গোলাম সারোয়ার, ব্রাহ্মণবাড়িয়া ব্যুরো প্রধান ষাঁড়টির শরীর কালো আর সাদা রঙের। প্রায় ৮ ফুট দৈর্ঘ্য, উচ্চতা ৫ ফুট। ওজন রয়েছে ১৯ মণ। আদর করে ষাঁড়টির নাম রাখা হয়েছে রাজাবাবু। বিশালাকৃতির উন্নত জাতের এই ষাঁড়টি দাম হাঁকাচ্ছেন ৭ লাখ টাকা। ষাঁড়টির মালিক হলেন ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আখাউড়া উপজেলার উত্তর ইউপির চানপুর গ্রামের মৃত কলিমউদ্দিনের ছেলে প্রবাস ফেরত মো.মোশারফ মিয়া।
তিনি গত ২৭ মাস ধরে এটিকে লালন পালন করছেন। ষাঁড়টি হাঁটা চলার সময় গম্ভীর ভাব নিয়ে পা ফেলে ধীরে ধীরে। খুবই শান্ত স্বভাবের। তাই তিনি শখ করে নাম দিয়েছেন রাজাবাবু। নামের সঙ্গে তার আদর যত্নের যেন কমতি নেই।
গরুর মালিক মো. মোশারফ মিয়া বলেন, গত ৫ বছর ধরে নিজ বাড়িতে খামার দিয়ে উন্নত জাতের গরু লালন পালন করছেন। নিজ খামারে জন্ম নেয়া এই গরুটিকে অতি যত্ন সহকারে লালন পালন করছেন। কোরবানির ঈদ উপলক্ষে বিশাল আকারের গরুটি তিনি বিক্রি করবেন। এখনো কোরবানির পশুর হাট গরুটিকে তোলা হয়নি বলে জানান। আগামি সপ্তাহে বাজারে নিয়ে যাবেন।
এরইমধ্যে এই বিশাল ষাঁড়টি এলাকাজুড়ে বেশ সাড়া ফেলেছে। গরুটি দেখতে বিভিন্ন স্থান থেকে লোকজন ও ক্রেতা ভিড় করছেন তার বাড়িতে। কাঙ্খিত দাম পেলে গরুটি বিক্রি করবেন।
মালিক মোশারফ মিয়া বলেন, প্রতিদিন তার খাদ্য তালিকায় রয়েছে ভুসি, চিটা গুড়, খৈল, ছোলা, খুদ ভাত, ঘাস ইত্যাদি খাবার। তবে মোটাতাজাকরণের জন্য কোনো ওষুধ খাওয়ানো হয়নি। পাশপাশি নিয়মিত গোসল করানো, পরিষ্কার ঘরে রাখা, তাপমাত্রা পরিমাপ রাখাসহ প্রতিনিয়ত চিকিৎসকের পরামর্শ নিচ্ছেন। প্রয়োজনমতো খাবার ও পরিচর্যায় এর আকৃতি বৃদ্ধি পেতে থাকে।
আদর করে এটির নাম রাখা হয় রাজাবাবু। তবে পরিবারের সবার খুবই আদরের গরু এটি। যখন তাকে রাজাবাবু বলে ডাক দেওয়া হয় তখন সে তাকিয়ে থাকে। কান নাড়া দেয়। তবে এই ষাঁড়টি খুবই শান্ত প্রকৃতির। প্রতিদিন খাবারের পেছনে ৬০০ থেকে ৭০০ টাকা খরচ হয়। বাড়িতে রেখেই তাকে কোরবানির ঈদে বিক্রির জন্য প্রস্তুত করা হয়েছে। পৌর শহরের দেবগ্রাম এলাকা থেকে দেখতে আসা মো. বিল্লাল হোসেন বলেন গত বছর স্থানীয় বাজারে সাড়ে ৫ লাখ টাকার গরু দেখেছেন। লোকমুখে বিশাল আকারের গরুর কথা শুনে এখানে দেখতে আসেন। দেখে তার খুবই ভালো লেগেছে।
দর্শনার্থী কলেজ শিক্ষার্থী আহমেদ বলেন আখাউড়ার রাজাবাবু দেখতে এখানে আসা। আসলে রাজাবাবু রাজাবাবুর মতই। দেখে তার খুব ভালো লেগেছে বলে জানান।
জানা যায়, পৌর শহরসহ উপজেলার ৫টি ইউনিয়নে ৬৭৪ টি খামার রয়েছে। ওইসব খামারসহ পারিবারিকভাবে কৃষক তাদের বাড়িতে মোটাতাজা করণসহ ৪ হাজার ৬শ ৬০টি পশু কোরবানির জন্য প্রস্তুত করা হয়েছে। এরমধ্যে গরু ৩৫৩৮ মহিষ ১১৪ ও ছাগল ৪৫৩ ভেড়া ৪৫৫ টি রয়েছে।
উপজেলা প্রাণি সম্পদ কর্মকর্তা ডা. জুয়েল মজুমদার বলেন, এ উপজেলার কৃষক ও খামারিরা দেশীয় পদ্ধতিতে যত্ন নিয়ে গরু লালন পালন করছেন। পৌরশহরসহ উপজেলার বিভিন্ন স্থানে গড়ে উঠা খামারগুলোতে পর্যবেক্ষক করা হচ্ছে। খামারিদেরকে ক্ষতিকারক ওষুধ না খাওয়ার পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে। তবে কেউ যদি গোপনে এই অসাধু প্রক্রিয়া করে থাকে তাহলে অবশ্যই পশুখাদ্য আইনে তাদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেয়া হবে।
তিনি আরো বলেন, আসলে মোশারফ মিয়া একজন আদর্শ খামারি। তিনি দীর্ঘ দিন ধরে উন্নত জাতের গরু প্রাকৃতিক উপায়ে লালন পালন করছেন। তার খামারে একটি বড় আকারের ষাঁড় রয়েছে। যা সবার নজর কাড়ছে।। যখনই কোনো সমস্যায় পড়ছেন সার্বিকভাবে পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে।