দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে অংশগ্রহণ করতে উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান পদ থেকে অব্যহতি দিয়ে সংসদ নির্বাচনে নেত্রকোনা-১ (দুর্গাপুর-কলমাকান্দা) আসনের স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে নির্বাচনে অংশ নিয়ে জান্নাতুল ফেরদৌস আরা ঝুমা তালুকদার এ কূল ও কূল দুই কূলই হারিয়েছেন। জেলা রিটার্নিং কর্মকর্তা ঘোষিত ফলাফল অনুযায়ী, ঝুমা তালুকদার (ট্রাক) প্রতীক নিয়ে ভোট পেয়েছেন মাত্র ২৫,২১৯ (২৫ হাজার ২১৯) ভোট। ওই আসন থেকে আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী (নৌকা) প্রতীক নিয়ে মোশতাক আহমেদ রুহী পেয়েছেন ১,৫৯,০১৯ (১ লক্ষ ৫৯ হাজার ১৯) ভোট। যা নৌকার প্রাথীর চেয়ে ১,৩৩,৮০০ (১ লক্ষ ৩৩ হাজার ৮ শত ভোট) কম পেয়েছেন তিনি। যার ফলে নির্বাচনে ভোটের মাঠে কোনো প্রতিদ্বন্দ্বিতাই করতে পারেননি তিনি। তবে (৭ জানুয়ারি) রবিবার বিকাল সাড়ে ৩টায় ভোট কারচুপির অভিযোগ এনে নির্বাচন বর্জনের ঘোষণা দেন ঝুমা তালুকদার। স্বতন্ত্র প্রার্থী ঝুমা তালুকদারের দাবি, তার আসনে অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচন হয়নি। নৌকার সমর্থকরা তার এজেন্টদের কেন্দ্র থেকে বের করে দিয়েছেন, ভোটারদের হুমকি দিয়েছেন। কারচুপি করে নির্বাচনে তারা জিতেছেন।
জেলা আওয়ামী লীগ সূত্রে জানা যায়, ২০১৯ সালের মার্চ মাসে অনুষ্ঠিত দুর্গাপুর উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে ঝুমা তালুকদার আওয়ামী লীগের মনোনয়ন চেয়েও পাননি। পরে ‘বিদ্রোহী প্রার্থী’ হিসেবে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করে নৌকার প্রার্থীকে পরাজিত করে উপজেলার প্রথম নারী চেয়ারম্যান নির্বাচিত হন। কিন্তু এবার দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনে দলীয় মনোনয়নের আশায় গত ৬ নভেম্বর দুর্গাপুর উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান পদ থেকে স্বেচ্ছায় অব্যাহতি নেন ঝুমা তালুকদার। কিন্তু এবারও দলীয় মনোনয়ন না পেয়ে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসাবে তিনি (ট্রাক) প্রতীক নিয়ে নির্বাচনে অংশ নিলেও নৌকার প্রার্থীর কাছে শোচনীয়ভাবে পরাজিত হয়েছেন তিনি।
স্থানীয় উপজেলাবাসীরা জানান, দুর্গাপুর উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে ঝুমা তালুকদার যতটা প্রভাব বিস্তার করতে পেরেছিলেন, কিন্তু জাতীয় সংসদ নির্বাচনে তিনি তার কিছুই দেখাতে পারেননি। অবশেষ উপজেলা চেয়ারম্যানের পদটিও হারাতে হয়েছে তাকে উল্লেখ্য যে, ঝুমা তালুকদারের বাবা প্রয়াত জালাল উদ্দিন তালুকদার নেত্রকোনা জেলার একজন বলিষ্ঠ রাজনীতিবিদ ও ৩ বারের সংসদ সদস্য ছিলেন। তিনি (১৯৭৯ সালে) তৎকালীন ময়মনসিংহ-১২ আসন থেকে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন। (১৯৮৬ সালে) আওয়ামী লীগের প্রার্থী হিসেবে নেত্রকোনা-২ আসন থেকে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন। (১৯৯৬ সালে) সপ্তম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগের প্রার্থী হিসেবে নেত্রকোনা-১ আসন থেকে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন। অবশেষ ২০১২ সালের ২৬ সেপ্টেম্বর নিজ বাড়িতে গুলিবিদ্ধ হয়ে মারা যান তিনি।