা কোনো প্রতিষ্ঠানের ক্ষতি হবে না। তবে মাঠিকাটার জন্য কোন সরকারি আদেশ নেইনি।
মধ্যনগর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) নাহিদ হাসান খান বলেন,আমি সুনামগঞ্জ জেলা মেটিংয়ের জন্য এসেছি, আগামীকাল এসে এর বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
সুনামগঞ্জের অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (রাজস্ব) বিজন কুমার সিংহ বলেন, বিষয়টি তার জানা নেই। এ রকম ঘটনা সত্য হয়ে থাকলে তদন্ত করে ব্যবস্থা নেয়া হবে।
সুনামগঞ্জ জেলা পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী মো, মামুন হাওলাদার বলেন, নদীতে বর্ষাকালে পানি বাড়ে ও কমে। নদীর যে জায়গায় ভাঙনের শঙ্কা থাকে, সেখান থেকে মাটি ও বালু নেয়া যাবে না। আর এ বিষয়ে মনিটরিং করা প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে।