নিজস্ব প্রতিবেদক: শান্তিতে নোবেলজয়ী অর্থনীতিবিদ ড. মুহাম্মদ ইউনূস বলেন, ‘শেখ হাসিনা তার পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের লিগ্যাসি ধ্বংস করেছেন। বিক্ষোভকারীদের সহিংসতা ও ভাঙচুর শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে ক্ষোভের বহিঃপ্রকাশ এবং তিনি যে ক্ষতি করেছেন তার বহিঃপ্রকাশ।’

কয়েক সপ্তাহ ধরে চলা সহিংস আন্দোলনের মুখে সোমবার প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার পদত্যাগের পর বাংলাদেশকে একটি ‘মুক্ত দেশ’ হিসেবে ঘোষণা করেছেন শান্তিতে নোবেলজয়ী অর্থনীতিবিদ ড. মুহাম্মদ ইউনূস।

দ্য প্রিন্টকে দেয়া এক সাক্ষাৎকারে ড. ইউনূস বলেন, ‘তিনি (শেখ হাসিনা) যতদিন ছিলেন, ততদিন একটা দখল হওয়া দেশের নাগরিক ছিলাম আমরা। তিনি একটি দখলদার বাহিনীর মতো, একজন স্বৈরশাসকের মতো, একজন জেনারেলের মতো আচরণ করছিলেন। সবকিছু নিয়ন্ত্রণ করছিলেন। আজ বাংলাদেশের সব মানুষ নিজেদের স্বাধীন মনে করছে।’

আওয়ামী লীগ সরকারের ১৯০টিরও বেশি অভিযোগের মুখোমুখি হওয়া ড. ইউনূস শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে তার পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ‘লিগ্যাসি’ ধ্বংসের অভিযোগ করেছেন। তিনি বলেন, ‘বিক্ষোভকারীদের সহিংসতা ও ভাঙচুর শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে ক্ষোভের বহিঃপ্রকাশ এবং তিনি যে ক্ষতি করেছেন তার বহিঃপ্রকাশ।’

একই শিক্ষার্থী এবং তরুণরাই ভবিষ্যতে বাংলাদেশকে সঠিক পথে নিয়ে যাবে বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেন ড. ইউনূস।

জাতীয় নির্বাচনে ধারাবাহিক কারচুপির কারণে শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে পুঞ্জীভূত ক্ষোভ রাজনৈতিকভাবে প্রকাশ করা যায়নি উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘এই ক্ষোভ কোটা পরিবর্তনের সাধারণ দাবি হিসেবে সামনে আসে। সরকার তাদের কথা শোনার পরিবর্তে আক্রমণ করেছিল। সে কারণে এই আন্দোলন আরও ছড়িয়ে পড়ে।

বর্তমানে জামিনে থাকা ইউনূস বাংলাদেশে একটি সুষ্ঠু সাধারণ নির্বাচন হলে উল্লেখযোগ্য পরিবর্তন দেখতে পাবেন বলে আশা করছেন। বাংলাদেশিদের অতীতের ভুল থেকে সতর্ক থাকা এবং গণতান্ত্রিক মূল্যবোধ মেনে চলার পরামর্শ দেন তিনি।

ড. ইউনূস বলেন, ‘যতক্ষণ আমরা এটা আঁকড়ে থাকব, ততক্ষণ একটি শক্তিশালী দেশ থাকবে। আমরা একটি সুন্দর দেশ হতে পারি।’

বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের অন্যতম সমন্বয়ক নাহিদ ইসলাম এর আগে সোমবার গভীর রাতে এক ভিডিও বার্তায় ঘোষণা দেন, ড. ইউনূস একটি অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের নেতৃত্ব দিতে সম্মত হয়েছেন। মঙ্গলবার সকালে প্রস্তাবিত অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের সদস্যদের পূর্ণাঙ্গ তালিকা প্রকাশ করা হবে বলেও ওই বার্তায় জানান তিনি।