• ঢাকা, বাংলাদেশ বৃহস্পতিবার, ০৯ মে ২০২৪, ০৭:৪৯ অপরাহ্ন
  • [কনভাটার]
সর্বশেষ খবর
সংঘাত সংঘর্ষের মধ্য দিয়ে শেষ হলো প্রথম ধাপের উপজেলা নির্বাচন মাগুরায় দু’টি উপজেলায় বেসরকারী ফলাফলে রানাও রাজন বিজয়ী ফুলছড়িতে চেয়ারম্যান নির্বাচিত আবু সাঈদ উপজেলা পরিষদ নির্বাচন পরিদর্শনে জেলা প্রশাসক ওপুলিশ সুপার ফুলছড়িতে চেয়ারম্যান প্রার্থী জি এম সেলিম পারভেজের ভোট বর্জন।  সাদুল্লাপুরে বিধি লঙ্ঘন করে জুনিয়র শিক্ষককে দায়িত্ব দেওয়ার অভিযোগ মাগুরায় দু’টি উপজেলায় শান্তিপূর্ণ ভাবে ভোট গ্রহন সড়ক দুর্ঘটনা কমিয়ে আনতে সড়ক পরিবহন কর্তৃপক্ষের নতুন নির্দেশনা রাণীনগরেপুলিশের অভিযানে সাত মামলার আসামী আটক আগামীকাল মাগুরা উপজেলা পরিষদের প্রথম ধাপের নির্বাচন অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে

শহরের ব্যস্ততা ফেলে খারুভাজ ইকোপার্কে মন জুড়াচ্ছেন রংপুরের বিনোদন প্রেমিরা

নভেল চৌধুরী, রংপুর প্রতিনিধি / ৮৯ জন দেখেছেন
আপডেটঃ শনিবার, ৪ নভেম্বর, ২০২৩

নভেল চৌধুরী, রংপুর প্রতিনিধি: ইট পাথরের দূষিত নগর আর কর্মব্যস্ততায় মানুষ যখন ভুলতে বসেছে প্রকৃতির সৌন্দর্যতা, তখনই রংপুরের গঙ্গাচড়া উপজেলার গজঘণ্টা ইউনিয়নের ঐতিহ্যবাহী খারুভাজ বিলে গড়ে উঠেছে ইকোপার্ক। বিলের পানিতে আপন মনে সাঁতার কাটছে হাঁসের দল, বাগানের ফুলে ফুলে বসেছে প্রজাপতি।

খড়ের ছাউনীর ছায়ায় জিরিয়ে নিতে গেলে ফুলের মিষ্টি সুঘ্রাণ এক অন্যরকম রোমাঞ্চের অভিজ্ঞতা দেয় বিনোদন প্রেমিদের। এছাড়াও সকালের দিকে এ বিলে দেখা মিলে পাতি সরালী, সাদা বকের মত পাখি। বিলের পাড়ের থাকা গাছগুলোতে চড়ুই, শালিক, ঘুঘুসহ বিভিন্ন প্রজাতির পাখিও দেখা যায়। তাই শহরের ব্যস্ততাকে সরিয়ে, স্বস্তির নিঃশ্বাস ফেলতে অনেকেই ছুটছেন এ খারুভাজ বিলে। কেউ কেউ ঢালাই নৌকা, কেউ বা প্লাস্টিকের নৌকা আবার কেউ বা শ্যালোর নৌকায় চেপে ছোয়া নিচ্ছেন বিলের ঠান্ডা-কোমল বাতাসের। উপজেলা প্রশাসন এ পার্ক তৈরী করায় প্রাণ-প্রকৃতির নতুন জীবনধারা গড়ে উঠেছে এখানে।

গঙ্গাচড়া উপজেলা প্রশাসন সূত্রে জানা যায়, উপজেলার বড় বিলের মধ্যে খারুভাজ বিল একটি। এর আয়তন ১৮ দশমিক ৯৮ একর। বিগত সময়ে এখানে শুধু মৎস চাষই করতো স্থানীয় মৎসজীবিরা। তদারকি না থাকায় বিলের কিছু জায়গা স্থানীয়দের দখলে চলে যায়। বিলের জমি দখলমুক্ত করে স্থানীয় জনপ্রতিনিধি ও গণ্যমান্য ব্যক্তিদের সহযোগিতা নিয়ে বিলটির সংস্কার, পাড় মেরামত, বসার বেঞ্চ নির্মাণ, গোলঘর, বিশ্রামের জন্য খড়ের ছাউনী তৈরী করা হয়। খারুভাজ পার্ককে পুরো দেশে পরিচিত করতে ঢালাই করা ‘আই লাভ গঙ্গাচড়া’ নামে একটি বাক্য নির্মাণ করা হয়। সেই সাথে রাতের সৌন্দর্য উপভোগের জন্য বিলের চারপাশে লাইট পোস্ট স্থাপন করা হয়েছে। চলতি বছর ১৫ জুলাই এ পার্কের ভিত্তিপ্রস্তুর স্থাপন করেন রংপুরের সাবেক জেলা প্রশাসক ড. চিত্রলেখা নাজনীন।

সরেজমিনে দেখা যায়, খারুভাজ উপজেলা প্রশাসন পার্কের সম্মুখে খড়-বাঁশ দিয়ে তৈরী করা হয়েছে একটি দৃষ্টিনন্দন ফটক। পার্কে প্রবেশ করতে চোখে পড়বে নানা রং ও শোভাবর্ধনকারী গাছে সজ্জিত করা একটি দৃষ্টিনন্দন ফোয়ারা। ফোয়ারার নিচে থাকা একুরিয়ামে রঙ্গীন মাছ ছোটাছুটি করছে। খারুভাজ বিলে রাখা শ্যালোর নৌকায় করে নৌ ভ্রমন উপভোগ করছেন শিশু-বৃদ্ধসহ বিভিন্ন বয়সী মানুষ। বিলের পাড়ে লাগানো হয়েছে কৃষ্ণচূড়া, জারুল, শিউলি, বকুল, আম, জাম কাঁঠাল, লিচু, পেয়ারাসহ বিভিন্ন প্রজাতির ফুল ও ঔষধি বৃক্ষ।পাশাপাশি বিভিন্ন দুর্লভ প্রজাতির গাছ গোল্ডেন সাওয়ার, ফরচুন, লিন্টেলা, নাইট কুইন, ইফোরবিয়া, কাঁটামুকুটের গাছ লাগানো হয়েছে। ফুলের সামনে অনেকে সেলফি তুলতে ব্যস্ত সময় পাড় করেছেন। পরিবারের সদস্যদের নিয়ে ছাউনীগুলোতে খোশগল্প করতে দেখা গেছে।

বাবা-মা’র সাথে ঘুরতে আসা চতুর্থ শ্রেনির শিক্ষার্থী মিতু মনি বলে, এর আগে পার্কে কখনো আসিনি। অনেকগুলো প্রজাপতি, পাখি দেখেছি। অনেক ভাল লাগছে

মিতুর বাবা মিজানুর রহমান বলেন, এরকম পার্ক রংপুরে কোথাও আমি দেখিনি। এখানে সবকিছুই প্রাকৃতিক। এখানে কোনধরনের রাইড না থাকলেও প্রাকৃতিক সৌন্দর্যতা আমাদের মুগ্ধ করেছে।

পার্কে ঘুরতে আসা আব্দুল কাফী-রিক্তা দম্পতি জানিয়েছেন, পার্কের পরিবেশ অনেক সুন্দর তবে পার্কে কোন ডাস্টবিন না থাকায় ঘুরতে আসা লোকজন বোতল বা খাবারের প্যাকেট পানিতে ফেলছে। আবার টয়লেট না থাকায় বিব্রতকর অবস্থায় পড়তে হচ্ছে অনেককেই।

স্থানীয় অধিবাসী আব্দুল কুদ্দুস বলেন, পার্কের বিলে সকাল বেলা করে পানকৌড়ি, পাতি সরালী, মাছরাঙ্গা, বক দেখা যাচ্ছে। এছাড়া দিনের বেলা ঘুঘু, শালিক, চড়ুই, দোয়েলসহ বিভিন্ন প্রজাতির পাখি দেখা যায়।

খারুভাজ বিল মৎসজীবি সমিতির সভাপতি বকুল মেম্বার বলেন, আগে বিলে দিনের বেলাতেও কোন মানুষকে দেখা যেত না। পার্ক তৈরী হওয়ার পর থেকে সারাদিন এবং সন্ধ্যার পরও মানুষের আনাগোনা থাকে।

গঙ্গাচড়া সহকারী কমিশনার (ভূমি) নয়ন কুমার সাহা বলেন, খারুভাজ গঙ্গাচড়া উপজেলার বড় জলমহাল। এর প্রাকৃতিক সৌন্দর্য দেখে এখানে পর্যটন কেন্দ্র বানানো পরিকল্পনা করা হয়। যেন মানুষ নগরজীবনের কান্তি অবসাদ দূর করতে পারে এবং কাছের বন্ধুদের নিয়ে ভাল সময় কাটাতে পারে। আমরা এখানে জীববৈচিত্র রক্ষা করে পার্ক তৈরী করেছি। ইতোমধ্যে শীতের অতিথি পাখি এখানে আসতে শুরু করেছে। এছাড়া পার্কে লাগানো বিভিন্ন গাছের উপকারীতা নিয়ে ব্যানার ফেস্টুন লাগানো হয়েছে।

গঙ্গাচড়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা নাহিদ তামান্না জানান, জেলা প্রশাসক স্যার প্রতিটি উপজেলা একটি করে পার্ক নির্মাণের নির্দেশ দিয়েছেন। আমরা খারুভাজে একটি ইকোপার্ক গড়ে তোলার উদ্যোগ নেই। কারণ ইকো পার্ক আমাদের এসডিজি’র সাথে সরাসরি সম্পৃক্ত। সবাই মিলে সহযোগিতার কারণে এ পার্ক তৈরীতে তেমন বেগ পেতে হয়নি। ট্যুরিজম বোর্ড আমাদের অর্থ বরাদ্দ দিলে এটিকে আরও সৌন্দর্য মন্ডিত করা সম্ভব হবে। আমরা জীব-বৈচিত্র, প্রকৃতিকে ঠিক রেখে এ পার্ক তৈরী করেছি।


আপনার মতামত লিখুন :

মতামত লিখুন

এই বিষয়ের আরও খবর

এইমাত্র পাওয়া

No video found!

May 2024
S S M T W T F
 1234
567891011
12131415161718
19202122232425
2627282930  

No video found!