এবার নওগাঁ জেলার পর,
সুনামগঞ্জের মধ্যনগরে বিষ প্রয়োগে বংশীকুন্ডা দঃ ইউনিয়নের চরচরিয়া(চরচইট্টা) বিল নামে একটি বিলের সব মাছ নিধনের অভিযোগ উঠেছে। এতে প্রায় ৬ লক্ষ টাকার ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে বলে দাবি বিল মালিকের।
এ ঘটনায় দুইজনকে অভিযুক্ত করে মঙ্গলবার (১৫ ফেব্রুয়ারী ) কলমাকান্দা থানা ও মধ্যনগর থানায় দুটি লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছেন ভুক্তভোগী বিল মালিক আশ্রফ আলীর স্ত্রী বর্তমান ইউপি সদস্য মোছা: রহিমা বেগম।
অভিযুক্তরা হলেন- কলমাকান্দা উপজেলার রংছাতী ইউনিয়নের গজারিকান্দা গ্রামের মৃত মুকসুদ মিয়ার ছেলে মো. সুরুজ আলী (৪৫) ও একই এলাকার হাছান আলীর ছেলে মো: ফজর আলী (৪০)।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়,মধ্যনগর উপজেলার বংশীকুন্ডা দঃ ইউনিয়নের অন্তর্ভুক্ত এ বিলটি বিগত দিন ধরে গড়াকাটা গ্রামের সমাজ বাসী মসজিদ মাদ্রাসার নামে ভোগ করে আসছে।প্রতি বছরই এই বিলটি গড়াকাটা মসজিদ ও মাদ্রাসার উন্নয়নের জন্য এই বিলের মাছ বিক্রি করে অর্থ সংগ্রহ করে মসজিদ মাদ্রাসার উন্নয়ন ও এতিম বাচ্চাদের কাজে ব্যয় করেন।এরই ধারাবাহিকতায় গত বছর এই বিলটি ফিশিং করার জন্য ইজারা দেওয়া হয় পাশ্ববর্তী উপজেলা কলমাকান্দার রংছাতী ইউনিয়নের সাবেক ইউপি সদস্য মো: আশ্রব আলীর কাছে।এতেই ক্ষিপ্ত হয় অভিযুক্ত সুরুজ আলী ও তার দলের লোক এহেন কর্মকান্ড ঘটিয়েছে বলে স্থানীয়রা ধারনা করছে। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক কয়েক জনের সাথে কথা বলে জানা যায় অভিযুক্ত সুরুজ আলী এলাকায় প্রভাব বিস্তার করে এহেন অনেক ঘৃণিত কর্মকান্ড করে আসছে।ভয়ে মানুষ তার বিরুদ্ধে কথা বলতে পারে না মামলার ভয়ে। এর আগেও অভিযুক্ত সুরুজ আলী প্রভাব খাটিয়ে এলাকার ডোবা ও নালা লিজ আনার নাম করে সাধারণ মানুষের সাথে প্রতারণা করেছে।স্থানীয়দের সাথে কথা বলে আরও জানা যায়,সুদের ব্যবসা করে মোটা অংকের টাকা ইনকাম করায় সে এলাকার স্থানীয় গন্যমান্য ব্যক্তিবর্গদের তুচ্ছ তাচ্ছিল্য করে যা ইচ্ছা তাই করে বেড়ায়।প্রতিবাদ করতে গেলে উল্টো মামলা ও হামলা ভয় দেখিয়ে জিম্মি করে রাখে।নিরীহ মানুষদের টার্গেট করে তাদের ক্ষতি সাধন করার লক্ষে বিভিন্ন উপায়ে চোর,ডাকাত ও সন্ত্রাস ধারা হুমকি দামকি দিয়ে ভুমি বেদখল, ডোবা ও নালা দখল সহ,নিরীহ মানুষকে ফাঁদে ফেলে মোটা অংকের টাকা আদায় করে।একই গ্রামের আর এক ভুক্তভোগী বলেন,গত বছর আমার জমিতে পানি সেঁচ দেওয়া জন্য আমার জমির পাশ্ববর্তী ডোবা থেকে পানি ছাড়লে সে আমার বিরুদ্ধে তার লিজ নেওয়া ডোবা দাবি করে আমি নাকি তার ৫ লক্ষ টাকার মাছের রেনু নষ্ট করেছি এই কথা বলে মিথ্যা মামলা দায়ের করে।পরে এলাকার এক স্থানীয় মেম্বারের মাধ্যমে বিষয় টি মিমাংসা হয়।এছাড়া তার বিরুদ্ধে কেউ কোন প্রতিবাদ করলে চোর ডাকাত দিয়ে হুমকি দামকি দেয়।
গোপন সংবাদের ভিত্তিতে জানা যায়, এলাকায় অনেকে তাকে গরু চোরের সর্দার বলেও দাবি করে।এমন কি তার ইশারাতে এমন অনেক কারসাজি হয় বলে জানা যায়। স্থানীয়রা সুষ্ঠু তদন্তের সাপেক্ষে দোষী ব্যক্তিদের কঠোর শাস্তি দাবি করেন।
লিখিত অভিযোগ সূত্রে জানা যায়, গতবছর চরচরিয়া বিল ফিশিং করার জন্য বিলের মালিক বিলটি ডাকে নেয়। গত একবছর ধরে বিলটি দেখাশোনা সহ মাছের খাবার ও মাছের পোনা ছেড়ে বিলটিতে মাছ চাষ করে আসছিলেন। গত ১৫ ফেব্রুয়ারী সকালে স্থানীয় বাসিন্দাদের মারফত জানতে পায় বিলের সমস্থ মাছ মরে ভেসে উঠছে। খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে গিয়ে বিল মালিক সহ অনেকেই দেখতে পান বিষ প্রয়োগের কারণে সব মাছ মরে বিলের ওপর ভেসে উঠেছে।
এ বিষয়ে ভুক্তভোগী বিল মালিক আশ্রফ আলী বলেন,গত ১৪ ফেব্রুয়ারী আমার লিজ নেওয়া বিলে তারা অহেতুক ঘুরাঘুরি করে তা অনেকেই দেখতে পায়। ঠীক তার পরের দিন ১৫ ফেব্রুয়ারী স্থানীয় কয়েকজন আমার কাছে খবর পাঠায় যে বিলে বিষ দিয়েছে সমস্থ মাছ মরে ভেসে উঠছে। বিল মালিক দাবি করেন অভিযুক্ত সুরুজ ও তার সঙ্গী ফজর তারা সমাজের খারাপ লোক তারা শত্রুতার জের ধরে আমার বিলে বিষ প্রয়োগ করে আমার বিলের সমস্থ মাছ মেরে ফেলেছে।বিলে বিষ প্রয়োগ করায় মাছের প্রজননেরও ক্ষতি হয়েছে। এতে অন্তত ৬ লাখ টাকার ক্ষতি হয়েছে। আমি এর সুষ্ঠু বিচার চাই।
এ বিষয়ে মধ্যনগর থানার ভারপ্রাপ্ত অফিসার ইনচার্জ (ওসি ) জাহিদুল হক বলেন, ওই ঘটনায় লিখিত অভিযোগ পেয়েছি। প্রাথমিক তদন্ত শেষে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
এছাড়া কলমাকান্দা থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মো: আব্দুল আহাদ খান বলেন,লিখিত অভিযোগ পেয়েছে যেহেতু ঘটনাস্থল মধ্যনগর থানার আওতাধীন সুতরাং এ বিষয় টি মধ্যনগর থানা পুলিশ প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করবেন।