সুনামগঞ্জ জেলার ধর্মপাশা উপজেলার জয়শ্রী ইউনিয়নের জয়শ্রী খাদ্যগুদামের জায়গা ও বাজারের খাস জায়গা অবৈধভাবে দখল করতে ব্যস্ত হয়ে উঠেছে স্থানীয় প্রভাবশালী মহল। খাস জায়গা একের পর এক দখল হয়ে যাচ্ছে। গড়ে উঠেছে স্থায়ী পাকা স্থাপনা ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠান। ভূমি দস্যু অবসরপ্রাপ্ত সেনাসদস্য বাবুল ও তার সহোদর তোফায়েল এর বিরুদ্ধে একাধিক অভিযোগ করেছেন ভুক্তভোগী ও এলাকাবাসী। বাবুল ও তোফায়েল জয়শ্রী ইউনিয়নের বাঘাউচা গ্রামের আফরোজ আলীর ছেলে।
অভিযোগে জানা যায়, ধর্মপাশা উপজেলার জয়শ্রী ইউনিয়নের জয়শ্রী খাদ্যগুদামের পাশে মাছ বাজার সংলগ্ন সরকারি খাস গর্ত জায়গায় মাটি ভরাট করে ভিটি তৈরি করে অস্থায়ী ঘর নির্মাণ করে অনুমান ৩০ বছর ধরে ব্যবসা করে আসছেন বাঘাউচা গ্রামের আব্দুস সাত্তার, বাদেহরিপুর গ্রামের কাউছার ও রফিকুল ইসলাম। এ তিনজন অনুমান ৬ শতক ভূমিতে দীর্ঘদিন ধরে ভোগদখলে থেকে পাশাপাশি ব্যবসা করে আসছেন।গত বছরের বর্ষাকালে বন্যায় আব্দুস সাত্তারের ঘরটি ভেঙ্গে যায় এবং জয়শ্রী বাজারের পাকা ঘাট নির্মাণ করার সময় অন্য দুই অভিযোগকারীর ঘর দুটো ভাঙ্গা হয়। এ সুযোগে জায়গা খালি পেয়ে স্থানীয় প্রভাবশালী অবসরপ্রাপ্ত সেনাসদস্য বাবুল ও সরকার দলের সমর্থক তোফায়েল উক্ত ৬ শতক খাস জায়গায় জোরপূর্বক স্থায়ীভাবে পাকাঘর নির্মানের কাজ শুরু করে দেয়। বাধা দিলে ওই জায়গা ক্রয় করা হয়েছে বলে জানায়।
পরে এবিষয়ে আব্দুস সাত্তারের ছেলে সহ তিন ভোগদখলকারী পৃথকভাবে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার বরাবর লিখিত অভিযোগ করেন। অভিযোগ পেয়ে উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি)কে ব্যবস্থা নেয়ার জন্য দায়িত্ব দেয়া হয়।
সাথে সাথে জয়শ্রী ইউনিয়ন (ভারপ্রাপ্ত) সহকারী ভূমি কর্মকর্তার মাধ্যমে ঘরের কাজ বন্ধ রাখার নির্দেশ দেন সহকারী কমিশনার (ভূমি)। কিন্তু নির্দেশ অমান্য করে তাদের ইচ্ছেমত কাজ চালিয়ে যায় প্রভাবশালী ভূমি দস্যুরা। বিষয়টি সহকারী কমিশনার (ভূমি)কে পূণরায় অবগত করার পর কাজ বন্ধ হয়।
৫ এপ্রিল বুধবার দুপুরে অভিযোগের প্রেক্ষিতে পরিমাপ করে সরকারি জায়গা নির্ণয় করতে সরেজমিনে যান সার্ভেয়ার। জায়গা পরিমাপের কার্যক্রম সঠিক ভাবে চলছিল। এতে অভিযোগ কারীদের মধ্যে কোন আপত্তি ছিলনা। সার্ভেয়ারের উপস্থিতিতে সরকারী কাজে বিঘ্ন ঘটানোর উদ্দেশ্যে হঠাৎ করে অভিযোগকারীদের উপর চড়াও হয় তোফায়েল, বাবুল, বাশার সহ তাদের স্বজনরা।
তখন উত্তপ্ত পরিবেশের সৃষ্টি হয়।
এর মধ্যে সঠিক পরিমাপ করে সরকারি জায়গা নির্ণয় করে দ্রুত স্থান ত্যাগ করেন সার্ভেয়ার।
অভিযুক্ত বাবুল মিয়ার সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি ফোন রিসিভ করে কেটে দেন।
এ বিষয়ে উপজেলা ভূমি অফিসের সার্ভেয়ার আব্দুল মোনায়েম খান বলেন, অভিযুক্ত বাবুল ও তার সাথে থাকা লোকজন অভিযোগকারীদের উপর চড়াও হলে উত্তপ্ত পরিবেশের সৃষ্টি হয়। যে জায়গা নিয়ে অভিযোগ হয়েছে এবং বাবুল যেখানে পাকা ঘর নির্মাণের চেষ্টা করছেন সে জায়গাটি খাস জায়গা তাতে কোন সন্দেহ নাই।
উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) মো.অলিদুজ্জামান বলেন, সরকারি জায়গা পরিমাপ করার সময় অভিযুক্ত বাবুল ঝগড়ার সৃষ্টি করেছিলেন শুনেছি। তবে অভিযোগের সত্যতা মিলেছে। বাবুল সরকারি খাস জায়গা দখল করে পাকা ঘর নির্মাণের কাজ শুরু করেছিলেন তা সার্ভেয়ার জয়শ্রী থেকে ফিরে এসে বলেছেন।