• ঢাকা, বাংলাদেশ বুধবার, ১৩ অগাস্ট ২০২৫, ১০:১২ অপরাহ্ন
  • [কনভাটার]
সর্বশেষ খবর
কবিতা-মানুষ এক মহাকাব্য আটপাড়ায় জাতীয় ও আন্তর্জাতিক যুব দিবস- .২০২৫ পালিত মদনে গার্ডার ব্রীজ নির্মাণে অনিয়ম:ধসে গেল এ্যাপ্রোচ মদনে স্বামী স্ত্রীকে মারধর রক্তাক্ত জখম করায় থানায় মামলা পৌর উত্তর কাটলী জলাবদ্ধতা নিরসনে ড্রেন নির্মাণের দাবিতে মানববন্ধন মুফতি ফয়জুল করিমের আগমন উপলক্ষে নেত্রকোনায় ইসলামী আন্দোলনের সংবাদ সম্মেলন স্বাধীনতা ও বাংলা একাডেমি পুরস্কারপ্রাপ্ত অধ্যাপক যতীন সরকার মারা গেছেন লেবানন বিদেশী হস্তক্ষেপ প্রত্যাখ্যান করেছে, প্রেসিডেন্ট ইরানের কর্মকর্তাকে জানালেন ক্লিনটন থেকে ট্রাম্প কিভাবে পুতিন মার্কিন প্রেসিডেন্টদের সঙ্গে সাক্ষাৎ ও কূটনীতি করেছেন বাংলাদেশি কর্মকর্তারা দুর্নীতি মামলায় টিউলিপ সিদ্দিকের বিরুদ্ধে সাক্ষ্য দিয়েছেন
বিশেষ খবর
কলমাকান্দা ব্যবসায়ী মালিক সমিতির নতুন আহবায়ক কমিটি গঠন ফিল্মি স্টাইলে শিক্ষককে তুলে নিয়ে মাথা ফাটাল ছাত্রদল” শিরোনামে প্রকাশিত সংবাদের প্রতিবাদে সাংবাদিক সম্মেলন  অনুপ্রবেশকারী ও সুবিধাভোগীদের বিএনপিতে স্থান হবে না আনিসুজ্জামান বাবু নেত্রকোনায় জাতীয় পরিচয়পত্র (NID) সেবা নির্বাচন কমিশনের অধীনে রাখার দাবিতে মানব-বন্ধন ও সমাবেশ অনুষ্ঠিত ডিসেম্বর অথবা জানুয়ারিতে জাতীয় নির্বাচন আ.লীগের নিবন্ধন থাকবে কিনা, যা বললেন সিইসি নির্বাচন সংশ্লিষ্টদের পেশাদারত্বের সঙ্গে কাজ করতে হবে : সিইসি সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে কাজ করছে ইসি: সিইসি ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় ১০ বছর পর সম্মেলন ঘিরে বিএনপির ব্যাপক প্রস্তুতি ষড়যন্ত্র রুখে ঐক্যবদ্ধ থেকে নির্বাচন আদায় করতে হবে: রুমিন ফারহানা
মাহমুদুল্লাহ রিয়াদ (ময়মনসিংহ ব্যুরো)  / ২১৮ জন দেখেছেন
আপডেটঃ শনিবার, ৮ জুন, ২০২৪

ময়মনসিংহ পাসপোর্ট অফিসে দালাল ছাড়া মিলে না সেবা

ময়মনসিংহ পাসপোর্ট অফিসে

মাহমুদুল্লাহ রিয়াদ (ময়মনসিংহ ব্যুরো)
ঘুষ আর নানা অনিয়ম দুর্নীতির আখড়ায় পরিণত হয়েছে ময়মনসিংহের আঞ্চলিক পাসপোর্ট অফিস। ভুক্তভোগীদের অভিযোগ, দালাল আর ঘুষ ছাড়া কোন সেবাই মিলছে না। দালাল ডিঙ্গিয়ে কেউ পাসপোর্টের আবেদন জমা দিতে গেলে তাকে পদে পদে হয়রানির শিকার হতে হয়। ফলে পাসপোর্ট প্রত্যাশীদের বাধ্য হয়েই দালালদের শরণাপন্ন হতে হচ্ছে। আর দালালদের সঙ্গে আতাত করেই পাসপোর্ট অফিসের কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের সিন্ডিকেট ঘুষ বাণিজ্যের বিশাল নেটওয়ার্ক গড়ে তুলেছে। এর সঙ্গে জড়িয়ে পড়েছে একশ্রেণীর পাসপোর্ট অফিসের কর্তব্যরত পুলিশ ও আনসার সদস্যরাও। দালাল নিয়োগ দিয়ে প্রতিদিন প্রকাশ্যে ওপেন সিক্রেট চলছে এই ঘুষ কমিশনের কারবার। সংশ্লিষ্টদের দাবি প্রতিমাসে ঘুষ লেনদেনের এই অঙ্ক ৫০ লাখ টাকার ওপরে। বিভিন্ন রেট অনুযায়ী যার যার ভাগ যথাসময়ে পৌঁছে যায় প্রধান কার্যালয়ের পদস্থ কর্মকর্তাদের পকেটসহ নানা মহলে। এসবের বাইরে রয়েছে পাসপোর্ট প্রিন্ট বাণিজ্য। পাসপোর্ট বইয়ের সঙ্কটকে পুঁজি করে অফিসের এক কর্মকর্তা চাহিদার ঘুষ নিয়ে দেদার এই বাণিজ্য চালিয়ে যাচ্ছে। সরকারের স্থানীয় গোয়েন্দা সংস্থাসহ দুর্নীতি দমন কমিশন দুদকের কাছেও রয়েছে ঘুষ কমিশনের এসব খবর।ময়মনসিংহ আঞ্চলিক পাসপোর্ট কার্যালয়ে নিয়ম মেনে পাসপোর্টের আবেদন ফরম পূরণ করে জমা দিলে ত্রুটি দেখিয়ে বাতিল করে দেওয়া হচ্ছে। সেখানে দালাল থাকলেও বদলে গেছে দালালির ধরন। কম্পিউটারের দোকানে অতিরিক্ত টাকা বা ঘুষ দিয়ে আবেদন ফরম জমা দিলে ‘চ্যানেল ফাইল’ হিসেবে সহজে মিলছে পাসপোর্ট। অনিয়ম–দুর্নীতি যেন এখানে নিয়ম ও নিয়মিত ঘটনায় পরিণত হয়েছে। ফলে সাধারণ মানুষকে পদে পদে হয়রানির শিকার হতে হচ্ছে।
হাশেম আলীর বাড়ি ময়মনসিংহের ফুলপুর উপজেলার বালিয়া গ্রামে। নিজের পাসপোর্টের আবেদন ফরম জমা দিতে তিনি দাঁড়িয়ে ছিলেন ময়মনসিংহ আঞ্চলিক পাসপোর্ট কার্যালয়ে। তাঁর কাগজপত্র ঘেঁটে দেখা যায়, ময়মনসিংহ সিটি করপোরেশনের আওতায় একটি ‘জাতীয়তা ও চারিত্রিক প্রশংসাপত্র’। সেখানে শুধু হাশেম আলীর নাম, তাঁর বাবার নাম ও মায়ের নাম লেখা। হাশেম আলী কোন ওয়ার্ডের বা কোন মহল্লার বাসিন্দা সেসব ঘর ফাঁকা। জাতীয়তা ও চারিত্রিক প্রশংসাপত্র নামের ফরমের নিচে কোনো কর্মকর্তার পরিচয় ছাড়া শুধু একটি আনকোরা হাতের স্বাক্ষর করা।জাতীয়তা ও চারিত্রিক প্রশংসাপত্র নামের উদ্ভূত রকমের ফরমটির ক্রমিক নম্বরের পাশে ফাঁকা স্থানে হাতে লেখা একটি বিশেষ ‘কোড’। সেই কোডে বড় হাতের তিনটি ইংরেজি বর্ণ লেখা। এরপর ইংরেজিতে লেখা সংখ্যা (৫৩)। কোডটি পাসপোর্টের দালালের পক্ষ থেকে দেওয়া হয়। এ কোড দেখে পাসপোর্ট অফিসের ফরম জমা নেওয়া কর্মচারী কোনো প্রকার যাচাই-বাছাই ছাড়াই আবেদনটি জমা নিয়ে নিলেন। ৪ মে বেলা পৌনে একটার দিকে ময়মনসিংহ আঞ্চলিক পাসপোর্ট অফিসে এমন ঘটনা ঘটে।এর কিছুক্ষণ আগে আবেদন জমা দিতে না পেরে হতাশ হয়ে বের হন ময়মনসিংহ সদর উপজেলার চুরখাই এলাকার তরুণ সাব্বির আহমেদ। তাঁর আবেদনটি ‘ত্রুটি’ থাকায় জমা নেওয়া হয়নি। এরপর সাব্বির আহমেদ তাঁর দুই বন্ধুকে সঙ্গে নিয়ে কার্যালয়ের বাইরে একটি দোকানে যান দালাল ধরতে। সাব্বির আহমেদ বলেন, ‘আমার সব কাগজ ঠিকই ছিল। তবে জমা না নিয়ে পরের দিন যেতে বলল।এখন প্রতিটি দোকান থেকে চ্যানেল ফাইল করে দেওয়া হয়। বিনিময়ে গ্রাহকদের কাছ থেকে সরকার নির্ধারিত খরচের চেয়ে ৫ হাজার ৫০০ টাকা করে বেশি নেওয়া হয়। এ টাকার মধ্যে ১ হাজার ২০০ টাকা দেওয়া হয় পাসপোর্ট কার্যালয়ে। বাকি টাকা দালালদের পকেটে।
ময়মনসিংহ নগরের মাসকান্দা এলাকায় অবস্থিত আঞ্চলিক পাসপোর্ট কার্যালয়ের সামনে আছে অন্তত ৩০টি দোকান। এসব দোকানে প্রকাশ্যে কম্পিউটার কম্পোজ, ফটোকপি ও অনলাইনে পাসপোর্টের আবেদন করা হয়। আর গোপনে প্রায় সব দোকান থেকেই পাসপোর্ট অফিসের দালাল হিসেবে কাজ করা হয়। পাসপোর্টের আবেদন জমা দিতে গ্রামের লোকজন আশামাত্রই পড়ে যান দালালদের খপ্পরে। দালালদের মাধ্যমে জমা দেওয়া পাসপোর্টের আবেদন ফরমকে বলা হয় ‘চ্যানেল ফাইল’। চ্যানেল ফাইলের বিষয়ে কথা হয় তিনজন দালালের সঙ্গে। শুরুতে তাঁরা এ বিষয়ে মুখ খুলতে রাজি হননি।
পরে নাম প্রকাশ না করার শর্তে তাঁরা বলেন, পাসপোর্ট অফিসের এ ধরনের দালালির বিষয়টি মোটামুটি ‘ওপেন সিক্রেট’। আগে দালালেরা পাসপোর্ট অফিসের সামনে ঘুরে ঘুরে গ্রাহক ধরতেন। তবে প্রশাসনের পক্ষ থেকে মাঝেমধ্যে অভিযানের কারণে এখন দালালির ধরন বদলে গেছে। এখন প্রতিটি দোকান থেকে চ্যানেল ফাইল করে দেওয়া হয়। বিনিময়ে গ্রাহকদের কাছ থেকে সরকার নির্ধারিত খরচের চেয়ে ৫ হাজার ৫০০ টাকা করে বেশি নেওয়া হয়। এ টাকার মধ্যে ১ হাজার ২০০ টাকা দেওয়া হয় পাসপোর্ট কার্যালয়ে। বাকি টাকা দালালদের পকেটে। এভাবে ময়মনসিংহ পাসপোর্ট অফিসে প্রতিদিন অন্তত পাঁচ লাখ টাকা হাতিয়ে নেওয়া হচ্ছে সাধারণ মানুষের কাছ থেকে।চ্যালেন ফাইলটি করা হয় অত্যন্ত কৌশলে। আবেদনের কাগজপত্রের সঙ্গে ময়মনসিংহ সিটি করপোরেশনের নামে করা ভুয়া জাতীয়তা ও চারিত্রিক প্রশংসাপত্র জুড়ে দেওয়া হয়। সেখানে দেওয়া হয় সেই বিশেষ কোড। কোড দেখেই আবেদন গ্রহণকারী কর্মচারী বুঝতে পারেন, এটি কার দালালিতে এসেছে। পরে যাচাই-বাছাই ছাড়াই জমা নেওয়া হয়। ওই তিন দালাল আরও বলেন, এভাবে কোড নম্বর দেওয়া আবেদন ফরমগুলোর প্রতিদিন হিসাব রাখা হয় পাসপোর্ট কার্যালয়ের পক্ষ থেকে। পরে সপ্তাহের প্রতি বুধবার হিসাব অনুযায়ী, টাকা গ্রহণ করে থাকেন পাসপোর্ট অফিসের একজন কর্মচারী।গত ৩ দিন ময়মনসিংহ আঞ্চলিক পাসপোর্ট অফিসে গিয়ে পাওয়া যায়নি উপপরিচালক মোরাদ চৌধুরীকে। তবে গত মঙ্গলবার দুপুরে কার্যালয়ে গিয়ে কথা হয় মোরাদ চৌধুরীর সঙ্গে। তিনি বলেন, কার্যালয়ের বাইরে কিছু দালাল শ্রেণির লোক থাকেন। এসব লোকের ব্যাপারে পাসপোর্ট করতে আসা মানুষদের সতর্ক থাকতে বলা হয়। তবে সিটি করপোরেশনের নামে ভুয়া জাতীয়তা ও চারিত্রিক প্রশংসাপত্র সনদে কোড নম্বর দেওয়ার বিষয়টি তিনি জানেন না। পাসপোর্ট অফিসের কোনো কর্মী এ জন্য টাকা নেন কি না, এসবও তিনি জানেন না। তবে এ বিষয়ে তিনি খোঁজ নিয়ে দেখবেন।


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এই বিষয়ের আরও খবর
August 2025
S S M T W T F
 12
3456789
10111213141516
17181920212223
24252627282930
31  

Categories