আব্দুর রউফ ভূঁইয়া:ব্যুরো প্রধান কিশোরগঞ্জ।
কিশোরগঞ্জের ভৈরবে পৌর মহিলা আওয়ামী লীগের যুগ্ন সম্পাদক পারভীন বেগম ও ব্যবসায়ী সেলিম মিয়া একে অপরের বিরুদ্ধে দলবল নিয়ে হামলা, মারধোর, স্বর্ণলঙ্কার ও টাকা-পয়সা ছিনতাইয়ের পাল্টাপাল্টি অভিযোগ এনে পৃথক পৃথক সংবাদ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়েছে। সংবাদ সম্মেলনে বক্তারা অভিযোগের বিষয়গুলো সুষ্ঠ তদন্তের মাধ্যমে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়ার জন্য স্থানীয় সংসদ সদস্য ও বিসিবি সভাপতি নাজমুল হাসান পাপনসহ স্থানীয় রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দ এবং প্রশাসনের হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন ।
শুক্রবার বিকালে শিবপুর ইউনিয়নের জামালপুর মাইজহাটি গ্রামের মোঃ আঙ্গুর মিয়ার পুত্র কাপড় ব্যবসায়ী সেলিম মিয়া ভৈরব বাজার ছবিঘর শপিং কমপ্লেক্সের আন্ডার গ্রাউন্ডে তার ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে সংবাদ সম্মেলনে লিখিত অভিযোগে জানান, জমি সংক্রান্ত বিরোধের জের ধরে গত ২৫ এপ্রিল সন্ধ্যায় পৌর মহিলা আওয়ামী লীগের যুগ্ন সম্পাদিকা পারভীন বেগম পূর্ব অক্রোশের জেরে দলবল নিয়ে তার দোকানে এসে তাকে মারধোর করে ক্যাশ বাক্স ভাংচুর করে থেকে নগদ ২ লাখ ৪৫ হাজার টাকা এবং তার গলা থাকা একটি স্বর্ণের চেইন ও দোকান থেকে ১ লাখ ২০ হাজার টাকার দামি কাপড়-চোপড় ছিনিয়ে নেয় । এ ঘটনায় আন্ডার গ্রাউন্ডের ব্যবসায়ীরা আতঙ্কে আছে । পরে এ ঘটনায় ভৈরব থানায় একটি লিখিত অভিযোগ দায়ের করা হলেও এখনো পর্যন্ত মামলা নথিভুক্ত করা হয়নি । এ সময় সংবাদ সম্মেলনে মার্কেটের অন্যান্য ব্যবসায়ীরা এ ঘটনার তীব্র নিন্দা জানিয়ে সুষ্ঠ বিচারের দাবী জানান । একই দিন সন্ধ্যায় এ ঘটনার তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়ে মুক্তিযোদ্ধা যুব কমান্ড কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলন করেন অভিযুক্ত পৌর মহিলা আওয়ামী লীগের যুগ্ন সম্পাদক পারভীন বেগম ও তার পরিবার । সংবাদ সম্মেলনে পারভীন বেগম তার বিরুদ্ধে আনীত অভিযোগ মিথ্যা ও বানোয়াট এবং রাজনীতিতে তার সুনাম ক্ষুন্ন করার জন্য একটি কু-চক্রী মহল মিথ্যা অপপ্রচার চালাচ্ছে বলে তিনি অভিযোগ করেন । সংবাদ সম্মেলনে তিনি বলেন, তার গ্রামের দরিদ্র রিক্সা চালক মিলন মিয়া ৫০ হাজার টাকা দিয়ে জমি বর্গা নিয়েছে সেলিমের কাছ থেকে । কিন্তূ সেলিম টাকা নেয়ার পর দীর্ঘদিন ধরে বর্গা জমি মিলন কে বুঝিয়ে না দেওয়ায় গত ২৩ এপ্রিল রোববার বিকালে স্থানীয় জনপ্রতিনিধি ও গন্যমাণ্য ব্যক্তিবর্গের উপস্থিতিতে সালিশ বৈঠক হয় । সালিশ বৈঠকে পারভীন বেগমের স্বামী হারুন সরকার মিলন মিয়ার টাকা ফেরত দেয়ার জন্য সেলিম মিয়াকে বললে দুই জনের মধ্যে বাকবিতন্ডা হয় । পরে এ ঘটনায় রাতে মিনারা বেগমের পরিবারের সাথে সেলিম মিয়াদের সংঘর্ষ হয় । সংঘর্ষে মিনারা বেগমের পক্ষের ২ জনকে মারধোর করে আহত করে। বর্তমানে তারা ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে মূমূর্ষ অবস্থায় চিকিৎসাধীন রয়েছে ।
এ ঘটনার পর ২৫ এপিল মঙ্গলবার সন্ধ্যায় আমি বাচ্চার কাপড় কিনার জন্য মার্কেটে গেলে আমাকে দেখে সেলিম ও তার লোকজন অকথ্য ভাষায় গালাগালি করে । আমি এর প্রতিবাদ করায় তারা আমার উপড় হামলা করে আমার ব্যাগে থাকা ৩০ হাজার টাকা ও স্বর্ণের চেইন,ব্যাচলাইট ও ২ টি আংটি ছিনিয়ে নেয় । এ সময় সংবাদ সম্মেলনে ইউপি সদস্য হারুন মিয়া,ইউপি সদস্য সালাম মিয়া ও জামাল মিয়া জানান,জমি সংক্রান্ত বিষয়ের জের ধরে সালিশ বৈঠকের রায় সেলিম মিয়া অমান্য করায় আমরা পরবর্তীতে সিদ্ধান্ত নিবো বলে সবাই বৈঠক শেষ করে চলে যায় ।পরে সেলিম মিয়া ও তার সমর্থকরা মিনারার বাড়িতে হামলা চালায় ও মারধোর করে ২ জনকে আহত করেছে বলে জানতে পারি । সংবাদ সম্মেলনে পারভীন বেগমের স্বামী হারুন সরকার, মিলন মিয়া ও তার স্ত্রী হামিদা বেগম উপস্থিত ছিলেন ।
এ ঘটনায় থানায় একটি লিখিত অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে । তাই ঘটনার সুষ্ঠ তদন্ত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়ার জন্য তিনি স্থানীয় সাংসদ ও বিসিবি সভাপতি নাজমুল হাসান পাপনসহ স্থানীয় রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দ এবং প্রশাসনের হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন ।