মনোয়ার বাবু,ঘোড়াঘাট (দিনাজপুর) প্রতিনিধি /
দিনাজপুরের ঘোড়াঘাটে আমন রোপন নিয়ে বিপাকে পড়েছেন কৃষকরা। কাঙ্খিত বৃষ্টি না হওয়ায় সেচ দিয়ে আমন রোপন শুরু করেছেন অনেক কৃষক। বৃষ্টির অপেক্ষা না করে স্যালোমেশিন অথবা মটর দিয়ে পানি নিয়ে এরি মধ্যে অনেকে জমি কাঁদা করছেন, কেউ কেউ ধান রোপন করে ফেলেছেন চারা নষ্ট হয়ে যাবার ভয়ে আবার অধিকাংশ কৃষক বৃষ্টির অপেক্ষায় আছেন।
সোমবার উপজেলা ঘুড়ে এমনি দৃশ্য চোখে পড়েছে। আষাঢ় শেষ শ্রাবণ মাসেরও অর্ধেক চলে যাচ্ছে, তবুও দেখা নেই বৃষ্টির। ধানের চারারও বয়স হয়ে যাচ্ছে। বাধ্য হয়েই নির্ভর করতে হচ্ছে ডিজেল চালিত স্যালোমেশিন অথবা বিদ্যুৎ চালিত মটরের উপর। এতে খরচ বেড়ে গেলেও কিছুই করার নেই কৃষকের।
উপজেলার নূরজাহানপুরের শুক্রা মিন্জির মতো অনেক কৃষক বলেন, আমন চাষ সম্পূর্ণ বৃষ্টির ওপর নির্ভরশীল। কিন্তু এখন পর্যন্ত তেমন বৃষ্টির দেখা নেই। বৃষ্টি না হলে বোরো ধানের মতো আমনে সেচ দিয়ে যেতে হবে। এতে আমনের খরচ বেড়ে যাবে।
আশিশ নামের আরও একজন কৃষক জানান, জমি কাঁদা করার মতোও বৃষ্টি হচ্ছে না। দীর্ঘদিন অপেক্ষায় ছিলাম। কিন্তু এখনো বৃষ্টি হয়নি। ধান চাষ দেরি হয়ে যাচ্ছে, ধানের চারারও বয়স বেড়ে যাচ্ছে। বাধ্য হয়ে শ্যালোমেশিন লাগিয়ে জমিতে পানি তুলে ধান চাষ করছি। এতে খরচ বেড়ে যাচ্ছে। তবুও করার কিছু নেই।
পৌরএলাকার কাদিমনগরের কৃষক সাব্বির হোসেন বলেন,উপজেলার কৃষকেরা আষাঢ়ের ১৫ তারিখের পর ও শ্রাবণের ১৫ তারিখের মধ্যে সাধারণত আমন ধান রোপণ করেন। এবার শ্রাবণ মাসের প্রথম সপ্তাহ পার হয়ে গেলেও পানির অভাবে জমি লাগাতে পারছেন না।
তিনি আরও বলেন, জমিতে পানি দেওয়ার জন্য বিঘা প্রতি গভীর নলকূপ মালিককে দিতে হবে ২২শ থেকে ২৩শ টাকা ও শ্যালো মেশিন মালিককে দিতে হবে ১০০০ টাকা। এটি কৃষকের বাড়তি খরচ।
উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা রফিকুজ্জামান জানান, এবার উপজেলাতে সাড়ে ১১ হাজার হেক্টর জমিতে আমন ধান চাষাবাদের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে। রবিবার পর্যন্ত ২ হাজার ৪শ হেক্টর জমি চাষাবাদ করেছেন উপজেলার আমন চাষিরা। চলতি আমন মৌসুমে খরার প্রকোপ চলছে। আমন চাষের এখনও সময় আছে। তবে প্রচণ্ড রোদ অব্যাহত থাকলে কৃষকদের সেচ যন্ত্রের মাধ্যমে জমিতে পানি দিয়ে চাষ করার পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে।
উপজেলার বিভিন্ন এলাকা ঘুরে দেখা যায়, পানি না থাকায় বেশির ভাগ জমিই অনাবাদি হিসেবে পড়ে আছে। বৃষ্টি না হওয়ায় কৃষকদের আমন বীজতলাগুলো প্রখর রোদে হলুদ বর্ণ ধারণ করতে শুরু করেছে। এসব বীজতলার চারা রোপণ করলে পর্যাপ্ত ফল নাও হতে পারে বলে আশঙ্কা করছেন কৃষকেরা।এই অবস্থা চলতে থাকলে চাল উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা ব্যাহত হতে পারে। গত বছরও একই অবস্থা তৈরি হয়েছিল, যেখানে উপজেলার বেশিরভাগ কৃষকই সেচ পাম্পের মাধ্যমে ধান রোপণ করে।