
ধর্মপাশা ( সুনামগঞ্জ) প্রতিনিধিঃ
সুনামগঞ্জের ধর্মপাশার জয়শ্রী আওয়ামী লীগের কার্যালয়ে হামলা, ভাংচুরসহ নির্বাচনী আচরণবিধি
লঙ্ঘনের অভিযোগে সুনামগঞ্জ-১ [
ধর্মপাশা, জামালগঞ্জ,তাহিরপুর ও
মধ্যনগর ] আসনে দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের স্বতন্ত্র প্রার্থী ও সাবেক সংসদ সদস্য মোয়াজ্জেম হোসেন রতন ,সহ ছয়জন আসামি গতকাল বুধবার ছয় সপ্তাহের জন্য উচ্চ আদালত থেকে আগাম জামিন পেয়েছেন।
ইসির নির্দেশে গত ৬জানুয়ারি ধর্মপাশা থানায়এই মামলাটি করেন ধর্মপাশা উপজেলা নির্বাচন কর্মকর্তা মোহাম্মদ মঞ্জুরুল হক। নির্বাচন কমিশন থেকে গত ৫জানুয়ারি কমিশনের উপসচিব [ আইন ] মো. আব্দুছ সালাম স্বাক্ষরিতএক চিঠিতে ধর্মপাশা উপজেলা নির্বাচন কর্মকর্তাকে এই মামলা দায়ের নির্দেশনা দেওয়া হয়। গত ২৭ ডিসেম্বর সন্ধ্যায়
সুনামগঞ্জ-১ আসনের ধর্মপাশা
উপজেলার জয়শ্রী ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের দলীয় কার্যালয়ে স্বতন্ত্র প্রার্থী সাবেক সংসদ সদস্য মোয়াজ্জেম হোসেন রতনের নেতৃত্বে হামলা ও ভাংচুরের ঘটনা ঘটে। পরদিন ২৮ ডিসেম্বর সুনামগঞ্জ-১ আসনের নির্বাচন অনুসন্ধান কমিটির চেয়ারম্যান ও
সুনামগঞ্জের সিনিয়র সহকারী জজ
প্রবাল চক্রবর্তী কাছে এ বিষয়ে লিখিত অভিযোগ দেন ধর্মপাশা উপজেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক শামীম আহমেদ মুরাদ। অনুসন্ধান কমিটির কারণ দর্শাণেরা নোটিশের প্রেক্ষিতে ৩১ ডিসেম্বর মোয়াজ্জেম হোসেন রতন কমিটির কাছে জবাব দেন। একই দিন অভিযোগকারীর সাক্ষ্য গ্রহণ করে অনুসন্ধান কমিটি। পরে নির্বাচন কমিশনে এ বিষয়ে প্রতিবেদন দেন অনুসন্ধান কমিটির চেয়ারম্যান,নির্বাচন কমিশন থেকে ধর্মপাশা উপজেলা নির্বাচন কর্মকর্তাকে দেওয়া নির্দেশনা পত্রে বলা হয়েছে, সুনামগঞ্জ-১ নির্বাচনী এলাকার স্বতন্ত্র প্রার্থী মোয়াজ্জেম হোসেন রতনসহ নূরে আলম নুরু, আবুল কাশেম, আবুল হাসেম, মোজাহিদ ও তোফায়েল নামের ব্যক্তিগণ ২৭ডিসেম্বর সন্ধ্যা সাতটায় ধর্মপাশা উপজেলার জয়শ্রী ইউনিয়নে
আওয়ামী লীগের দলীয় কার্যালয়ে বসে থাকা কর্মীদের ওপর হামলা চালান। তাঁদের স্মার্টফোন ভেঙে ফেলেন। নৌকার ব্যানার, পোস্টার ছিঁড়ে ফেলেন। নৌকার নির্বাচনী কার্যালয়ের চেয়ার-টেবিল ভাঙচুর এবং নৌকার সমর্থকদের অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করেন। তাঁদের কিল-ঘুষি ও গলা টিপে ধরাসহ প্রাণনাশের হুমকি প্রদান করেন। ফলে এসব ব্যক্তিরা গণপ্রতিনিধিত্ব আদেশ ১৯৭২ এর অনুচ্ছেদ ৭৭ এর সংসদ নির্বাচনে রাজনৈতিক দল ও প্রার্থীর আরচরণ বিধিমালা ২০০৮ এর বিধি ৭ [২] এর বিধাণ লঙ্ঘন করেছেন বলে সংশ্লিষ্ট নির্বাচনী অনুসন্ধান কমিটি নির্বাচন কমিশনে প্রতিবেদন দাখিল করেন। এ অবস্থায় অভিযুক্ত ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে আমলযোগ্য অপরাধ বিবেচনায় উক্ত আদেশের অনুচ্ছেদ ৭৩ ও বর্ণিত বিধিমালার বিধি ১৮ এর অধীনে সংশ্লিষ্ট থানায় এজহার দায়ের করার জন্য সংশ্লিষ্ট উপজেলা নির্বাচন কর্মকর্তাকে নির্দেশনা দেওয়ার বিষয়ে কমিশন সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেছেন। নির্দেশনায় সুনামগঞ্জের পুলিশ সুপারকে এহজার দায়েরের বিষয়টি নিশ্চিত করে এজহারের অনুলিপি নির্বাচন কমিশনকে ২৪ ঘণ্টার মধ্যে অবহিত করার অনুরোধ জানানো হয়।
গত ৭জানুয়ারি অনুষ্ঠিত দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে সুনামগঞ্জ -১ আসনে এবার প্রার্থী ছিলেন আটজন। এর মধ্যে আওয়ামী লীগের প্রার্থী ছিলেন এডভোকেট রনজিত চন্দ্র সরকার। এখানে নৌকা না পেয়ে স্বতন্ত্র প্রার্থী হয়েছিলেন এই আসনে টানা তিনবার নির্বাচিত সংসদ সদস্য মোয়াজ্জেম হোসেন রতন (কেটলি) ও দলের আরেক নেতা সেলিম আহমদ [ ঈগল ]। অন্য প্রার্থীরা ছিলেন বাংলাদেশ কংগ্রেসের নবাব সালেহ আহমদ, জাতীয় পার্টির আবদুল মান্নান তালুকদার, তৃণমূল বিএনপির মো. আশরাফ আলী, গণফ্রন্টের মো. জাহানুর রশিদ ও বাংলাদেশ সুপ্রীম পার্টির (বিএসপি) মো. হারিছ মিয়া।
সাবেক সংসদ সদস্য মোয়াজ্জেম হোসেন রতনের ঘনিষ্ঠজন হিসেবে পরিচিত পাইকুরাটি ইউনিয়ন পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান ফেরদৌসুর রহমান উচ্চ আদালত থেকে সাবেক সংসদ
সদস্যসহ মামলার ছয়জন আসামি ছয় সপ্তাহের জন্য আগাম জামিন পাওয়ার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা ধর্মপাশা থানার এসআই আবদুস সবুর বলেন,আচরণ বিধি লঙ্ঘনের অভিযোগে দায়ের করা মামলার
ছয়জন আসামি উচ্চ আদালত থেকে ছয় সপ্তাহের জন্য আগাম জামিন পেয়োছেন বলে আমি খবর পেয়েছি।
