হাওরে এখনও পুরোপুরি ধান কাটা শেষ হয়নি। তারপরও সরগরম নতুন ধানের বাজার। তবে এই নতুন ধান ক্রয়ে আগ্রহ কম মিল মালিক, আড়তদার ও পাইকারদের। তাদের দাবি নতুন চিকন ধানে পুষ্টতা একেবারেই কম। ফলে বেশি দরে তারা ধান ক্রয় করতে আগ্রহী নন। কৃষকরাও জানালেন জমিতে (ব্রি-২৮) ধানের শীষ বের হওয়ার পর সাদাবর্ণ হয়ে যায়। ফলে তারাও এবার ধান উৎপাদনে ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছেন। তার প্রভাব পড়তে পারে এবার সরকারি গুদামে ধান-চাল সংগ্রহ অভিযানে।
উপজেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক জানালেন সংগ্রহ অভিযান শুরু হলে সেটা বলা যাবে। তার দাবি, আশা করা যাচ্ছে শতভাগ লক্ষ্যমাত্রা পূরণ করা যাবে।
দেশের হাওর অঞ্চলের সবচেয়ে বড় ধানের মোকাম ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আশুগঞ্জ মেঘনা নদীর পাড় বিওসি ঘাট। এখানে ব্রাহ্মণবাড়িয়া, কিশোরগঞ্জ, নরসিংদী, নেত্রকোনা, ময়মনসিংহ, সুনামগঞ্জ, সিলেট ও হবিগঞ্জসহ হাওরাঞ্চলে উৎপাদিত ধান নৌ-পথে ব্যাপারী ও কৃষকরা আশুগঞ্জ মোকামে বিওসি ঘাটে নিয়ে আসেন। প্রতিদিন সকাল থেকে বিকেল পর্যন্ত চলে এই সব ধান বেচা-কেনা। তবে এবার হাওরে বোরো মোটা ধানের ফলন ভাল হলেও (ব্রি-২৮) ধান ব্লাস্ট রোগে আক্রান্ত হওয়ার কারণে ধানের পুষ্টতা একেবারেই কম হয়েছে। ফলে এই ধান ক্রয়ে আগ্রহ কম মিল মালিক, পাইকারও আড়দাররা। তাদের দাবি প্রতি মণ ধানে ৪০ কেজিতে চাল হয় মাত্র ১২ কেজি। আর (ব্রি- ২৯) আর ইরি মোটা জাতের ধানের বাম্পার ফলন হয়েছে।
এবার বোরো মৌসুমে ৩০ টাকায় ধান ও ৪৪ টাকা দরে চাল কিনবে সরকার। এই বোরো মৌসুমে অভ্যন্তরীণ বাজার থেকে ৫১ হাজার ৯শ ৫৮ মে.টন চাল ও ৩শ ৫৭ মে.টন ধান কিনবে সরকার। ধান ও চালের সংগ্রহ মূল্য নির্ধারণ করেছে সরকার। প্রতি কেজি বোরো ধানের সংগ্রহ মূল্য নির্ধারণ করা হয়েছে ৩০ টাকা, সিদ্ধ চাল ৪৪ টাকা। কৃষকরা বলছে, ধান উৎপাদনের খরচ দিনে দিনে বেড়েই চলছে। তারা মূল্য বৃদ্ধির দাবি জানান। আর মিল মালিক, পাইকার ও আড়তদাররা বলছেন নতুন বোরো চিকন ধানের পুষ্টতা খুবই কম। বেশি দরে ধান ক্রয় করে চাল উৎপাদন হচ্ছে একেবারেই কম। তারা চালের মূল্য পুনর্বিবেচনার দাবি জানান।
উপজেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক চিন্তামনি তালুকদার জানান, এবার সরকার ধান কিনবে ৩০ টাকা দরে আর চাল কিনবে ৪৪ টাকা দরে। সংগ্রহ অভিযান শুরু হলে বুঝা যাবে, প্রভাব পড়ে কি, না?
চলতি বোরো মৌসুমে ধান-চাল অভ্যন্তরীণ সংগ্রহ ৭ মে থেকে শুরু হয়ে ৩১ আগস্ট পর্যন্ত চলবে।