• ঢাকা, বাংলাদেশ বৃহস্পতিবার, ১৪ অগাস্ট ২০২৫, ০১:০৭ অপরাহ্ন
  • [কনভাটার]
সর্বশেষ খবর
বিশ্বম্ভরপুরের ফতেপুর ইউনিয়নে বিএনপির বিতর্কিত কমিটি বাতিলের দাবিতে বিক্ষোভ মিছিল ও মানববন্ধন তিস্তা নদীর পানি বিপৎসীমার ৭ সেন্টিমিটার ওপরে, নিম্নাঞ্চল প্লাবিত ইতালির লাম্পেদুসা উপকূলে নৌকাডুবিতে অন্তত ২০ শরণার্থী ও অভিবাসীর মৃত্যু শিক্ষাবিদ অধ্যাপক যতীন সরকারের মরদেহে সর্বস্তরের শ্রদ্ধা সাংবাদিক তুহিন হত্যার বিচারের দাবিতে নেত্রকোনা জেলা জাতীয়তাবাদী সাংবাদিক ফোরামের আয়োজনে মানববন্ধন কবিতা-মানুষ এক মহাকাব্য আটপাড়ায় জাতীয় ও আন্তর্জাতিক যুব দিবস- .২০২৫ পালিত মদনে গার্ডার ব্রীজ নির্মাণে অনিয়ম:ধসে গেল এ্যাপ্রোচ মদনে স্বামী স্ত্রীকে মারধর রক্তাক্ত জখম করায় থানায় মামলা পৌর উত্তর কাটলী জলাবদ্ধতা নিরসনে ড্রেন নির্মাণের দাবিতে মানববন্ধন
বিশেষ খবর
কলমাকান্দা ব্যবসায়ী মালিক সমিতির নতুন আহবায়ক কমিটি গঠন ফিল্মি স্টাইলে শিক্ষককে তুলে নিয়ে মাথা ফাটাল ছাত্রদল” শিরোনামে প্রকাশিত সংবাদের প্রতিবাদে সাংবাদিক সম্মেলন  অনুপ্রবেশকারী ও সুবিধাভোগীদের বিএনপিতে স্থান হবে না আনিসুজ্জামান বাবু নেত্রকোনায় জাতীয় পরিচয়পত্র (NID) সেবা নির্বাচন কমিশনের অধীনে রাখার দাবিতে মানব-বন্ধন ও সমাবেশ অনুষ্ঠিত ডিসেম্বর অথবা জানুয়ারিতে জাতীয় নির্বাচন আ.লীগের নিবন্ধন থাকবে কিনা, যা বললেন সিইসি নির্বাচন সংশ্লিষ্টদের পেশাদারত্বের সঙ্গে কাজ করতে হবে : সিইসি সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে কাজ করছে ইসি: সিইসি ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় ১০ বছর পর সম্মেলন ঘিরে বিএনপির ব্যাপক প্রস্তুতি ষড়যন্ত্র রুখে ঐক্যবদ্ধ থেকে নির্বাচন আদায় করতে হবে: রুমিন ফারহানা
গোলাম সারোয়ার, ব্যুরো প্রধান ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা / ১৯৯ জন দেখেছেন
আপডেটঃ শুক্রবার, ১৯ মে, ২০২৩

সমস্যার বৃত্তে আন্তর্জাতিক ইমিগ্রেশন চেকপোষ্ট, অসহনীয় দূর্ভোগে দু’দেশের যাত্রী

গোলাম সারোয়ার, ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা ব্যুরো প্রধান
একেতো তীব্র দাবদাহ, অত:পর মাথার উপর নেই কোন বৈদ্যুতিক পাখা। ছোট্ট কক্ষে শত লোকে গাদাগাদি করে চালিয়ে যাচ্ছেন কাজ। বসার কোন সুব্যবস্থা নেই, তাই হাটু গেড়ে বসে আছেন বারান্দায়। আর সে বারান্দায় মূলব্যান লাগেজ ফেলে রেখে সারতে হচ্ছে কাজ।

আশ পাশে নেই কোন সুপেয় পানির টিউবওয়েল। তাই তৃষ্ণা নিবারণে ট্যাংকির পানিই ভরসা। তবে তীব্র গরমে সেই পানিও তপ্ত। কক্ষে শীতাতপ নিয়ন্ত্রণ ব্যবস্থা থাকলেও তা চালানো যাচ্ছে না। দেখে বুঝার কোন উপায় নেই যে, এটি একটি আন্তর্জাতিক ইমিগ্রেশন চেকপোষ্ট।

ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আখাউড়া স্থলবন্দরের ইমিগ্রেশন চেকপোস্টে সরেজমিন গিয়ে দেখা মিলল এমন দৃশ্যের। সেখানে দেখা যায়, নানা সমস্যা ভর করে আছে খুবই সম্ভাবনাময় ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আখাউড়া স্থলবন্দরের ইমিগ্রেশন বিভাগটিকে। প্রতিদিন এ ইমিগ্রেশন চেকপোস্ট দিয়ে সহস্রাধিক ভারত-বাংলাদেশের যাত্রী পারাপার করছে।

তবে ইমিগ্রেশনের এমন নাজেহাল অবস্থার কারণে পারাপার হওয়া  যাত্রীদের দুর্ভোগ চরমে পৌঁছেছে। এই বন্দর দিয়ে যাত্রীদের সংখ্যাও দিনকে দিন বাড়ছে। কিন্তু বাড়ছে না এর সেবার মান। একদিকে ইমিগ্রেশন ভবন অন্যদিকে কাস্টমস ভবন দুই দিকে দু’দফায় গিয়ে সাড়তে হয় ইমিগ্রেশনের কাজ। এছাড়াও এখানে যাত্রীদের পরিষেবায় ব্যাপক ঘাটতি রয়েছে। একতলা বিশিষ্ট তিন রুমের ভবনটির দুটি ছোট রুম ও একটি মাঝারি রুম। একটিতে ইমিগ্রেশন ইনচার্জ বসেন আরেকটি হচ্ছে ব্যারাক। মাঝারি কক্ষটিতে চলে অফিসের কার্যক্রম। পুরাতন ভবনটির বিভিন্ন অংশে এর মধ্যে চিড় ধরে গেছে।

প্রতিদিন যাত্রীর সংখ্যা বৃদ্ধি পাওয়ার ফলে গাদাগাদি করেই চলে কার্যক্রম। এর মধ্যে যাত্রীরা তাদের বহনকারী বিভিন্ন মালপত্র বারান্দায় রেখে দাঁড়িয়ে থাকে। টিনের একটি ছাউনী থাকলেও সেখানে ২০/২৫ বসার চেয়ার রয়েছে কিন্তু কোন টেবিল নেই। ফরম পূরনের জন্য দেখা গেছে কেউ বারান্দার মেঝেতে বসে আবার কেউ কেউ বিদ্যুৎতের জেনারেটরের উপরে কাগজে ফরম পূরণ করছেন। কেউ অসুস্থ হয়ে পড়লে বিশ্রামের জন্যও জায়গা পাচ্ছে না। কক্ষটিতে এসির ব্যবস্থা থাকলেও যাত্রীর ভীড় থাকায় বাইরে পর্যন্ত লম্বা লাইন হচ্ছে। এতে এসিগুলো চালানো সম্ভব হয় না। চলমান তীব্র গরমে বিদ্যুৎ বিভ্রাটের পাশাপাশি প্রয়োজনীয় বৈদ্যুতিক ফ্যানের ব্যবস্থা না থাকায় গরমের মাঝে শত কষ্ট সহ্য করে ইমিগ্রেশনের কাজ শেষ করতে হচ্ছে। তবে বিড়ম্বনা এখানেই শেষ নয়। কাস্টমসের কাজ সারতে পাড়ি দিতে হচ্ছে অন্তত আড়াইশ গজ দূরবর্তী অন্য আরেকটি ভবনে। মূলত এক ভবন ও এক ছাতার নিচে ইমিগ্রেশন ও কাস্টমসের কাজ সারতে না পারায় তাদের দুর্ভোগের মাত্রা আরো বেড়ে যায়।

ভারত থেকে আগত একজন সুমতি রানী বর্মন বলেন, স্বামী ও সন্তান নিয়ে আগরতলা স্থল বন্দর দিয়ে ব্রাহ্মণবাড়িয়া আখাউড়া স্থল বন্দর হয়ে বাংলাদেশে এসেছি। যাত্রাকালে আগরতলা ইমিগ্রেশনে সুষ্ঠ ও স্বাচ্ছন্দ্য ভাবে ইমিগ্রেশনের কাজ শেষ করে এলেও আখাউড়া স্থল বন্দরের ইমিগ্রেশনে এসে রীতিমত অবাক হলাম। নেই বসার জন্য পর্যাপ্ত ব্যবস্থা। ইমিগ্রেশনের কাজ শেষ করতে গাদাগাদি করে লাইনে দাঁড়ালেও ছোট কক্ষটিতে নেই কোন ফ্যানের ব্যবস্থা। হঠাৎ ১২ বছরের বয়সের ছেলে অসুস্থ হয়ে পড়লে সেবা শুশ্রুষা করার জন্য কোন স্থান না পেয়ে ইমিগ্রেশন ভবনের এক কোনায় বসে তার সেবা যত্ন করি। আশে পাশে ছিল না কোন টিউবওয়েল। কপালে যাও ট্যাংকির পানি জুটেছে তাও রৌদ্রের দাপদাহে তপ্ত। তা দিয়েই ছেলেকে সুস্থ করে তোলার কাজ চালিয়ে গেছি। আমি আশা করব বাংলাদেশ সরকার দু’দেশের যাত্রীদের কথা বিবেচনায় এনে ইমিগ্রেশনের স্বার্বিক কার্যক্রমকে আরো উন্নত করতে সচেষ্ট হবে।

সাবিনা খান নামে এক যাত্রী বলেন, বর্তমানে আখাউড়া ইমিগ্রেশন ভবন নামেমাত্র টিকে আছে। জোড়া তালি দিয়ে সংস্কার করে কোনোমতে, ঝুঁকি নিয়ে গুরুত্বপূর্ণ কাজ করা হচ্ছে। কোন মালপত্র সাথে নিয়ে আসলে রাখার জায়গা পাই না। আরেকজনের কাছে পাহারা দিয়ে রাখতে হয়। বছরের কয়েকবার যেতে হয়। স্থায়ী ভবন তৈরি হলে এক ছাতার নিচে সকল পরিষেবা পাওয়া গেলে বাংলাদেশ-ভারত দুই দেশের নাগরিকের পাশাপাশি বিদেশিদের আসা যাওয়া আরও বেড়ে যাবে। এবং যাত্রীদের দীর্ঘদিনের দুর্ভোগ লাঘব হবে।

খোঁজ নিয়ে জানা যায়, ১৯৯৪ সালে চালু হয় আখাউড়া স্থলবন্দের কার্যক্রম। সুবিধাজনক ভৌগলিক অবস্থান হওয়াই এ বন্দর দিয়ে যাত্রী পারাপারের সংখ্যা দিন দিন বাড়ছে। তাই ব্রাহ্মণবাড়িয়া, কুমিল্লা, ফেনী, চট্টগ্রাম, ঢাকা ও সিলেট থেকে অনেকেই যাতায়াতে আখাউড়া ইমিগ্রেশন ব্যবহার করছেন।

কাস্টমস সূত্র জানায়, এ ইমিগ্রেশন ব্যবহার করে প্রতিদিন অত্যন্ত এক হাজার যাত্রী দু’দেশে পারাপার করছে। এর মধ্যে পাঁচ শতাধিক যাত্রী ভারতে বর্হিগমন করছেন। যা থেকে প্রতিমাসে ৭৫ লক্ষ টাকা সরকারের আয় হয়ে থাকে। বিগত ছয় মাসে ৪ কোটি ৫০ লক্ষ টাকা রাজস্ব আয় হয়েছে। এদিকে ২০১৬ সালের ডিসেম্বর মাসে আখাউড়া চেকপোস্ট ইমিগ্রেশন আধুনিক ভবন নির্মানের কাজ শুরু হলেও ২০১৭ ও ২০১৯ সালে সীমান্ত আইনের অজুহাতে বিএসএফ নির্মাণ কাজ বন্ধ করে দেয়।

জেলা পুলিশ সুপার মোঃ শাখাওয়াত হোসেন বলেন, আখাউড়া ইমিগ্রেশন চেকপোস্ট দিয়ে প্রতিদিন এক হাজারেরও বেশী যাত্রী পারাপার করছে। তবে ইমিগ্রেশন কার্যক্রম সারতে যে ধরনের সুযোগ সুবিধা তা খুবই অপ্রতুল। নতুন ইমিগ্রেশন ভবনের নির্মাণ কাজ সম্পূর্ণ হলে দু’দেশের সেবার মান আরো বৃদ্ধি পাবে।

এ ব্যাপারে জেলা প্রশাসক মো: শাহগীর আলম বলেন, এ ইমিগ্রেশন দিয়ে দু,দেশের বিপুল সংখ্যাক যাত্রী পারাপার করলেও ইমিগ্রেশন ও কাস্টমসের পর্যাপ্ত সুবিধার কমতি রয়েছে। আমাদের নতুন একটি ইমিগ্রেশন ভবন নির্মাণের কাজ চলছিল তা বিএসএফের বাঁধায় বন্ধ হয়ে যায়। তবে সাম্প্রতিক সময়ে ভারত ও বাংলাদেশের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মধ্যে কথা হয়েছে। পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় থেকে অনুমতি পেলে আমরা ভবনটির কাজ আবার শুরু করতে পারব।

তিনি আরো বলেন, নৌ পরিবহন মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে এখানে একটি আধুনিক স্থল বন্দর নিমার্ণের উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়েছে। এরই অংশ হিসেবে ৩.৫৭ একর জায়গা অধিগ্রহণের কাজ হাতে নিয়েছি। আমরা এক দেড় মাসের মধ্যে অধিগ্রহণ প্রক্রিয়া শেষ হয়ে যাবে। তখন স্থল বন্দর, ইমিগ্রেশন ও কাস্টমসসহ বন্দর সংশ্লিষ্ট সকল কার্যক্রম আরো বেগবান হবে। এবং যাত্রীদের পরিষেবা আরো উন্নতি হবে।


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এই বিষয়ের আরও খবর
August 2025
S S M T W T F
 12
3456789
10111213141516
17181920212223
24252627282930
31  

Categories